কবি আনিস আহমেদের কবিতার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

732

এ্যন্থনী পিউস গমেজ, ভার্জিনিয়া

গত ১৪ই মে, ২০১৬ গেইথার্সবার্গ রিজিওনাল লাইব্রেরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকার স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব, সাবেক শিক্ষক, বর্তমানে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের নিউজ ব্রডকাষ্টার, সংবাদ বিশ্লেষক এবং কবি আনিস আহমেদের সাম্প্রতিক কবিতার বই “আলোকিত পালকের জলবিন্দু”র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান। অত্র এলাকার সুশীল সমাজের দেড় শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে অত্যন্ত সুন্দর আয়োজনে এই অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়। আয়োজনে ছিল “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এল্যুমনাই এসোসিয়েশন ফোরাম ইঙ্ক” (ডুয়াফী) এবং “গানের ছোঁয়ায় কবিতা”। পুরো অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন ওয়াশিংটনে সবার পরিচিত মুখ, প্রিয় সঞ্চালক আতিয়া মাহজাবিন নিতু।

05192016_01_ANIS_AHMED

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনাব দস্তগীর জাহাঙ্গীর, সাথে উপস্থিত ছিলেন ডঃ মিজানুর রহমান। এরপর “আলোকিত পালকের জলবিন্দু” কবিতার বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চীফ অব মিশন, জনাব মাহবুব হাসান সালেহ। উল্লেখ্য জনাব মাহবুব হাসান সালেহ ব্যক্তিগতভাবে নিজেও একজন কবি এবং কবিতানুরাগী, স্বদেশপ্রেম এবং স্বদেশী সংস্কৃতির সাথে তার আত্মার সংশ্লিষ্টতা। তিনি কবি আনিস আহমেদকে “আলোকিত পালকের জলবিন্দু” কবিতার বইটি বাংলা সাহিত্যের পাঠকদের উপহার দেবার জন্য তাকে অভিনন্দন জানান এবং কবি আনিস আহমেদের আলোকিত ব্যক্তিত্বে এবং তার সৃজনশীল কাব্যসৃষ্টির আলোয় আমাদের সমাজ আলোকিত হোক, আরো সমৃদ্ধ হোক- একামনা করেন। বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং কবি আনিস আহমেদ, তার স্ত্রী জলি আহমেদ, ডঃ মিজানুর রহমান এবং দস্তগীর জাহাঙ্গীর।

উল্লেখ্য কবি আনিস আহমেদের “আলোকিত পালকের জলবিন্দু” বইটির প্রচ্ছদ শিল্পী জনাব সুনীল শুক্লাকে মঞ্চে আহবান করে তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জনাব আনিস আহমেদ। মোড়ক উন্মোচন ছাড়াও আর যে বিশেষ কাজটি সম্পন্ন করা হয়, তাহল কবি আনিস আহমেদের কবিতার একটি ওয়েবসাইটের শুভ উন্মোচন করা হয়। আনিস আহমেদের কবিতার এই ওয়েবসাইটটি উন্মোচন করেন জনাব জিয়াউর রহমান। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, কবি আনিস আহমেদের কবিতার ওয়েবসাইটটি ডিজাইন এবং তৈরী করেছেন আনন্দ খান। সবাই করতালি দিয়ে ওয়েবসাইটের শুভ উন্মোচনের জন্য আনিস আহমেদকে অভিনন্দন জানান।এরপর আনিস আহমেদের কবিতার সাথে নৃত্যের যুগলবন্দী পরিবেশন করেন মা ও মেয়ে- অদিতি সাদিয়া রহমান এবং সামারা এলাহী। পিয়ানোতে সহযোগিতা করে তার ছোট মেয়ে সানিকা এলাহী। তাদের চমৎকার পরিবেশনায় সবাই আপ্লুত হয়ে গিয়েছিল কবিতার শব্দে শব্দে সামারার নৃ্ত্যশৈলীর চমৎকার পরিবেশনায়।

05192016_04_ANIS_AHMED

অতঃপর আমন্ত্রিত বিশেষ বক্তাগন কবি আনিস আহমেদ, তার ব্যক্তিত্ব, প্রতিভা, তার সাহিত্য এবং কাব্যচর্চার ক্ষেত্রে বিচরণ এসবের উপড় সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করেন। যেসব বক্তারা কবি আনিস আহমেদের উপড় আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন, তারা হলেনঃ জাহানারা আলী, সৈয়দ জিয়াউর রহমান, ডঃ ফখরুদ্দিন আহমেদ, ডঃ আশরাফ আহমেদ, ডঃ আনিসুর রহমান, ওয়াহিদ হোসেইনি, রোকেয়া হায়দার, শফি দেলোয়ার কাজল এবং মৃদুল রহমান।কবির সঙ্গে কথোপোকথন পর্বে কবি আনিস আহমেদসহ যারা অংশগ্রহন করেন, তারা হলেনঃ সামিনা আমিন, ডঃ নকিবুদ্দিন এবং দস্তগীর জাহাঙ্গীর।

