আবরার হত্যা: ‘বহিষ্কৃত’ আশিকুল ফেরায় বুয়েট শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম ক্লাসে ফিরে আসার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে বুয়েট শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকেন। বেলা পৌনে ১১টার দিকে তারা বুয়েট উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে বুয়েট থেকে বহিষ্কৃত আশিকুল ইসলাম বিটুর কোর্স রেজিস্ট্রেশন বাতিল এবং বুয়েট থেকে পুনরায় রিটের মাধ্যমে তার ছাত্রত্ব বাতিলের আদেশ পুর্নবহাল করতে হবে। এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা না আসা পর্যন্ত তারা সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করবেন।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বুয়েটের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আশিকুল ইসলাম বিটু আবরার ভাইয়ের খুনের অন্যতম আসামি। তিনি ক্লাসে ফিরে এসেছেন। আমরা কোনো অপরাধীর সঙ্গে ক্লাস করতে চাই না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, কিন্তু সে অনুযায়ী কোনো ফল পাইনি। তাই আমরা সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করছি।’
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় আশিকুলসহ ২৬ জনকে আজীবন বহিষ্কার করে বুয়েট কর্তৃপক্ষ।
তবে আবরার হত্যা মামলায় আশিকুলকে আসামি করেনি পুলিশ। বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে আশিকুলের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত ১০ ফেব্রুয়ারি বুয়েট কর্তৃপক্ষের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করেন। আশিকুল ওই স্থগিতাদেশ নিয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল তাকে ক্লাসে ফেরার অনুমতি দেয়।
কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে এর আগে ২০২১ সালে অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছিলেন আশিকুল। পরে শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিবাদ করায় গত রোববার পর্যন্ত তিনি আর ক্লাসে আসেননি।
গত রোববার তিনি কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের সঙ্গে আরেকটি ক্লাসে যোগ দিলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবারও এর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন।
গত সোমবার বিকেলে আশিকুলের ক্লাসে ফেরার প্রতিবাদে বুয়েট শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ‘নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারকে সমূলে উৎপাটিত’ করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে শপথবাক্য পাঠ করেছেন বুয়েটের কয়েকশ শিক্ষার্থী।