বউ পেটানো জাপা নেতাকে প্রার্থী না করার দাবি

454

যে ব্যক্তি স্ত্রী-সন্তানকে মারধর করে, খোঁজ-খবর রাখে না। সে কীভাবে এলাকার মানুষের সেবা করবে— এমন প্রশ্ন স্বয়ং স্ত্রীর।

শুধু তাই নয়, বউ পেটানো জামালপুর-২ আসনের জাপা নেতা মোস্তাফা আল মাহমুদকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না দিতে সরকার ও তার দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্ত্রী নুজহাতুন নেছা। তিনি সন্তানদের অধিকার আদায়ের ব্যবস্থা করার জন্যও আবেদন জানান।

মোস্তাফা আল মাহমুদ জামালপুর-২ আসন ইসলামপুরের জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি জেলার ইসলামপুর জাপারও আহ্বায়ক।

মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্রাইম রিপোর্টার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে নুজহাতুন নেছা এসব দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘১৯৯৯ সালের ৬ আগস্ট পারিবারিকভাবে মোস্তফা আল মাহমুদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ২০০৩ সালে ছেলে-মেয়েসহ আমাকে রেখে হঠাৎ চীনে চলে যায়। পরে শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর ২০০৪ সালে যখন শুনলাম আমার স্বামী চীনে আরেকটি বিয়ে করতে যাচ্ছেন, তখন দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে তার কাছে চলে যাই।’

‘চীনে যাওয়ার পরে স্বামীর অপকর্মের প্রতিবাদ করায় প্রতিনিয়ত মারধর করতো। পরে তিনি দেশে চলে আসলেও, আমি সন্তানদের নিয়ে চীনে থেকে যায়। এক পর্যায়ে তিনি আমাদের মালেয়েশিয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পরেও মারধর অব্যাহত রাখে। চীনের মতো সেখানে একইভাবে ফেলে রেখে চলে আসে। বাধ্য হয়ে বছরখানেক পরে আমিও দেশে চলে আসি।’

নুজহাতুন নেছা বলেন, ‘দেশে এসে তার বাড়িতে উঠলে সেখানেও নির্যাতন করা হতো। পরে বাধ্য হয়ে সন্তানদের নিয়ে উত্তরাতে বসবাস শুরু করি। স্বামী কাছ থেকে ভরণ-পোষণ পেতে প্রতিনিয়ত আইনের আশ্রয় নিতে হয়। না হলে সে আমাদের টাকা বন্ধ করে দেয়।’

স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী তার চাচাতো বোন শাহিনার সঙ্গে পরকীয়া করছে।’

নুজহাতুন নেছার মেয়ে বুশরা ‘এ’ লেভেলে পড়াশুনা করছে। ছেলে ‘ও’ লেভেলের ছাত্র। সন্তানদের নিয়ে বিপদে পড়ে অধিকার আদায়ে সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানান।

তিনি প্রশ্ন রাখেন, যে মানুষ নিজের পরিবারের প্রতি উদাসীন, লম্পট। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে মানুষ তার থেকে কী পাবে? তাই তাকে মনোনয়ন না দেয়ার দাবি জানান নুজহাতুন নেছা।

স্ত্রীর অভিযোগের বিষয়ে জাপা নেতা মোস্তাফা আল মাহমুদ পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, সব মিথ্যা। আমার স্ত্রীর একটু মানুসিক সমস্যা রয়েছে, কিছু একটা হলেই সে এমন উল্টা-পাল্টা করে।’

তিনি দাবি করেন, ‘স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক। তাদের সকল ভরণ-পোষণ নিয়মিত দিচ্ছি। মূলত আমার স্ত্রী চাচ্ছিল না আমি নির্বাচন করি, এজন্যই পার্টি অফিসে গিয়েও একই অভিযোগ করেছে।’

চাচাতো বোনের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের বিষয়ে মোস্তাফা আল মাহমুদ বলেন, ‘শাহিনা আমার আপন চাচাতো বোন। তার বাচ্চা-কাচ্চা হয়ে গেছে। এটি একেবারেই ডাহা মিথ্যা অভিযোগ।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.