জ্বালানি তেলের দরবৃদ্ধির বিপক্ষে ট্রাম্প
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে সরব মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মাস দুয়েক আগেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যারেলপ্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৮০ ডলার ছুঁই ছুঁই করেছিল। কিন্তু ট্রাম্পের অবস্থানের কারণে পণ্যটির দাম কমছে। সর্বশেষ শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের ব্যারেলপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৬০ ডলার ৮৬ সেন্টে।
ট্রাম্পের অবস্থানের বিষয়ে কোপেনহেগেনভিত্তিক সাক্সো ব্যাংকের কমোডিটি স্ট্র্যাটেজি বিভাগের প্রধান ওলে স্লথ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলনকারী ও রফতানিকারকের পাশাপাশি অন্যতম শীর্ষ ভোক্তাও। এ কারণে পণ্যটির দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যাওয়াকে আর্থিকভাবে লোকসান বিবেচনা করছেন ট্রাম্প। এদিকে বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৭৪ ডলারে উন্নীত হতে পারে।
২০১৮ সালে এ দর ৭২ ডলার ছিল বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। জ্বালানি তেলের গড় দাম ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৭০ ডলারের মধ্যে থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির সর্বশেষ ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, তেল উত্তোলনকারী দেশগুলো উৎপাদন কমিয়েছে। বিপরীতে ওইসিডির (উন্নত ৩৫ দেশের জোট) বাইরের দেশগুলোতে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে। বিশ্বব্যাংক মনে করে, চলতি বছর তেলের দৈনিক চাহিদা ও উৎপাদনে ঘাটতি তৈরি হবে, বিশেষ করে বছরের দ্বিতীয় অংশে। তবে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা মজুত কমবে। যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন সীমা বৃদ্ধির কারণে ২০১৯ সালে তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তোলন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জ্বালানি তেলের বাজার চাঙা রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে আসছে ওপেক প্লাস জোট। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে পণ্যটির উৎপাদন বাড়িয়ে চলেছে। এতে উত্তোলন নিয়ন্ত্রণের কার্যকারিতা যেমন কমছে, তেমন জ্বালানি তেলের বাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বাজারের অবস্থা বুঝে ২০১৭ সালের পর থেকে মিত্রদের নিয়ে ওপেক তেলের উত্তোলন হ্রাস-বৃদ্ধি করে আসছে। ওপেক প্লাস নামে পরিচিত এ জোটের নীতিনির্ধারক হিসেবে বিবেচনা করা হয় রাশিয়া ও সৌদি আরবকে। জোটটির এ তৎপরতার সুবাদে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬০ থেকে ৮৫ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছে। অথচ এর আগে জ্বালানি তেলের দাম ৩০ ডলারে নেমে গিয়েছিল।
ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়তির দিকে ছিল। আগামী দিনগুলোয় সরবরাহ কমে গিয়ে জ্বালানি পণ্যটির দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানায় সৌদি আরবের জ্বালানি মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশের পর হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৮০ ডলারে হওয়ার পরিস্থিতি দেখা দেয়।