আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা ভেনিজুয়েলার

479

আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে বিরোধী নেতা জুয়ান গুইদোকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরই ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিলো কারাকাস।

venejuela-home

মার্কিন কর্মকর্তাদের ভেনিজুয়েলা ছাড়তে ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন মাদুরো। কিন্তু ওয়াশিংটন বলছে, তার (মাদুরো) এ ধরনের নির্দেশ দেওয়ার অধিকার আর নেই।

মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া মাদুরোবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই বুধবার ৩৫ বছর বয়সী গুইদো নিজেকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন। এর পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে ভেনিজুয়েলার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

এ ছাড়া গুইদোকে সমর্থন দিতে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রতিও আহ্বান জানান ট্রাম্প। তা নাহলে দেশটির ওপর অথনৈতিক অবরোধ আরোপের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

বিরোধী নেতা জুয়ান গুইদো বুধবার বিক্ষোভের মাঝে নিজেকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেন।

বিরোধী নেতা জুয়ান গুইদো বুধবার বিক্ষোভের মাঝে নিজেকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেন।

কিন্তু বিবিসি বলছে, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ভেনিজুয়েলার সেনাবাহিনী মাদুরোর প্রতি আনুগত্য অব্যাহত রেখেছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে সাবেক নেতা হুগো শ্যাভেজের মৃত্যুর পর ভেনিজুয়েলার ক্ষমতায় বসেন মাদুরো। গত বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনে জয়লাভ করে চলতি মাসের শুরুতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসেন তিনি।

এরপর থেকেই শুরু হয় মাদুরোবিরোধী আন্দোলন। দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নেতা জুয়ান গুইদোর সমর্থকরা রাস্তায় নেমে আছেন। কারণ মে মাসের নির্বাচন জালিয়াতির অভিযোগ এনে একটি পক্ষ বয়কট করে। তাছাড়া আন্তর্জাতিকভাবেও ওই নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে।

বিবিসি বলছে, মাদুরোর আমলে ভেনিজুয়েলায় ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া উচ্চ মুদ্রাস্ফিতি, জ্বালানি সংকট ও মৌলিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাওয়ায় কয়েক লাখ লোক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

গত মঙ্গলবার ও বুধবারের মাদুরোবিরোধী বিক্ষোভে গুলিতে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বেসরকারি সংস্থাগুলো (এনজিও)।

এদিকে, দক্ষিণ আমেরিকার সাতটি দেশ ব্রাজিল, কলম্বিয়া, চিলি, পেরু, ইকুয়েডর, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ে গুইদোকে বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে সমর্থন দিয়েছে।

কানাডাও গুইদোকে সমর্থন দিয়েছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে।

গুইদো নিজেও বিক্ষোভের মাঝে হাত উঁচিয়ে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন এবং নতুন করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের অঙ্গীকার করেন।

এ ছাড়া দ্য অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস (ওএএস) জয়ান গুইদোকে সমর্থন জানিয়েছে। সংস্থাটি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ এনে ২০১৭ সালে ওএএস থেকে বেরিয়ে যায় কারাকাস।

অন্যদিকে, মেক্সিকো, বলিভিয়া ও কিউবা মাদুরোর প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে।

দেশটিতে যারা ক্ষমতার পালাবদলের চেষ্টা করছে তাদের (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) সমালোচনা করেছে রাশিয়া। সেইসঙ্গে মস্কো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, দেশটিতে মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করবে।

এ ছাড়া তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোয়ান টুইটারে মাদুরোর প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, ‘আমার ভাই মাদুরো! সোজা হয়ে দাঁড়াও, আমরা তোমার পাশে আছি।’

এদিকে, ট্রাম্পের অবস্থানের প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেছেন, ওয়াশিংটন ভেনিজুয়েলাকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে। বিরোধী পক্ষ অভ্যুত্থানের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.