পরিচালক আমজাদ হোসেনের ইন্তেকাল
খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচারক আমজাদ হোসেন আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ও ইন্না ইলাইহি রাজিউন…)। শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) থাইল্যান্ডের ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল খবরটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
গত নভেম্বরে অসুস্থ হয়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ইমপাল্স হাসপাতালে ভর্তি হলে বরেণ্য এই পরিচালকের অবস্থা আরো অবনতি হয়। এরপর সেখান থেকে ২৭ নভেম্বর ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতারে নেয়া হয়। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিল। আমজাদ হোসেনের জন্ম ১৯৪২ সালের ১৪ই আগস্ট, জামালপুরে। শৈশব থেকেই তার সাহিত্যচর্চা শুরু।
পঞ্চাশের দশকে ঢাকায় এসে সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত হন। প্রথমেই তিনি অভিনয়ে নিজেকে তুলে ধরেন মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে। এর পরপরই তিনি অভিনয় করেন মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে। এরপরের ইতিহাস একেবারেই অন্যরকম। সালাহ উদ্দিন আমজাদ হোসেনের লেখা নাটক ‘ধারাপাত’ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এতে আমজাদ হোসেন নায়ক হিসেবে অভিনয়ও করেন।
এরপর তিনি জহির রায়হানের ইউনিটে কাজ শুরু করেন। এভাবেই দীর্ঘদিন কাজ করতে করতে ১৯৬৭ সালে তিনি নিজেই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। নাম ‘জুলেখা’। এরপর নূরুল হক বাচ্চুর সঙ্গে যৌথভাবে নির্মাণ করেন ‘দুই ভাই’। তার পরিচালিত ব্যাপক দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমণি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’, ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ ইত্যাদি। গুণী এই পরিচালক ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক (১৯৯৩) ও স্বাধীনতা পুরস্কারেও ভূষিত করে।