কোটা আন্দোলনকারী ৫ জনকে মারধর করেছে ছাত্রলীগ

133

নিরাপদ বাংলাদেশের দাবিতে মানববন্ধন করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের পাঁচ নেতা। আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

6fe0d2d9f12aa53af5b8208d90682081-5c1f7809505aa

মারধরের শিকার সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’–এর ব্যানারে বেলা তিনটায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তাঁদের কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে তাঁরা টিএসসিতে অপেক্ষা করছিলেন। একপর্যায়ে টিএসসিতে দুপুরের খাবার খেতে গেলে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল শাখার ৬০-৭০ জন নেতা-কর্মী তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান।
সোহরাবের অভিযোগ, তাঁকেসহ তাঁদের সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা ও জসীম উদ্দিন আকাশকে মারধর করেন ছাত্রলীগের ওই নেতা-কর্মীরা। মারধরের পর জসীমকে তুলে নিয়ে গেছেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে সোহরাব ও ইয়ামিন চিকিৎসাধীন। সোহরাব হোসেন বলেন, হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া সোহানুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আর শহীদুল শান বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের স্কুলছাত্র–বিষয়ক সম্পাদক।

সন্ধ্যার দিকে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের এক নেতা বলেন, জসীম উদ্দিনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক বলেন, তাঁদের সংগঠনের পাঁচজন যুগ্ম আহ্বায়ককে মারধর করা হয়েছে। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত ছাত্ররা হলেন সোহরাব হোসেন, বিন ইয়ামিন মোল্লা, জসীম উদ্দিন, আহমেদ কবির ও জালাল আহমেদ।

টিএসসি এলাকায় হামলায় আহত কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা জালাল আহমদকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা, ২৩ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

মারধরের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নুরুল হক বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে একটা মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছিল। আগের ঘটনাগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।’ এই হামলার প্রতিবাদে কর্মসূচি দেবেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমার কাছে তথ্য এসেছে যে ক্যাম্পাসে কিছু একটা ঘটানোর উদ্দেশ্য নিয়ে দুই ধরনের ছাত্র সংগঠনের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। তারা কোটা করে, না কী করে, সেটাতে আমরা ইন্টারেস্টেড না। তারা আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনার কথা শুনিনি। আমাদের যাচাই-বাছাই করে দেখতে হবে। সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ একটা ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন করেছিল। আমরা সেই ইস্যুর পরিসমাপ্তি দেখেছি। তারপরও তারা কোন স্বার্থের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করতে চায়, সেটা আমরা জানি না। যেকোনো ধরনের ঘটনা ঘটলে ছাত্রলীগের দিকেই বা কেন অভিযোগের আঙুল তাক করে, সেটাও আমাদের জানা নেই। তারা যদি ছাত্রসংগঠনের হতো, তাহলে তাদের কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক মনে হতো। কিন্তু তাদের কার্যক্রমই আমাদের কাছে অস্বাভাবিক ঠেকছে।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.