বরফ-তুষারের সবচেয়ে বড় প্রাসাদ
সাইবেরিয়ার খুব কাছেই চীনের উত্তর-পূর্বাংশে হেইলুংচিয়াং প্রদেশের অন্যতম রাজধানী শহর হারবিন। গ্রীষ্মের সময় হারবিনের গড় তাপমাত্রা সাধারণত ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর শীতকালে মাইনাস ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কখনও কখনও এটি বছরের সর্বনিু তাপমাত্রায় নেমে হয়ে যায় মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ শহরে প্রতি বছরের মতো এবারও উদযাপিত হচ্ছে বরফ-তুষার উৎসব। বরফ ও তুষারের তৈরি বিভিন্ন ভাস্কর্য, অট্টালিকা, প্রাসাদসহ নানা বিচিত্র পুতুল বানানো হয়েছে এই উৎসবে।
বরফ কেটে মসৃণ ও মজবুত করে বানানো হয়েছে রাজপ্রাসাদ ও থিমপার্ক বিনোদন স্থানটি। এগুলো বানানোর জন্য সোংহুয়া নদী থেকে প্রতিবছরই বরফ কেটে আনা হয়।
প্রাসাদ ছাড়াও দর্শনার্থীদের জন্য ৩২০ মিটার পিচ্ছিল আঁকাবাঁকা ৬টি পথ বানানো হয়েছে। আরও রয়েছে ২ হাজার ১৯টি তুষার দিয়ে তৈরি বানানো পুতুল। এগুলো দেখতে সবার কাছে বেশ আকর্ষণীয় এমনটাই স্থানীয় লোকদের ধারণা। এরই মধ্যে চীনের এই উৎসবটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বরফ-তুষার উৎসব হিসেবে বেশ পরিচিত লাভ করেছে।
৬ লাখ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে এই বরফ শহর। এখানে মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বর্ণিল নিয়নবাতির আলোকসজ্জায় ২ হাজার ভাস্কর্য স্থান পেয়েছে। মাত্র ১৫ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে তৈরি করা হয়েছে এটি। এই বরফ শহরে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক ঘুরতে আসেন বরফের তৈরি চীনা শিল্পকর্ম দেখতে।
এবারের হিম-বর্ণিল উৎসবে অস্থায়ী বিনোদন কেন্দ্রটিতে ১ লাখ ১১ হাজার ঘনমিটার তুষার এবং ১ লাখ ২০ হাজার ঘনমিটার বরফ ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ৪ হাজার ৫০০ বর্গ ঘনমিটার তুষার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি বুদ্ধমূর্তি।
প্রতিবছরই ৫ জানুয়ারি উৎসবটি শুরু হয় এবং শেষ হয় ঠিক পরের মাসের একই দিনে। মাসব্যাপী চলা এ উৎসবের আকর্ষণীয় কিছু ভাস্কর্য দেখার জন্য অনেক সময় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগেই পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
১৯৮৫ সাল থেকে চীনে এই বরফ-তুষার উৎসব আয়োজিত হয়ে আসছে। এবারের ৩৫তম উৎসবে বিভিন্ন দেশের দর্শনার্থীরা ১২টি দেশের তৈরি ভাস্কর্য দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। এই মুহূর্তে যারা বাংলাদেশ থেকে চীন সফরে যাচ্ছেন তারা হেইলুংচিয়াং প্রদেশের হারবিন শহর ঘুরে আসতে পারেন। বিনোদনমূলক স্থানটিতে প্রবেশের জন্য ৪৮ ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি ৪ হাজার টাকা ব্যয় হবে।