বছরে ১৭ লাখ মানুষ ইস্ট লন্ডন মসজিদ ভিজিট করে

420

প্রায় শতাধিক ভলন্টিয়ারের স্বতঃষ্ফুর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো ইস্ট লন্ডন মসজিদের বার্ষিক ‘ভলন্টিয়ার এপ্রিসিয়েশন সিরিমনি’। ২১ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় লন্ডন মুসলিম সেন্টারের প্রথমতলায় আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে মসজিদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ভলন্টিয়ারগণই হচ্ছেন মসজিদের প্রাণ।

eastlondon

এই মসজিদ ইউরোপের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভুমিকা পালন করছেন আমাদের সুশৃংখল ভলন্টিয়ারগণ। এ জন্য তিনি ভলান্টিয়ারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ইস্ট লন্ডন মসজিদ ও লন্ডন মুসলিম সেন্টারের ডাইরেক্টর দেলওয়ার খান এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মসজিদের ইমাম ও খতীব শায়খ আব্দুল কাইয়ূম এবং ভাইস চেয়ারম্যান সিদ্দিক চৌধুরী। শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মোঃ আব্দুর রকিব।

মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ভলন্টিয়ারদেরকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, আপনারা হচ্ছেন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে সম্মানিত মানুষ। কারণ আপনারা আল্লাহ তায়ালার ঘর রক্ষণাবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের যৌবন শেষ হওয়ার আগে আগে জীবনের সময়কে কাজে লাগাও। আপনাদের অনেকেই সেই যৌবনের শুরুতে মসজিদের সেবায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছিলেন আর প্রবীণ বয়সেও মসজিদের খেদমতে নিয়োজিত আছেন।

তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আল্লাহ তায়ালা তাঁর ঘর রক্ষণাবেক্ষনের জন্য আমাদেরকে মনোনীত করেছেন। এটা আমাদের সুভাগ্য। আমরা আশাবাদী, তিনি তাঁর ঘরের খাদেমদের এই প্রচেষ্টা কবুল করে পরকালে মাফ করে দেবেন।

ইমাম আব্দুল কাইয়ূম বলেন, রাসুলকে (সাঃ) যেসব ভালো আমল দেখানো হয়েছে তার মধ্যে মসজিদের আমল হলো সবচেয়ে উত্তম। তিনি বলেন, আমরা যারা মসজিদের সাথে বিভিন্নভাবে সম্পৃক্ত আছি তারা কিন্তু মসজিদের মালিক নয়, মসজিদের একেকজন খাদিম। মানুষ আমাদের প্রতি রূঢ় হতে পারে। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা মানুষের প্রতি কখনো রূঢ় হবোনা। আমরা সবসময় তাঁদের সঙ্গে বিনয়ের সাথে কথা বলবো, তাঁদেরকে বুঝাবো। আমরা চেয়ার নিয়ে এমনভাবে বসবনা যে মানুষের কাছে দৃশ্যমান হয়, আমি কিছু একটা। তিনি বলেন, আমরা যেমন নিজের ঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সময় দিই তেমনই যেনো নিজের মসজিদ রক্ষনাবেক্ষনেও সময় দিতে পারি।

দেলওয়ার খান প্রজেক্টারের মাধ্যমে মসজিদের বিভিন্ন কার্যক্রম একনজরে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মসজিদের রেকর্ড অনুয়ায়ী প্রতি শুক্রবার প্রায় ৫ হাজার মানুষ জুমার নামাজ আদায় করে থাকেন। তবে সপ্তাহে বিভিন্ন সেবা গ্রহণের জন্য ৩২ হাজারেরও বেশি মানুষের পদচারণা ঘটে। সারা বছরে প্রায় ১৭ লাখ মানুষ মসজিদ ভিজিট করে থাকেন। তিনি আরো জানান, মসজিদের ধর্মীয় কর্মকান্ড তথা নামাজ, ওয়াজ, তাফসীর-তালিম, সেমিনার ইত্যাদি বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে বছরে প্রায় ৩২ লাখ মানুষ শুনে থাকেন। মসজিদ পরিচালিত ইভনিং মাদ্রাসা, প্রাইমারী স্কুল ও লন্ডন ইস্ট একাডেমি সেকেন্ডারি স্কুলের ফলাফলও দিনদিন ভালো হচ্ছে।

এছাড়াও দৈনিক ১৮৭ জন মানুষ বিভিন্নভাবে টেলিফোনিক সেবা গ্রহণ করে থাকেন। বিভিন্ন স্কুল কলেজ থেকে শিক্ষার্থীরা মসজিদ ভিজিট করতে আসেন। বছরে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী ভিজিট করে থাকেন। তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে আমরা মুলধারার মিডিয়ায় মসজিদ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।

এখন বিবিসিসহ অন্যান্য প্রভাবশালী বৃটিশ মিডিয়া নিয়মিত মসজিদের বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রশংসামুলক রিপোর্ট প্রকাশ ও প্রচার করে থাকে। প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখেন মসজিদের ভলন্টিয়ার আব্দুল মুমিন ইয়াহইয়া, আখনু হোসাইন মসজিদের বিভিন্ন সার্ভিস উন্নত করার পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। পরে নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.