আশুলিয়ায় পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

458

ঢাকার আশুলিয়ায় শনিবার দুপুরে কিছু সময়ের জন্য আবার সড়ক অবরোধ করেন পোশাকশিল্প কারখানার শ্রমিকেরা। ১৫ মিনিট পর পুলিশের হস্তক্ষেপে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।

7675042616eb241c2a2d8a0725524e31-5c3983c0f1a96

জানা গেছে, আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় হা–মীম গ্রুপের শ্রমিকেরা দুপুরের খাওয়ার বিরতির সময় কারখানা থেকে বেরিয়েছিলেন। নির্ধারিত সময় শেষে বেলা সোয়া দুইটার দিকে বেশির ভাগ শ্রমিক কারখানার ভেতরে ঢোকেন। এ সময় কয়েক শ শ্রমিক কারখানার ভেতরে না ঢুকে কারখানার পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। ১৫ মিনিটের ওই অবরোধে সড়কের দুই পাশে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়।

এর আগে ন্যূনতম মজুরির দাবিতে আশুলিয়ায় আজ সকাল নয়টা থেকে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। তাঁরা দফায় দফায় আবদুল্লাহপুর-বাইপাস সড়ক অবরোধ করেন। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ১০টি যানবাহন ভাঙচুর করেন। সকালে ৩০টি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কাজ শুরু করে।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই বিক্ষোভ চলছে। ন্যূনতম মজুরির দাবিতে গত বৃহস্পতিবারও বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা। এর আগে আশুলিয়ার কাঠগড়া, কুটুরিয়া, জামগড়াসহ কয়েকটি এলাকায় রাস্তায় নামেন পোশাকশ্রমিকেরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে দুই পক্ষের ৩০ জনের মতো আহত হন। শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে আশুলিয়া এলাকায় অর্ধশত কারখানা বন্ধ ছিল। গত বুধবার শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে প্রায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় সাভার।

শ্রমিকের মজুরি নিয়ে পুরোনো পথে হেঁটেছেন পোশাকশিল্পের মালিকেরা। তাঁরা বাড়িভাড়া, যাতায়াত, খাদ্য ও চিকিৎসা ভাতা বাড়িয়ে দিলেও মূল মজুরি বা বেসিক বাড়াতে কৃপণতা করেছেন। গত পাঁচ বছরে শ্রমিকের মূল মজুরি ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির বিষয়টিও আমলে নেওয়া হয়নি। এ কারণে নতুন শ্রমিকের মোট মজুরি বা সর্বনিম্ন গ্রেডে ২ হাজার ৭০০ টাকা বৃদ্ধি পেলেও দক্ষ বা পুরোনো ব্যক্তিদের তার অর্ধেকও বাড়েনি। মজুরিকাঠামোর এই কৌশলের জন্যই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শ্রমিকেরা।

মজুরি নিয়ে শ্রমিকদের চলমান অসন্তোষও থামছে না। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ছে। সমস্যা সমাধানে মালিক-শ্রমিক ও সরকারের ত্রিপক্ষীয় কমিটি হয়েছে।

গত ২৫ নভেম্বর পোশাকশিল্পের জন্য নতুন মজুরিকাঠামোর প্রজ্ঞাপন জারি করে শ্রম মন্ত্রণালয়। তাতে নিম্নতম মজুরি আট হাজার টাকা ধরা হয়। ডিসেম্বরে নতুন মজুরিকাঠামো কার্যকর হয়। চলতি মাস থেকে নতুন কাঠামো মেনে বাড়তি মজুরি পেতে শুরু করেন শ্রমিকেরা। তার আগে নিম্নতম মজুরি ছিল ৫ হাজার ৩০০ টাকা।

গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নতুন মজুরিকাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকেরা। বিজিএমইএ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের চেষ্টায় নির্বাচনের আগে আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়। তবে গত রোববার ঢাকার উত্তরার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামেন। পরের দিনগুলোতে তা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.