প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল বিভাগে বিএনপির ৭ প্রার্থীর আবেদন
ঢাকা-১ আসনের প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা-২০ আসনের তমিজউদ্দিনসহ বিএনপির আরও ৭ প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা ফিরে পেতে আপিল বিভাগে আবেদন জানিয়েছেন। বাকিরা হচ্ছেন- জয়পুর হাট-১ আসনের মো: ফজলুর রহমান, ঝিনাইদহ-২ আসনের মো: আব্দুল মজিদ, বগুড়া-৭ আসনের মোর্শেদ মিল্টন, রাজশাহী-৬ আসনের আবু সাঈদ চাঁদ, জামালপুর-৪ আসনের ফরিদুল কবির তালুকদার।
এরা সবাই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে থেকে পদত্যাগ করার পরও তাদের পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় হাইকোর্ট তাদের প্রার্থীতা স্থগিত করে রুল জারি করেছেন। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে তাদের পক্ষে রোববার পৃথক পৃথক আবেদন আপিল বিভাগে আবেদন জানানো হয়েছে। আজ সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো: নুরুজ্জামানের আদালতে তাদের আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
তাদের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল জানিয়েছেন, সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বচারপতির আদালতে এসব আবেদনেরওপর শুনানি হতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন মামলার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে অন্য প্রার্থী রিট করতে পারে না। তারপরও যেহেতু হাইকোর্ট বিভাগ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর আবেদনে বিএনপির প্রার্থীতা স্থগিত করছে। এখন ইসির দায়িত্ব এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া। প্রয়োজনে ওইসব আসনে নির্বাচন স্থগিত করা, যতক্ষণ পর্যন্তনা মামলার রুলের নিষ্পত্তি না হয়।
পুন:তফসিলে সঙ্কটের সমাধান হতে পারে: সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান বলেন, নির্বাচনের ঠিক প্রাকালে বিএনপি যে সংকটে পড়েছে তার থেকে উত্তরণের উপয় আরপিওতেই রয়েছে। এ বিষয়ে আরপিও এর ৯১(ঙ)(২) ধারায় বলা হয়েছে বিধিমালার বিধান লঙ্ঘনের কারণে যদি কোনো সদস্য নির্বাচনে অযোগ্য হওয়ার সম্ভবনা থাকে, সেক্ষেত্রে তদন্ত পূর্বক আরপিও এর ১৭ ধারা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট আসনে নির্বাচনী কার্যক্রম বাতিল করে পুন:তফসিল ঘোষণা দেয়া যেতে পারে। অর্থাৎ আরপিও এর ৯১(ঙ) ধারা বিবেচনায় রেখে ইসি ১৭ ধারায় পুন তফসিল ঘোষণা করতে পারে। এতে বিএনপি প্রার্থীতা শূণ্য হওয়ার এই সংঙ্কট থেকে উত্তরণ পেতে পারে।
গত ২০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ছয় জনসহ আটজনের প্রার্থীতা স্থগিত করেন হাইকোর্ট। বিএনপির ছয় প্রার্থী হলেন- জামালপুর-৪ আসনের মো. ফরিদুল কবীর তালকুদার শামীম, জয়পুরহাট-১ আসনের ফজলুর রহমান, ঝিনাইদহ-২ আসনের অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ, রাজশাহী-৬ আসনের মো. আবু সাঈদ চাঁন, বগুড়া-৩ আসনে আবদুল মুহিত তালুকদার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের মুসলিম উদ্দিন।
এছাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নেওয়া ময়মনসিংহ-৮ আসনে মাহমুদ হোসেন সমুন ও রংপুর-১ আসনে মো. আসাদুজ্জামান বাবুলের প্রার্থীতাও স্থগিত হয় হাইকোর্টে। তবে বগুড়া-৩ আসনে প্রার্থীতা শুন্য হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে বিএনপি। এ আসনে আবদুল মুহিত তালুকদারের প্রার্থীতা বাতিল হওয়ার পর বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী মাছুদা মোমিনকে ধানের শীর্ষ প্রতীক বরাদ্দের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
সব মিলে গত কয়েকদিনে ১৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী শুন্য হয় ।
২০ ডিসেম্বর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের করা পৃথক পৃথক রিটের শুনানি নিয়ে প্রার্থীতা স্থগিতের আদেশ দেন। এর আগে নির্বাচন কমিশন তাদের প্রার্থিতা বৈধ করে যে আদেশ দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে ওই সকল আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের করা পৃথক পৃথক রিট আবেদনের শুনানি গ্রহণ করে ইসির আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এছাড়া তাদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কেন বাতিল ঘোষনা করা হবে না জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করা হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।