জয়ের মা হতে পেরে আমি গর্বিত: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাপ্রেস,নিউইয়র্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের মতো সন্তানের মা হতে পেরে আমি গৌরবান্বিত। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পাবার পর
প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। ডিজিটাল বিশ্বের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তাঁকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে ইউএন প্লাজা হোটেলের মিলনায়তনে আবেগঘন এক পরিবেশে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ‘ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব গভর্নেন্স অ্যান্ড কম্পিটিটিভনেস ‘প্ল্যান ট্রিফিনিও‘গ্লোবাল ফ্যাশন ফর ডেভেলপমেন্ট’ এবং কানেটিকাট স্টেটের নিউ হেভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অব বিজনেস সম্মিলিতভাবে এই পুরস্কার প্রদান করে। বিপুল করতালির মধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছে এটি হস্তান্তর করেন প্রখ্যাত অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক রবার্ট ডেভি। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) গৃহীত হওয়ার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এ পুরস্কার জয়ের হাতে তুলে দেবার আগে সম্মানীত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জয়ের মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হায়েনাদের কাছে গৃহবন্দি ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। দু:সহ সে স্মৃতিচারণকালে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তেমনি সময়েই জয়ের জন্ম। জন্মের সময় আত্মীয়-স্বজন কাউকে পাশে পাইনি।
শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ‘ভারতের ব্যাঙ্গালোর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক করার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটনেও কম্পিউটার প্রকৌশল পড়ে। এরপর বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্ট থেকে লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করে জয়।’ শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ‘জয় হার্ভার্ডে স্নাতকোত্তর করার সময় আমাকে কেয়ারটেকার সরকার বন্দি করে রেখেছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জয়ের কাছে থেকেই আমি কম্প্যুটার চালনার শিক্ষা লাভ করেছি। এজন্যে সে আমার শিক্ষক। শুধু তাই নয়, তথ্য-প্রযুক্তির সামগ্রিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দরিদ্র মেহনতি মানুষ থেকে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, তার মন্ত্র আসছে জয়ের কাছে থেকে। এসব কারণে, আমি সব সময় নিজেকে ধন্য এক মা মনে করি। এমন সন্তানের মা হতে পেরে আমি গৌরবান্বিতবোধ করছি।
শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যে আয়োজকসহ অতিথিরাও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। শেখ হাসিনা আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠিকে এগিয়ে নিতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভূমিকার স্বীকৃতি প্রকারান্তরে বাংলাদেশের মানুষের অদম্য কর্মস্পৃহার প্রতিই সম্মান বলে মনে করছি। জয়কে এ পুরস্কারের জন্যে বেছে নিয়ে আয়োজকরা সঠিক কাজটিই করেছেন।
পুরস্কার গ্রহণের পর আবেগাপ্লুত জয় বলেন, ‘আমার মা তার কষ্টের কাহিনী বললেন, আমার জন্মের সময়ের অসহনীয় দুর্দশার দিনগুলোও ভুলেননি। আমি সত্যি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ মার কাছে। জয় বলেন, ‘এ পুরস্কার পেয়ে আমিও নিজেকে গৌরবান্বিত ও সম্মানীতবোধ করছি। তবে এ পুরস্কারের কৃতিত্ব একইসাথে বাংলাদেশ সরকারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদেরও। তারা সকলে একযোগে কাজ করছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেনসহ রাজনীতিক, অন্যান্য দেশের প্রতিনিধি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং বেসরকারি খাত ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। পুরস্কারের গ্রহণের পর উপস্থিত সকলে অভিনন্দন জানান জয়কে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ২০০৭ সালে ‘ইয়াং গ্লোবাল লিডার’ নির্বাচন করেছিল ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওই সম্মান পান তিনি।