খ্রিষ্টান অধ্যুষিত অস্ট্রেলিয়ায় মুসলমানদের বৃদ্ধির হার ৪০ শতাংশ
অস্ট্রেলিয়ায় ধর্মবিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা ব্যাপক হারে কমলেও অন্যান্য ধর্মের তুলনায় ইসলাম সবচেয়ে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে বলে উঠে এসেছে এক জরীপের তথ্যে। দেশটির সাম্প্রতিক আদমশুমারিতে দেখা গেছে, ২০০৬ সালের পর থেকে সেখানে মুসলমানের সংখ্যা শতকরা ৪০ ভাগ বেড়েছে। অন্যদিকে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ১৯৭৬ সালের পর থেকে গত ৩৫ বছরে কমে শতকরা ৬১ ভাগে দাঁড়িয়েছে।
১৯৭৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় মুসলমানের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৪ হাজার ৭১ জন। কিন্তু এখন দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা চার লাখ ৭৬ হাজার ২৯১ জন। অর্থাৎ তখন থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা দশ গুণ বেড়েছে। মুসলমানরা এখন অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যা শতকরা ২ দশমিক ২ ভাগ। অর্থাৎ গত ৫ বছরে তাদের সংখ্যা বেড়েছে শতকরা ৪০ ভাগ।
কমছে অমুসলিমদের মধ্যে ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা!
অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার শতকরা ২২ ভাগ বা প্রায় ৪৮ লাখ নাগরিক বলছেন, তারা কোনো ধর্মে বিশ্বাস করেন না। এদের মধ্যে রয়েছেন নাস্তিক বা সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসী, কথিত মানবতাবাদী, যুক্তিবাদী ইত্যাদি। ২০০৬ সালের পর থেকে কোনো ধর্মে বিশ্বাসী নন এমন নাগরিকের সংখ্যা বেড়েছে শতকরা ২৯ ভাগ। ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার শতকরা ১৮ ভাগ নাগরিক (৩৭ লাখ) বলেছিলেন, তারা কোনো ধর্মে বিশ্বাস করেন না।
আসলে বহু বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। কমে আসছে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যাও। ১৯১১ সালে দেশটির শতকরা ৯৬ ভাগ নাগরিক ছিলেন খ্রিস্টান। ১৯৭৬ সালে এ হার ছিল শতকরা ৮৯ ভাগ। ৩৫ বছর পর এখন দেশটিতে এ হার ৬১ শতাংশ।
অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার নারীদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা বেশি। দেশটির ধর্মগুলোর মধ্যে ক্যাথলিক খ্রিস্টধর্ম অনুসারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ৫৪ লাখ অস্ট্রেলিয় এ ধর্মমতে বিশ্বাস করেন। গত জরিপের তুলনায় তাদের সংখ্যা বেড়েছে ৬.১ শতাংশ হারে। প্রায় ৩৭ লাখ অস্ট্রেলিয় এঙ্গলিকান বা চার্চ অব ইংল্যান্ডের অনুসারী। এ সংখ্যা ধর্মে অবিশ্বাসী অস্ট্রেলিয়দের সংখ্যার চেয়েও কম।
এ ছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী কয়েকটি ধর্ম রয়েছে। এসব ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ৭ হাজার ৩৬৩।