ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক যথাযোগ্য মর্যাদায় শোকাবহ ১৫ই আগষ্ট পালিত…

882

-এ্যন্থনী পিউস গমেজ, ভার্জিনিয়াঃ গত ১৫ই আগষ্ট, ২০১৬ রোজ সোমবার, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিবারের আয়োজনে ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো বাংলাদেশের স্থপতি, বাংলাদেশের  জাতীর পিতা, বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের  ৪১ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী (১৫ই আগষ্ট, ১৯৭৫)। এই শোকানুষ্ঠানে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিবার, দূতাবাসের সকল কর্মী ও তাদের পরিবারসহ উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের দূতাবাস কর্মকর্তাবৃন্দ, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কনগ্রেসম্যান এড হুয়াইট ফিল্ড, স্টেট ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মনপ্রীত আনন্দ, উচ্চপদস্থ সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ, ওয়াশিংটন প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির সামাজিক-সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ ও ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক এবং সমাজের বেশ কিছু আমন্রিত সুধীজন।

14101573_1075444549159162_518748634_n

 

দূতাবাসের বরাত দিয়ে জানান হয়েছে যে, শোকাবহ এই দিবসটি পালন করার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসে সকাল বেলায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয় এবং শাহাদৎ বরনকারী বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের স্মরণে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য সকালে তাদের উদ্দেশ্যে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অতঃপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃ্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন মাননীয় রাষ্ট্রদূত, জনাব মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।

দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভেই আগত অতিথিদের বাংলাদেশ দূতাবাস পরিবারের পক্ষ থেকে ফার্স্ট সেক্রেটারী মিসেস সামিয়া ইসরাত রুনী সাদর সম্ভাষন জানান।  অত:পর সবাই দাঁড়িয়ে শাহাদাৎবরনকারী বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধ্যা নিবেদন করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।এরপর মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে বাণী পাঠ করা হয়। বাণী পাঠের পর পরই বাংলাদেশের মাননীয় প্রেসিডেন্ট, মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীর প্রেরিত শোকবাণী পাঠ করে শোনান হয়। এরপর দিবসটির গাম্ভীর্য্য ও সংক্ষিপ্ত ইতিহাসসহ বাংলাদেশ এবং বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনে বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অতুলনীয় অবদানের কথা তুলে ধরে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন মাননীয় রাষ্ট্রদূত, জনাব মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। তার মূল্যবান বক্তব্যে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দেশের স্বাধীনতায় তার অপরিসীম ভূমিকা ও অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই মূলতঃ   স্বাধীনতা বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতি এবং তিনিই বাংলাদেশ ও বাঙালিকে হাজার বছরের পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত করে স্বাধীনতার সূর্য এনে দেন।তিনি বাংলার এই অবিংবাদিত নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধ্যা নিবেদন করে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন, একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য,বাংলাদেশকে সাফল্য ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃ্ত্বে দৃঢ় পায়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবারদৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

14101612_1075444562492494_1215236835_n

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে বক্তব্য রাখেন ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান, রোকেয়া হায়দার এবং ভয়েস অব আমেরিকার আন্তর্জাতিক ব্রডকাষ্টার, সংবাদ বিশ্লেষক, কবি জনাব আনিস আহমেদ। কবি আনিস আহমেদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তার স্বরচিত একটি কবিতা পাঠ করেন (A Tribute: An Epitaph).

14101672_1075444582492492_2024757023_n

এছাড়া বঙ্গবন্ধুর সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ ও অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারনমূলক বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্ববর্তী, পরবর্তী ও যুদ্ধ চলাকালীন সময়ের অভিজ্ঞতায় সম্পৃক্ত এসোসিয়েট প্রেসের সাবেক তুখোর সাংবাদিক, প্রফেসর আরনল্ড জেইটলিন।

তিনি ব্যক্তিগতভাবে বঙ্গবন্ধুর সাথে তার যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে কয়েকটি ঘটনার মূল্যবান স্মৃতিচারন করেন। অতঃপর বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি, জনাব মিজানুর রহমান। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনে তার অবিস্মরণীয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তার বক্তব্য পেশ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রেখে একটি চমৎকার দেশাত্ববোধক স্বরচিত কবিতা (“তুমি আমার”) পাঠ করেন বাংলাদেশ দূতাবাসের মাননীয় ডিসিএম, কবি, বাচিক শিল্পী জনাব মাহবুব হাসান সালেহ।

14017825_1075444559159161_1866074614_n

অনুষ্ঠনের এপর্যায়ে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন, গন অভ্যুত্থান, ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার ডাক দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক কালজয়ী ভাষণ,রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বরনের উপর নির্মিত একটি প্রামান্যচিত্র(“Bangabandhu: Forever in our Hearts”) প্রদর্শন করা হয়।

14054595_1075444729159144_1084955113_n

14102008_1075444579159159_393283846_n

এই প্রামান্য চিত্রে উঠে আসে বাংলার ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা ভিডিও চিত্র, যা যুগ যুগ ধরে আমাদের ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করবে আগামী সময়ের বলয়ে ইতিহাসের বৃত্তে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। পৃথিবীর ইতিহাসে এমনিভাবে যেমন অন্য কোন জাতী ভাষার স্বাধীনতার জন্য প্রান দেয়নি,এমনি মর্মন্তুদ রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামে কেউ ঝাপিয়ে পড়ে রক্তের বন্যা বইয়ে দেয়নি, তেমনি পৃথিবীর ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর মত কোন নেতাও জন্ম নেয়নি। তাইতো বঙ্গ বন্ধু আমাদের জাতীর পিতা, বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা, আমাদের বাঙালি জাতীর গৌরব। চিরকালের নেতা হয়ে থাকবে আমাদের জাতীর পিতা, শুধু আজ নয়, সহস্র বছর পরেও… অনন্তকাল ধরে। যিনি বাংলার মানুষের জীবনে স্বাধীনতার আলো এনে দিয়েছেন, যিনি বাংলার মানুষকে শুধু বাঙালি নয়, একজন মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার অধিকার এনে দিয়েছেন, যিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন বাংলার মানুষের ভালবাসার বেদীমূলে- তার স্মৃতির প্রতি আমাদের গভীর,বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসা! বাংলার এই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানের দেহ মাটিতে মিশে গেছে, কিন্রু আজও তার আত্মা বেঁচে আছে প্রতিটি বাঙ্গালির প্রানে!!! তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চির অমর…!!! (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.