দুদকের ফাঁদ মামলায় বাধা ‘চাকরি আইন’
ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেফতারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (সরকারের) অনুমোদন সংক্রান্ত আইনের কারণে ফাঁদ মামলা ঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছে না দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার বিকেলে দুদকের চতুর্দশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম একথা বলেন।
সম্প্রতি ‘সরকারি চাকরি আইন ২০১৮’ অনুমোদন দেয়া হয়। সেখানে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেফতারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (সরকারের) অনুমোদনের বিধান রাখা হয়েছে।
আইনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের ফৌজদারি অপরাধে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে। চার্জশিট গৃহীত হলে আর অনুমোদন নেয়া লাগবে না।’
এ আইন পাস হলে দুদক ফাঁদ পেতে কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করতে পারবে কি না— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি আরও বলেন, ‘চার্জশিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। চার্জশিট হওয়ার আগে গ্রেফতার করতে হলে অনুমতি নিতে হবে।’
দুদক কমিশনার এএফএম অমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ফাঁদ মামলা পরিচালনার মাধ্যমে আমরা অনেক দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার করেছি। অনেক কাজ করেছি। কিন্তু, সরকারি কর্মচারীদের আইনের কারণে সেটি পরিচালনা করতে পারছি না। আমাদের কাছে প্রতিনিয়ত অভিযোগ আসছে। কিন্তু, আইনের কারণে তাদের গ্রেফতার করতে পারছি না।’
তিনি বলেন, ‘আইনের কারণে আমাদের ফাঁদ মামলা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে আমি মনে করি। এ ব্যাপারে আমাদের বসে নতুন করে কর্মপন্থা বা কর্মপরিকল্পনা করা দরকার।’
দুদক কমিশনার বলেন, ‘আমাদের বেশকিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন: দুর্নীতি ব্যুরোতে থাকাকালীন কিছু মামলা ছিল, এখনো সেগুলো নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের অন্যান্য দফতরে অনলাইন সেবা থাকলেও আমাদের সবকিছু অনলাইন সিস্টেমে আসেনি। অভিযোগ অনলাইনে করার সুযোগ নেই, এগুলো করা দরকার।’
অবশ্য এ প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ তার বক্তব্য বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সরকারি আইন পাস হয়েছে ঠিকই কিন্তু, ইফেক্টিভ হয়নি। আর যদি আমাদের কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়, তখন আমরা বসে ঠিক করব, কিভাবে তার সমাধান করা যায়।’