ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘বাংলাদেশে প্রযুক্তি ও মেধাভিত্তিক বিনিয়োগ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা

537

নিউজবিডিইউএস ডেস্কঃভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক আনিস আহমেদ বলেন,  বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭০ ভাগই তরুণ এবং যাদের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। এই তরুণ জনগোষ্ঠিকে যদি সঠিকভাবে প্রযুক্তি খাতে সক্রিয় করা যায় তাহলে বাংলাদেশ বদলে যেতে পারে।FB_IMG_1541220184666
প্রযুক্তিখাতে বাংলাদেশের উদ্যোগকে কিভাবে বিস্তৃত করা যায় এবং সে লক্ষ্যে করণীয় কি, তার প্রেক্ষাপট নিয়েই ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘বাংলাদেশে প্রযুক্তি ও মেধাভিত্তিক বিনিয়োগ’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় একথা বলেন তিনি।গত শুক্রবার,২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত এই গোল টেবিল আয়োজন করে বাংলাদেশি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ‘পিপল এন টেক’ এবং আয়োজনে সহযোগিতা দেয় প্যারিসভিত্তিক সংগঠন ‘ওয়াল্ড বাংলাদেশ অর্গানাইজেশন’। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে প্রযুক্তি বিষয়ের উপর  এধরনের আয়োজন এটাই প্রথম।FB_IMG_1541220174012
গোলটেবিল বৈঠকে ‘পিপল এন টেক’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও প্রকৌশলী আবু বকর হানিপ মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। হানিপ বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার আইসিটি বা তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে জনশক্তি বৃদ্ধি করে চতুর্থ শিল্প বিল্পবের একটি ধারনা নিয়ে কাজ করছে, যেটি সরকারী শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের কাছে থেকে প্রায়ই শোনা যায়। প্রযুক্তি খাতের এই চতুর্থ বিল্পবের ধারণাটি নতুন, তবে এর বাস্তবায়ন সম্ভব। সেক্ষেত্রে, এই ধারনাটি এবং ধারনার স্বপক্ষে গৃহীত পদক্ষেপ আর করনীয়গুলি বহিঃর্বিশ্বে মার্কেটিং বা প্রচার করতে হবে। সেটা হলেই, প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের অর্জনগুলি বিশ্ব পরিমন্ডলে জানানোর সুযোগ হবে। আর সেই প্রচারণা থেকেই প্রচুর আউটসোর্সিংয়ের কাজ আসতে পারে বাংলাদেশে।’rt9-768x512
ডিপ্লোমেটিক করেসপডেন্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (ডিকাব)-এর সভাপতি ডেইলি স্টারের কুটনৈতিক প্রতিবেদক রেজাউল করিম লোটাস আর ডিকাবের সাবেক সভাপতি দৈনিক ইত্তেফাকের কুটনৈতিক এডিটর মাইনুল আলম এই আলোচনায় বিশেষ বক্তা হিসেবে তাদের অভিমত তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের আমন্ত্রণে বিশেষ একটি কর্মসূচিতে তারা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
এ আলোচনায় অংশ নিয়ে অতিথি বক্তারা বাংলাদেশে আইসিটি বিল্পব বা চতুর্থ বিপ্লবের পক্ষে প্রবাসীদের করণীয় কি সেটা জানতে চান। এসময় তারা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর পেশা ও আউটসোর্সিং বাড়ানোর পথে সরকারী উদ্যোগের পাশে প্রবাসী উদ্যোক্তারাও সমানভাবে অংশ নিতে পারে। বৈঠকে উপস্থিত সকলেই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনার কথা জানান।
অনুষ্ঠানে ইউএসএ ম্যাকউডেন ইডুকেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডঃবদরুল হুদা খান বলেন, আল্লাহ আমাকে ধন-সম্পদ জ্ঞান সবকিছুই দিয়েছেন। কিন্তু অনেকে বলে দেশের জন্য আমি কি করছি? হ্যাঁ আমি দেশের জন্য অনেক কিছু করছি। আমি যেটা করছি, সেটার নাম হচ্ছে জ্ঞান বাহন। জ্ঞান বাহন হচ্ছে উন্মুক্ত শিখন পরিবেশ, যেটা হচ্ছে জীবনব্যাপী গণ শিক্ষার আসর। এটা সম্পন্ন আঞ্জলিক অর্থয়ান ও সকলের সহযোগিতায় পরিচালিত হবে। যে জ্ঞান বাহনটা চালাবে সেও জ্ঞান বাহক হবে। এতে একজন শিক্ষিত বেকার যুবকেরও চাকরী হবে।
জ্ঞান বাহন দেখতে কেমন হবে সে প্রসঙ্গে বলেন, গাড়িটা হবে গ্রামের কুড়ি ঘরের মত, এখানে ওয়াইফাই থাকবে, ফোন চার্জ করতে পারবে।সর্বপরি এখানে জ্ঞানের আসর হবে।বৈঠকে উপস্থিত সকলেই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনার কথা জানান। টেকনাফ এলএসসি’র পেসিডেন্ট জনাব ফয়সাল কাদের ২০০০ সালে আউটসোর্সিং ধারনার প্রথম দিকের একজন প্রকৌশলী হিসেবে তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। প্রযুক্তবিদ, জনাব আলিম জানান, হত ২৬ বছর ধরে, তার প্রতিষ্ঠান সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, অথচ এই অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানকে বাংলাদেশের প্রযুক্তি কর্মবাজার বিকাশের পথে কাজে লাগানোর অনেক সুযোগ রয়েছে।
‘পিপল এন টেক’র প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপ ছাড়াও এই গোলটেবিল বৈঠকে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার রেদোয়ান চৌধুরী, এবিসিসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট এন্থনি পিউস গমেজ,  সাংবাদিক জাহিদুর রহমান, ডঃসীমা খান,  ইকবাল চৌধুরী,হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সিনিয়র কনসালটেন্ট আবু সাঈদ মাহফুজ, মুশতাক আহমেদ, নাজির উল্লাহ, তাহমিদ রব, শরীফ মহসিন, প্রিয়লাল কর্মকার,  আব্দুল আলী এবং  সরোজ বড়ুয়া প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, প্রযুক্তি খাতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবছর ভারত আয় করছে ১০০ বিলিয়ন ডলার। তাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩০০ বিলিয়ন ডলার। সেখানে বাংলাদেশ বছরে আয় করছে এখন ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের মধ্যে সরকার ব্যাপক পরিকল্পনার মাধ্যমে এটাকে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার চেষ্টা করছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আউটসোর্সিংয়ের বার্ষিক বাজার প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার। সারাবিশ্বের বাজার ৪.৭ ট্রিলিয়ন ডলার।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.