এরপর কবির ব্যক্তি জীবনের উপড় আলোকপাত করে একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রদর্শিত ভিডিওচিত্রে কবি আনিস আহমেদের ছোটবেলা থেকে শুরু করে তার পরিবার, তার কৈশোর, যৌবন, বিবাহ, কর্মজীবন এবং তার শিকক্ষতা জীবনসহ তার কাব্য চর্চার উপড় আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যেখানে অসংখ্য স্মৃতিময় মূহুর্ত আজো মূর্ত হয়ে আছে আলো-ছায়ার রেখায়। কবি আনিস আহমেদের উপড় এই ভিডিও চিত্রটি তৈরী করেছেন জনাব শফিকুল ইসলাম।

এরপরই শুরু হয় প্যানেল আলোচনা। যারা প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহন করেন, তারা হলেন… কবি মাহবুব হাসান সালেহ (ডেপুটি চীফ অব মিশন, বাংলাদেশ দূতাবাস), বাংলাদেশের সাবেক জনপ্রিয় সংবাদ পাঠক এবং বর্তমানে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগে কর্মরত জনাব সরকার কবিরুদ্দিন, আনোয়ার ইকবাল এবং কুলসুম আলম রহমান। অনুষ্ঠানটির মডারেটর ছিলেন রায়হান ইলাহি।

আনিস আহমেদের কবিতার বই থেকে যারা কবিতা আবৃত্তি করেন তারা হলেন- এ,কে,এম আসাদুজ্জামান, ডঃ ইশরাত সুলতানা মিতা, আরিফুর রহমান স্বপন, কাফি খান, সিলিকা কণা, শগুফতাহ নাসরিন কুইন,শাহনাজ ফারুক, শারমিন চৌধুরী, হুমায়রা হায়দার, প্যাট্রিশিয়া গোমেজ, শম্পা বণিক, শান্তনু বাগচী এবং আনিস আহমেদ লিখা একটি ইংরেজী কবিতা পাঠ করে শুনান অনিকা তাসনিম তানপি। অনুষ্ঠানে চমৎকার সঙ্গীত পরিবেশন করেনঃ কুমকুম বাগচী, কামরুল হাসান এবং আনন্দ খান। তবলায় সঙ্গত করেন ডঃ পল গোমেজ।

অনুষ্ঠানের এপর্যায়ে ডুয়াফী’র সভাপতি ডঃ মিজানুর রহমান কবি আনিস আহমেদের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষ্যে তাকে অভিনন্দন জানান এবং আনিস আহমেদের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন। এছাড়া তিনি সবাইকে অনুষ্ঠানে আসার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং বিশেষভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা, আয়োজন, ব্যবস্থাপনা এবং পরিচালনায় সহযোগিতা করেছেন। যাদের নাম এখানে উল্লেখ না করলেই নয়, তারা হলেন- ডঃ ইশরাত সুলতানা মিতা, ডঃ কাইয়ুম খান, আনন্দ খান, পিঙ্কি খান, দিনার মনি, সাবরিনা রহমান, আরিফুর রহমান স্বপন, শফিকুল ইসলাম, ফেন্সি খান, , নুস্রাত রব্বান সোমা এবং লায়লা মন্ডলকে। এছাড়া শব্দ নিয়ন্ত্রন ও ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জনাব কামরুল হাসানকে।

অতঃপর সময়ের স্বল্পতার জন্য নির্ধারিত সময়ের সীমারেখায় থেকে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করার পূর্বে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান কবি আনিস আহমেদ। সবাইকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে ছবি তোলা ও বইয়ে অটোগ্রাফ দেয়ার পালা শেষ হলে সবাই বেড়িয়ে পড়েন মিলনায়তন ছেড়ে। একটি চমৎকার বিকেল, একটি মহতী অনুপম আয়োজন, অনেকগুলো আলোকিত মানুষের মিলন মেলা ও স্নিগ্ধ সান্নিধ্য, আত্মার আত্মীয়দের সাথে নির্মল আনন্দে কথোপকথন, কাব্য-সঙ্গীত-নৃত্যের ছোঁয়ায় মন ভিজিয়ে আনন্দ-অনুভবের আবেশে আপ্লুত হওয়া- সবকিছু মিলিয়ে এটি ছিল একটি ব্যতিক্রমধর্মী ব্যঞ্জনাময় চমৎকার অনুষ্ঠান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.