প্রতি বিভাগে কিডনি ও ক্যানসার হাসপাতাল হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

520

দেশের সব বিভাগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে একটি করে বিশেষায়িত কিডনি হাসপাতাল ও একটি করে ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া দেশের প্রত্যেক জেলা হাসপাতালে ১০ শয্যার ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপন করা হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে নবনিযুক্ত স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক তার প্রথম কার্যদিবসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, দেশে অসংক্রামক রোগ বিশেষ করে কিডনি ও ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এসব রোগের চিকিৎসা খুবই ব্যায়বহুল। দেশের সর্বত্র এসব রোগের চিকিৎসাসেবা প্রদানের পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই। তাই জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ক্যানসার ও কিডনি ইউনিট স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে দেশের সব মানুষের জন্য সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এক্ষেত্রে শিগগিরই নিয়োগপ্রাপ্ত ১০ হাজার ডাক্তার এবং ৩ হাজার মিডওয়াইফের পদায়ন নিশ্চিত করা হবে। যাতে করে প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষরা গ্র্যাজুয়েট নিবন্ধিত চিকিৎসকদের সেবা পান। সারা দেশের সব হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসাসেবা বা ইমার্জেন্সি প্রটোকল নিশ্চিত করা হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, গত দশ বছরে ব্যাপক সফলতার মুখ দেখেছে স্বাস্থ্য সেক্টর। দেশে রোগী শয্যার সংখ্যা ২৭ হাজার থেকে বেড়ে ৪২ হাজার হয়েছে। একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হয়েছে চারটি। নতুন ২২টি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। চারটি নার্সিং ইন্সটিটিউট থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮টি। শিশুদের টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের জন্য এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে তার স্থান করে নিয়েছে।

প্রায় ৯১ দশমিক ৩ শতাংশ শিশুকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। পোলিও এবং ধনুষ্টংকারমুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্যখাতকে যুগোপযোগী করতে প্রণয়ন করা হয়েছে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিমালা-২০১১’।

দরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক। ৩১২টি উপজেলা হাসপাতালকে উন্নীত করা হয়েছে ৫০ শয্যায়। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার এবং জন্মহার হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বর্তমানে প্রতি মাসে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা পাচ্ছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেখানে কোনো কিছুর অভাব থাকে সেখানেই সুশাসন বাধাগ্রস্ত হয়। আমাদের দেশে স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসক নার্সসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার অভাব ছিল। তাই স্বাস্থ্য সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে দেশে অত্যাধুনিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

অপর এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে যে বাজেট বরাদ্দ হয় তা জিডিপির এক শতাংশের কম। আবার স্বাস্থ্য বাজেটের ৪০ ভাগই ব্যয় হয় ওষুধের পেছনে। তাই চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানুষের ‘আউট অব পকেট’ এখন ৬৭ শতাংশ। বাজেট বাড়াতে পারলে আউট অব পকেট কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে সবার সহযোগিতা কামনা করেন নতুন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.