নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা সংকট নিরসেন সেমিনার

203

শামীম আহমেদ,নিউইয়র্ক:রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আয়োজিত এক বহুজাতিক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য একটি দীর্ঘস্থায়ী সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে। এসংকট মোকাবেলায় সরকারকে দীর্ঘ মেয়াদি প্রস্তুতি নিতে হবে। রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মূখে পড়তে পারে।unnamed-file-2
গতকাল রোববার রোহিঙ্গা সংকট, সমস্যা ও সমাধানের উপর হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ফর বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। অবিলম্বে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বক্তারা।
এইচআরডিবি এর প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্যানালিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন ড. হাবীব সিদ্দিকী, বার্মিজ রোহিঙ্গা অ্যাসোশিয়েশন অফ নর্থ আমেরিকার পরিচালক রেজা উদ্দিন, বার্মা টাস্কফোর্স-এর পরিচালক অ্যাডাম ক্যারল, ডসন কলেজ-এর অধ্যাপক ড. আবিদ বাহার। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ড. নাকিবুর রহমান, সাউথ এশিয়ান সলিডারিটি ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইমরান আনসারী, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট সুরেষ বড়ুয়া, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট সোলায়মান ভুইয়া, আবদুল্লাহ আল আরিফ প্রমূখ।
এসময় ড. হাবীব সিদ্দিকী বলেন, রোহিঙ্গাদের বাঙালী বলার কোনো সুযোগ নেই । তার হাজার কাল ধরে রাখাইন অঞ্চলে বসবাস করে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যা চলছে এটি জেনোসাইড। এই জেনোসাইডের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে হবে।
রেজা উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় কফি আনান কমিশনের সুপারিশগুলো অতিশিগরই বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মন্দের ভাল হিসেবে একমিশনের রিপোর্ট মেনে নিয়েছি। শুধু তাই নয় রোহিঙ্গাদের রক্ষায় বিশ্বজনমত গড়ে তোলাবার পাশাপাশি তাদের প্রতি মানবিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
ড. আবিদ বাহার বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের কোনো প্রস্তুতি ছিল না। বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। অন্যথায় এ ইস্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে। তিনি আরো বলেন, বার্মার সমর শক্তির দিকে বাংলাদেশকে অবশ্যই নজর দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী শুধুমাত্র মুসলিম নয় তাদের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক আছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলা গনহত্যা ধর্মীয় কারণের পাশাপাশি জাতিগত কারণও নিহীত রয়েছে। এখনই এটিকে বৈশ্বিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে।
এডম ক্যারল বলেন, মিয়ানমারের গণহত্যার পিছনে উগ্র বৌদ্ধ গোষ্ঠীরা ইন্ধন যোগাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে এবিষয়ে মনোযোগী করতে আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করতে হবে।
ইমরান আনসারী বলেন, তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের শিগগিরই ফেরত না পাঠাতে পারলে এদের নিয়ে নানামূখী সংকট মোকাবেলা করতে হবে বাংলাদেশকে। এজন্য রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে।
কমিউনিটি এক্টিবিষ্ট সুড়েশ বড়ুয়া বলেন, গৌতম বুদ্ধের আদর্শের অনুসারীরা মানুষ হত্যায় মেতে উঠতে পারে না। রোহিঙ্গাদের হত্যার পিছনে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন গৌতম বুদ্ধের অনুসারী হয়ে থাকলে অবিলম্বে রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধ করতে হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.