চট্টগ্রামের স্কুলে হঠাৎ দুদক চেয়ারম্যান, ৮ শিক্ষকের সাতজন অনুপস্থিত

637

চট্টগ্রামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আকস্মিক অভিযান চালিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। রোববার সকাল ৯টার দিকে নগরীর কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান তিনি।

135759_bangladesh_pratidin_4b

তবে হঠাৎ অভিযানে ঐ বিদ্যালয়ের ৮ জন শিক্ষকের মধ্যে ৭ শিক্ষককে অনুপস্থিত ছিলেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য  এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, দুদক চেয়ারম্যানের কাছে বিশেষ মাধ্যমে খবর আসে যে চট্টগ্রাম মহানগরীর অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শিক্ষকগণ নিয়মিত স্কুলে আসেন না। বিষয়টি গোপন রেখে স্বয়ং দুদক চেয়ারম্যান আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পৌঁছে যান চট্টগ্রামে।

পরে তিনি ৯টা ১৫ মিনিটে হাজির হন নগরীর কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। স্কুল সময়ে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের স্কুলের বাইরে দেখে বিস্মিত দুদক চেয়ারম্যান ঢুকে পড়েন স্কুলে।

সেখানে সরেজমিনে দেখেন স্কুলের আটজন শিক্ষকের মধ্যে একমাত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উপস্থিত, বাকি সাতজন শিক্ষকই অনুপস্থিত। ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের আশেপাশে আচার-চানাচুর খেয়ে অলস সময় পার করছে।

অভিভাবকগণ দুদক চেয়ারম্যানকে কাছে পেয়ে তাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।

এসময় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কাউকেই ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে দুদক দণ্ড বিধির ১৬৬ ধারা প্রয়োগ করবে। তারপরও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতিসাধন করবেন বা করার চেষ্টা করবেন এমন কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না’।

এর পরপরই দুদক চেয়ারম্যান যান নগরীর ভাটিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে দেখেন ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ জন শিক্ষক অনুপস্থিত। এদের অনুপস্থিতির কারণ স্কুল কর্তৃপক্ষ দুদক চেয়ারম্যান জানাতে পারেননি।

দুদক চেয়ারম্যান ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি তালিকা পরীক্ষা করে দেখেন, গতকাল যে সকল শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল তাদের অনেককেই উপস্থিত দেখানো হয়েছে। আবার আজ বেলা ১০টা পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের রোল কল করা হয়নি। এবিষয়েও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।

এরপর দুদক চেয়ারম্যান আকস্মিক পরিদর্শনের যান নগরীর শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করা কোনো শিক্ষার্থীকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি অবহিত হয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন দুদক চেয়ারম্যান।

তবে নবম শ্রেণিতে এক বা একাধিক বিষয়ে ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীদের ২০০০ টাকার বিনিময়ে দশম শ্রেণিতে প্রোমোশন দেওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, এটা অনৈতিক। শিক্ষা ক্ষেত্রে অনৈতিকতার কোনো স্থান থাকতে পারে না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.