কানেকটিকাটে ৬ বছর পর প্রবাসীদের মাঝে বইছে নির্বাচনী হাওয়া
সাবেদ সাথী, হার্টফোর্ডঃ বাংলাদেশি আমেরিকান এসোসিয়েশন অব কানেকটিকাট (বাক)-এর দ্বিবার্ষিক নির্বাচন আগামী ১৩ মে ২০১৭ অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘ ছয় বছর পর আবারো দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
দু’বছর মেয়াদী কার্যকরী কমিটির এ নির্বাচন প্রতি দুই বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হলেও তেমন প্রতিদ্বন্দ্বি প্যানেল না থাকায় কানেকটিকাটের অধিকাংশ প্রবাসী বাংলাদেশিরাই জানতো না নির্বাচনের খবর বা দিন তারিখ।
এবার দু’টি প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে ১৭ পদে মোট ৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৭শত ৭০ জন। গত ২০১১ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মোট ভোটারের চেয়ে তিনগুন বেশি। গত ২০১১ সালের নির্বাচনে বাক-এর তালিকাভুক্ত ভোটার সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩শ। ভোট প্রদান করেছিল মাত্র ৭২৫ জন। তবে বর্তমান ভোটার তালিকায় অনেক দ্বৈত ভোটার রয়েছে বলে বেশ কয়েকজন দাবি করেছেন। ইতিমধ্যে দু’প্যানেলের প্রতিদ্বন্দ্বিতার খবর ছড়িয়ে পড়লে এ কানেকটিকাটের সর্বত্রই নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। প্রবাসীদের মাঝেও বেড়েছে উৎসাহ ও উদ্দীপনা।
বাক-এর দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে এবারে দু’টি শক্তিশালী প্যানেল তাদের মনোনয়ন পত্র জমা দেন। পরে প্রার্থীতা যাচাই-বাছাই করে দু’টি প্যানেলের সকলকেই বৈধ বলে ঘোষনা দেওয়া হয়। প্যানেল দু’টি হল বাক-এর বর্তমান কমিটির সভাপতি মশিউর রহমান কামাল ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক হুমায়ুন জায়গীরদার প্যানেল কামাল-হুমায়ুন পরিষদ এবং প্যানেল হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রস্থ জালালাবাদ অ্যাশোসিয়েশনের সাবেক সাধারন সম্পাদক ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল ও বাক-এর সাবেক সাধারন সম্পাদক মীর আজম এর হেলাল-আজম পরিষদ। এখন পর্যন্ত দু’তি প্যানেলকেই শক্তিশালী মনে করা হচ্ছে। কানেকটিকাটের একমাত্র বৃহৎ সামাজিক এ সংগঠনে গত ছয় বছর ধরে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়ায় অনেকেই ভুলেই গেছেন ভোট দেওয়ার পদ্ধতি ও নিয়মকানুন। তবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সুষ্ঠ ও সুন্দর নির্বাচন অনেকেই আশা করেছেন। তবে এ ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ও বলিষ্ঠ ভূমিকা নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
২০১১ সালের ২৬ জুন বাক-এর দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে প্রথমবারের মতো দু’টি প্যানেলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। তখন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছিল। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিতবাংলাদেশি আমেরিকান এসোসিয়েশন অব কানেকটিকাট (বাক)-এর দ্বিবার্ষিক ঐ নির্বাচনে আশফাক-কামাল ও আজম-হালিম পরিষদের হাড্ডাহড্ডি লড়াইয়ের পর আশফাক-কামাল পরিষদ জয়লাভ করে।
চলতি বছরের নির্বাচনে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাঁরা হলেনঃ
কামাল-হুমায়ুন পরিষদ: সভাপতি পদে মশিউর রহমান কামাল ও সাধারন সম্পাদক পদে হুমায়ুন জায়গীরদার, সহ-সভাপতি পদে দুইজন নুরুল আলম ও ডেভিড রোজারিও, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদে সাঈদ রহমান, কোষাধ্যক্ষ পদে সৈয়দ সাদেক আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রাশিদা আখন্দ, যুগ্ম সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ উদ্দিন, গণসংযোগ সম্পাদক পদে একেএম মেসবাহ উদ্দিন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মোহাম্মদ আলম,যুগ্ম ক্রীড়া সম্পাদক পদে এমরান রহিম, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক পদে ফরিদ চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে মারলিন গোমেজ এবং নির্বাহী সম্পাদক পদে তিনজন হলেন যথাক্রমে- হারুন আহমেদ, হাবিবুর রহমান ও আব্দুল মুমিত।
হেলাল-আজম পরিষদ: সভাপতি পদে ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল, সাধারন সম্পাদক পদে মীর আজম সহ-সভাপতি পদে দুইজন মোহাম্মদ রহমান তুহিন ও হালিম আকবর, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদে সাঈদ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ পদে সোয়েলুর রহমান,সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রওনাক আফরোজ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মোল্লা বাহাউদ্দিন, যুগ্ম সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মার্ক হাওলাদার, গণসংযোগ সম্পাদক পদে আব্দুল জায়গীরদার, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ইকরাম ভুঁইয়া,যুগ্ম ক্রীড়া সম্পাদক পদে জাহাঙ্গির আলম, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক পদে মাহবুবুল হক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে সীমা উল্লাহ এবং নির্বাহী সম্পাদক পদে তিনজন হলেন যথাক্রমে-মীর সাব্বির আহমেদ, মোহাম্মদ শাহীন ও ফজল আহমেদ। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন: কোষাধ্যক্ষ পদে আনোয়ার হোসেন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে তারেক খান, যুগ্ম সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ আজিজ এবং নির্বাহী সদস্য পদে মোহাম্মদ হাসান।
এবারে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন ড. গোলাম চৌধুরী ইকবাল (প্রধান), সহকারি নির্বাচন কমিশনার যথাক্রমে-কাজী বেলাল (শাহজাহান) ও শফিক উদ্দিন আহমেদ।