নতুন করে কোনো সংকট তৈরি না হলে এটাই চূড়ান্ত দিনক্ষণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মর্যাদার আসনে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশও।
উৎক্ষপণের দিনটি হবে বাংলাদেশের জন্য অন্যরকম একটি দিন। আগামী ১৫ বছরের জন্য মহাকাশের স্থায়ী বাসিন্দা হতে রওনা হবে ‘বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট’।
২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষপণে ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। এটার জন্য ২ হাজার ৯৬৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা খরচ ধরা হয়। এর মধ্যে সরকারি অর্থ ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর বিদেশি অর্থায়ন ১ হাজার ৬৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। যদিও শেষ পর্যন্ত স্যাটেলাইট উড়াতে সর্বমোট খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষপণে অর্থায়নের জন্য হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) সঙ্গে প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি করেছে বিটিআরসি। বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘১৫৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরো যা বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ১৪০০ কোটি টাকার এই ঋণের ইন্টারেস্ট রেট এক দশমিক ৫১ শতাংশ। ঋণ শোধের সময় ১২ বছর এবং ২০ কিস্তিতে এ ঋণ শোধ করতে হবে। ’
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নির্মিত হয়েছে ফ্রান্সের থ্যালেস এলিনিয়া স্পেস ফ্যাসিলিটিতে। নির্মাণ, পরীক্ষা, পর্যালোচনা ও হস্তান্তর শেষে বিশেষ কার্গো বিমানে সেটি কেপ ক্যানাভেরালের লঞ্চ সাইটে পাঠানো হয়। এর মধ্যেই তিন দশমিক ৭ টন ওজনের স্যাটেলাইটটি উৎক্ষপণে শুরু হয়ে গেছে ‘লঞ্চ ক্যাম্পেইন‘। গত ৩০ মার্চ স্যাটেলাইটটি ফ্লোরিডার লঞ্চিং প্যাডে পৌঁছে। এর আগে ২০১৫ সালের নভেম্বরে থ্যালেস এলিনিয়া স্পেসের সঙ্গে ডিজাইন ও নির্মাণের চুক্তি করে সরকার। এই চুক্তিটি ছিল ১ হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার।
গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষপণের কথা থাকলেও হারিকেন আরমায় ফ্লোরিডায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় কেপ ক্যানাভেরাল থেকে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ বন্ধ হয়ে গেলে বিভিন্ন দেশের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ পিছিয়ে যায়, বাংলাদেশও পড়ে সূচির জটে। এখন সূচির জট না থাকলেও আবহাওয়া একটা বড় কারণ। ১০ মে আবহাওয়া যদি কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি না করে তাহলে ওই দিনই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।