ফেস্টুনে এমপির গলাকাটায় ছাত্রকে বেধড়ক পেটালেন শিক্ষকরা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে সাবেক এমপির ফেস্টুনে থাকা ছবির গলাকাটায় এক ছাত্রকে বেঁধে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে সেখানকার একটি স্কুলের প্রধানসহ কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
উপজেলার বড়গাছী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই ছাত্রের নাম রুহান। সে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাকে ভোলাহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। রুহান ছোট জামবাড়িয়া গ্রামের বিশারত আলীর ছেলে।
আহত শিক্ষার্থী রুহানের পরিবারের অভিযোগ, গত শনিবার স্কুলের সরকারিকরণ উৎসব উপলক্ষে সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাসের ছবির ফেস্টুন স্কুলের বিভিন্ন জায়গাতে টাঙানো হয়। রাতে কে বা কারা সাবেক এই এমপির ফেস্টুনে থাকা ছবির গলা কেটে দেয়।
মঙ্গলবার সন্দেহভাজন হিসেবে রুহানকে ক্লাস থেকে ধরে নিয়ে স্কুলের ল্যাব কক্ষে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, ক্রীড়া শিক্ষক মাসুদ, সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর, মাহবুব ও অফিস সহকারী জনিসহ অন্য শিক্ষকরা উপস্থিত থেকে দুই হাত পেছনে বাঁধেন। পরে ক্রীড়া শিক্ষক মাসুদ লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে লাঠি ভেঙে গেলে আরও একটি লাঠি নিয়ে এসে পেটানো হয় রুহানকে।
এ সময় শিক্ষার্থী রুহানকে জোরপূর্বক অপরাধ স্বীকারের জন্য চাপ দেয়া হয়। একপর্যায়ে সে স্বীকার না করায় তাকে ব্যাড টিসি ও তার পরিবারকে জেলহাজতে পাঠিয়ে জীবন নষ্ট করার হুমকি প্রদান করেন উপস্থিত শিক্ষকরা।
পরে শিক্ষার্থী রুহানের অবস্থা গুরুতর হলে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসককে ডেকে স্কুল ল্যাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থী রুহানের শারীরিক অবস্থার অবনিত হলে তার স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে ভোলাহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে জানতে ক্রীড়া শিক্ষক মাসুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
রুহানের শারীরিক অবস্থা জানতে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার তাহমিদুল ইসলাম তমালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রুহানের শরীরে লাঠি দিয়ে মারার একাধিক লিলা-ফোলা দেখা গেছে। সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে চিকিৎসা করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এরপর সাংবাদিকদের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর তিনি মোবাইল ফোনে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও দায়ী শিক্ষকরা তার অফিসে আসার নির্দেশ দেন।