ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হলো চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী “মেজবান”

737

জাহিদ রহমান,ওয়াশিংটনডিসিঃ  জমজমাট আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনডিসিতে  প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হলো চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী “মেজবান”।

গত ২ অক্টোবর, রবিবার ভার্জিনিয়ার (Font hunt park)ফন্ট হান্ট পার্ক, আলেকজান্দ্রিয়ায় এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীর উপস্থিতিতে মেজবান পরিণত হয় বাংলাদেশীদের মিলন মেলায়। উৎসবে কেউবা রং-বেরংয়ের পোশাক, পুরুষরা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লুঙ্গী-গামছা, ফতুয়া এবং মহিলারা শাড়ী পরে উৎসবের সৌন্দর্য অনেকখানি বাড়িয়ে দেন।

14627735_1114000778636872_141

 

মেজবান এর উদ্যোক্তা চট্টগ্রামের সন্তান রেদোয়ান। আয়োজনকে সফল করতে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন মোহাম্মদ মান্নান, আমান, সঞ্জয় বড়ুয়া,ফয়েজ,রুপম, এন্থ্যনি পিউস গোমেজ, রাজিব বড়ুয়া , জিবক বড়ুয়া, দস্তগির জাহাঙ্গীর ত্রুগিল ও সেলিম সহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে বিশিস্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নানকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

14625343_1114002141970069_336134356_n

কয়েক হাজার মাইল দূরে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশের আয়েশী জীবনধারার মাঝে একটি দিনের জন্য হলেও প্রবাসীরা স্বাদ নিয়েছেন ফেলে আসা দিনগুলির।

নানা রকম খাবারের পাশাপাশি উৎসবকে আরো প্রাণবন্ত করতে আয়োজন করা হয় চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

14628269_1114001638636786_1172386315_n

চট্টগ্রামের বিখ্যাত দলীয় সঙ্গীতের  নেত্রীত্ব  দেন লাকি, শিল্পি ডক্টর সিমা খানের গাওয়া “মধু কই কই বিষ খাওয়াইলা, কোন কারণে ভালবাসার দাম ন দিলা, কোন দোষ হন পাই, ভালবাসার দাম ন দিলা” চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানে কিছু সময়ের জন্য হলেও দর্শকরা খুঁজে পান মাটির গন্ধ।

14620162_1114001128636837_1675759291_n

উল্লেখ্য, প্রাচীন ঐতিহ্য “মেজবান”- যার মূল ধারনা হচ্ছে- এলাকাবসীদের নিয়ে বিশেষ উপলক্ষে বিশাল আয়োজনে ভোজন-আপ্যায়নের আনন্দ আয়োজন। “মেজবান” শব্দটি এসেছে পার্সিয়ান শব্দ ভান্ডার থেকে, যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে “হোষ্ট” বা “আপ্যায়নকারী”। হাজার বছর আগে সমাজের বিত্তশালীরা তাদের যেকোন উৎসব আয়োজনে এলাকার সবাইকে নিমন্ত্রন করে বিরাট ভোজ-বিলাসের আয়োজন করতেন তাদের প্রভাব, বিত্ত-বৈভব প্রকাশ করতে। সেটা কালের পরিক্রমায় পরিবর্তন হয়েছে অনেক। কিন্তু মৌলিকতা হারায়নি। এখনও এমনি আয়োজনে প্রচুর লোক সমাগম হয় এবং জনে জনে নয়, ঢালাও ভাবে প্রচারণার মাধ্যমে সবাইকে নিমন্ত্রন জানানো হয়। ধনী-দরিদ্র, ছোট-বড় নির্বিশেষে সবাই অতিথি। সবার সাথে সমানভাবে এমনি সহভাগিতা করার প্রচলন সত্যিই প্রসংশনীয়। এমন ঐতিহ্য শুধুই চট্টগ্রামের মাটিতে হয়ে থাকে এবং তাদের গর্বিত অহংকারের প্রতীক। আর নিমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন করানো হয় সাদা ভাত সিদ্ধ চালের, বিশেষ পদ্ধতিতে রান্নাকৃত মেজবান গরুর মাংস, ডাল এবং মুরগী, খাসীর মাংস দিয়ে। কিন্তু প্রধান হচ্ছে সাদা ভাত, মেজবান গরুর মাংসের তরকারি এবং চানার ডাল।
মেজবানে চিটাগাং ছাড়াও বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেকে অংশগ্রহণ  করেন।

14439017_1114003741969909_258271838_o

অতিথি হিসেবে ছিলেন সিলেটের সাবেক এমপি শফি চৌধুরী, ড:বদরুল হুদা খান, ভয়েস অব আমেরিকার আনিস আহমেদ, আজাদী পত্রিকার এম আ মালেক, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার অব কাউন্সিল ব্রিগেডিয়ার মো:সামসুল আলম চৌধুরী এবং এ্যাডভোকেট আলমগীর, পিপল এন টেকের ফারহানা হানিফ, ডেটা এন টেকের শিরিন আক্তার সহ সহস্রাধিক বাংলাদেশী।

14625325_1114001391970144_1812728373_n

মেজবান অনুষ্ঠানের সর্বশেষ আকর্ষন ছিলো র‍্যাফেল ড্র। ড্রয়ে প্রথম পুরস্কার আইপ্যাড বিজয়ী হন। ড:সিমা খান। দ্বিতীয় পুরস্কার ২টি স্মার্ট ঘরি, এবং তৃতীয় পুরস্কার ১০টি ব্লুটুত হেড সেট।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.