ক্ষমা চাইলেও জামায়াতে ফিরবেন না রাজ্জাক

398

৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইলেও জামায়াতে ইসলামে আর ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন সদ্য পদত্যাগকারী দলটি সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।

razzak_home

তিনি বলেছেন, অত্যন্ত চিন্তা ভাবনা করেই জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেছি। আমি এই মুহূর্তে অন্য কোনো দলে যোগদান করবো না। আমি আমার পেশায় ফিরে যাব।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিবিসি বাংলার বিশেষ ফেসবুক লাইভে এসে এসব কথা বলেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।

তার সাক্ষাৎকার নেন মাসুদ হাসান খান।

যদি তারা (জামায়াত) ৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাই, তাহলে কি ফিরে যাবেন? এর উত্তরে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, ফিরে যাবো না।

তিনি বলেন, আমি কোনো চাপে পড়ে দল ছাড়ছি না। ২০০১ সালে আমি ৭১ সালের ইস্যুতে ক্ষমা চাওয়ার ইস্যু উত্থাপন করেছিলাম। কিন্তু আমার সেই দাবি কখনো আমলে নেয়নি।

ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, ৩০ বছর আগে যখন আমি জামায়াতে যোগদান করেছিলাম; তখন আমি বলেছিলাম জামায়াত সংস্কার করবো। কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি। আর একটা বিষয় ছিল, স্বাধীনতার পরে যারা জন্মগ্রহণ করেছে। তারা-তো কোনো অপরাধ করেনি। তাহলে তারা কেন সেই অপরাধের অংশদারী হবে?

তিনি বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় জামায়াতের বিতর্কিত ভূমিকার জন্য বারবার ক্ষমা চাওয়ার জন্য বলেছি। ইতিহাসের উদাহরণ দিয়েছি যে- স্বাধীনতা-বিরোধিতা করে কোনো দেশে রাজনীতি করা সম্ভব না।

সদ্য পদত্যাগকারী জামায়াতের সিনিয়ার এই নেতা বলেন, আমি এই মুহূর্তে অন্য কোনো দলে যোগদান করবো না। আমি আমার পেশায় ফিরে যাবো। আমি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে কাজ করবো। কোনো দলে যোগদান না করেও দেশের সেবা করা যেতে পারে। সিভিল সোসাইটিতে থেকে দেশের সেবা করা যায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান দ্বারা পরিচালিত। সেই সংবিধানের আলোকে রাজনীতি করতে হবে। আর ইসলাম রাজনীতির মূল কথা হচ্ছে জনগণের কল্যাণ।

তিনি বলেন, জামায়াতের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন হচ্ছে দলের ভেতরে। তবে পরিবর্তনটা যতদ্রুত সম্ভব, ততদ্রুত করতে ব্যর্থ হচ্ছে দলের নেতারা।

তিনি বলেন, আমি জামায়াতকে বারবার দুটি পরামর্শ দিয়েছি। এক হচ্ছে দলের অভ্যন্তরীণ সংস্কার করতে হবে। নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। দ্বিতীয় স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা। যদি দলটি এই কাজ করতে পারে, তাহলে জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দলে পরিণত হবে।

ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকার ২০১১ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর কার্যক্রম করতে দিচ্ছে না। ঢাকাসহ সারাদেশে সকল অফিস বন্ধ, সংবাদ সম্মেলন করতে পারছে না। আবার নিবন্ধন নেই, রাজনৈতিকভাবে অনেক পিছিয়ে আছে।

তিনি বলেন, সবকিছু বিবেচনার সময় এসেছে, জামায়াতকে বিলুপ্ত করা, সেটা দেশ, জাতি ও দলের জন্য কল্যাণকর হবে।

ফেসবুক লাইভে রাজ্জাক বলেন, ইসলামী রাষ্ট্রের যে কনসেপ্ট রয়েছে, সে বিষয়ে চিন্তা করা দরকার। জামায়াতে ইসলামীতে অনেক যুবক, মহিলা আছে। তারা আন্তর্জতিক বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তারা সঠিক ও সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নিবে। তারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক যুক্তরাজ্যের বারকিং, এসেক্স থেকে জামায়াতের আমির মকবুল আহমাদ বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.