এদিকে এ অভ্যুত্থানে দেশটির অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসাবে এমারসন নানগাগওয়াকের নাম ঘোষণা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে তাঁকে বরখাস্ত করেছিলেন মুগাবে। নানগাগওয়াকে এত দিন মুগাবের উত্তরসূরি ভাবা হলেও সম্প্রতি তাঁর জায়গায় ফার্স্ট লেডি গ্রেস মুগাবেকে ভাবা হচ্ছে।মূলত নানগাগওয়াকের বরখাস্তের কারণে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে সংকট দেখা দেয়। এরই জের ধরে দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটলো।গত বুধবার সকাল থেকেই দেশটির নিয়ন্ত্রণ সেনাবাহিনীর হাতে রয়েছে। রাজধানী হারারের রাস্তায় সাঁজোয়া গাড়িবহর নিয়ে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমাদের একমাত্র টার্গেট মুগাবেকে ঘিরে থাকা অপরাধীরা। তাদের কারণেই দেশটিতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের বিচারের আওতায় আনতে এ পদক্ষেপ।’
দেশটি এখন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এটি সেনা অভ্যুত্থান কি না, এ বিষয়টি নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।
বুধবার সকালে রাজধানী হারারের নিয়ন্ত্রণ সেনাবাহিনীর হাতে চলে গেলেও দক্ষিণ আফ্রিকায় নিযুক্ত জিম্বাবুয়ের রাষ্ট্রদূত আইজ্যাক ময়ো সেনা অভ্যুত্থানের খবর নাকচ করে দিয়ে বলেন, সরকারের নিয়ন্ত্রণ অখনও অটুট রয়েছে।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা জানিয়েছেন, তিনি মুগাবের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি ইঙ্গিত দেন, ‘মুগাবে নিজের বাড়িতেই গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন, তবে ভালো আছেন।’ মুগাবেকে গৃহবন্দী করার পর এটিকে রক্তপাতহীন ক্ষমতার পালাবদল হিসাবে বর্ণনা করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
রাজধানীর নিয়ন্ত্রণের আগে গতকাল মধ্যরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দখল করে নেয় সেনাবাহিনী। সেখানে চিফ অব স্টাফ লোজিস্টিক মেজর জেনারেল এসবি মোয়ো টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতি পাঠ করেন। তিনি বলেন, এটি কোনো অভ্যুত্থান নয়। এ অভিযান সম্পন্ন হলেই দেশে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে বলে ওই বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেন সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র।
এদিকে বিরোধী দল মুভমেন্ট ফর ডেমোক্রেটিক চেঞ্জ শান্তিপূর্ণভাবে সাংবিধানিক গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আহবান জানিয়েছে। দলটি আশা করে, সেনাবাহিনীর এই হস্তক্ষেপ ‘দেশকে স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে নেতৃত্ব দেবে।’
সাউদার্ন আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটির (এসএডিসি)র পক্ষ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা বলেন, তিনি আশা করেন জিম্বাবুয়ের সরকারে অসাংবিধানিক কোনো পরিবর্তন হবে না।
জুমা জিম্বাবুয়ের সরকার ও সেনাবাহিনীর প্রতি রাজনৈতিক অচলাবস্থার সমাধান করতে আহবান জানান। ১৯৮০ সালে ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই দেশটি শাসন করে আসছেন রবার্ট মুগাবে।( সুত্র: বিবিসি ও রয়টার্স)