অভিবাসন সঙ্কট মোকাবিলায় বিশ্বের সব দেশকে ঐক‌্যমত‌্যে পৌঁছাতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

497

বাংলাপ্রেস,নিউইয়র্কঃ অভিবাসন সঙ্কট মোকাবিলায় বিশ্বের সব দেশকেই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ঐক‌্যমত‌্যে পৌঁছাতে হবে। অভিবাসী ও শরণার্থীদের অধিকার রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার জাতিসংঘের সদরদপ্তরে উদ্বাস্তু ও অভিবাসনের ওপর সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের প্ল্যানারি বৈঠকে এ কথা বলেন।

বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে অভিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, তাদের মর্যাদা যাই হোক না কেন। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি রক্ষার জন‌্য অভিবাসী ও শরণার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করা সমান গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘে উপস্থিত বিশ্ব নেতাদের এই বৈঠকে এদিন অভিবাসী ও শরণার্থীদের বিষয়ে নিউ ইয়র্ক ঘোষণা গৃহিত হয়। অভিবাসী ও শরণার্থীদের মানবাধিকার রক্ষা, তাদের আবাসন ও শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা, শরণার্থীরা যেসব দেশে জড়ো হচ্ছেন, সেসব দেশকে সহযোগিতা করা এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্খার মাধ‌্যমে বিশ্বজুড়ে অভিবাসন ব‌্যবস্থাপনার সমন্বয় করার কথা বলা হয়েছে এই ঘোষণায়। শরণার্থী ও অভিবাসীদের বিষয়ে প্রথমবারের মত এই সম্মেলনের আয়োজন করায় জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামগ্রিকভাবে অভিবাসন সঙ্কট মোকাবিলা করতে হলে দেশগুলোর মধ‌্যে পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ, যৌথ দায়িত্বশীলতা এবং সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি জরুরি। “এই বৈশ্বিক নীতিগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের অবশ‌্যই একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে,”  বলেন শেখ হাসিনা।

commonwealth-hasina

তিনি বলেন, মানুষের দেশান্তরি হওয়ার বিষয়টিকে সামাল দিতে একটি বাস্তবসম্মত, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং শক্তিশালী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের এই ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’ বিশ্বকে অবশ‌্য‌ই কাজে লাগাতে হবে। আর তা হতে হবে বৃহত্তর উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে।
অভিবাসন সমস‌্যা মোকাবিলায় পাঁচটি বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের মঙ্গলের জন‌্য অভিবাসনকে একটি বাস্তবতা হিসেবে মেনে নিতে হবে এবং তা যেন মানুষকে মুক্তির পথ দেখাতে পারে, সে ব‌্যবস্থা করে দিতে হবে।
অভিবাসন ব‌্যবস্থাপনার দীর্ঘদিনের ফাঁকগুলো পূরণ করতে এ বিষয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে একটি বৈশ্বিক চুক্তির প্রস্তাব করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই চুক্তি হতে হবে টেকসই উন্নয়নের ২০৩০ সালের লক্ষ‌্যমাত্রার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তা হতে হবে উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং বাস্তবায়নযোগ‌্য, সেই সঙ্গে ভারসাম‌্যপূর্ণ এবং নমনীয়।
শরণার্থীদের আত্তিকরণের ক্ষেত্রে সহনশীলতা ও বোঝাপড়া বাড়াতে সচেতনা তৈরির ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুহারা মানুষের বিষয়টিকেও অভিবাসন বিষয়ক চুক্তিতে আমলে নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, অভিবাসন ও উন্নয়ন বিষয়ক গ্লোবাল ফোরামের বর্তমান সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ আনন্দের সঙ্গে এই চুক্তি প্রণয়নে অবদান রাখতে পারে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্ল্যানারি বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে সোমবার প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়া কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া জ্যানেট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.