বর্ণাঢ্য আয়োজনে ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী “প্রিয়বাংলা পথমেলা-২০১৬”
এ্যান্থনী পিউস গমেজ,উডব্রীজ, ভার্জিনিয়াঃ গত ১৮ই সেপ্টেম্বর,২০১৬ ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনস্থ ওয়ালটার রীড ড্রাইভে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ওয়াশিংটনের অন্যতম বৃহৎ ও জনপ্রিয় সংগঠন, “প্রিয়বাংলা’র” আরেকটি সফল “পথমেলা”। পঞ্চমবারের মত অনুষ্ঠিত হলো প্রিয়বাংলার এই অনন্য পথমেলা, যা ছিল ওয়াশিংটন প্রবাসী বাঙালিদের ভাললাগার স্পর্শে সাফল্যের আলোয় উদ্ভাসিত। এ ছিল প্রবাসের মাটিতে দেশের স্মৃতিময় ছোঁয়ায় আবার যেন দেশের মাটিতে ফিরে যাওয়া, নতুন করে বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলার অনুভব ফিরে পাওয়া… হারিয়ে যাওয়া ফেলে আসা মেলার রঙ্গীন উৎসবময়তায়।
প্রিয়বাংলার এবারের পথমেলার এই বিশাল আয়োজন ছিল একটু ভিন্ন আঙ্গিকের এবং আমাদের দেশীয় আমেজের পাশাপাশি এই আয়োজনে বরাবরের মত এবারও যোগ হয়েছে এখানকার বিভিন্ন মালটিকালচারাল সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহভাগিতা ও সাংস্কৃতিক ছোঁয়া। আর এই বহুমাত্রিক সংস্কৃতির সংমিশ্রনে “প্রিয়বাংলা”র এই “পথমেলা” হয়ে উঠে দেশীয় আমেজের মাঝেও পাশ্চাত্যের ছোঁয়ায় একটি ভিন্ন প্রকৃতির মেলা, যেখানে সর্বজনীন অনুভূতির আবেশে ছুঁয়ে গেছে সবার হ্রদয়, হয়ে উঠে অনন্য! এ যেন পূর্বের সাথে পশ্চিমের মিলন মেলা, স্বদেশী আবেশে থেকেও সবার সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়ার পরম অনুভূতি- ক্ষুদ্রতার বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে এসে বৃহৎ-এর সাথে মিলন গ্রন্থিতে গেঁথে যাবার পরম আনন্দ।
ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকায় বহুল জনপ্রিয় প্রিয়াবাংলার এই পথমেলা। এই পথমেলার মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক সহভাগিতা ছাড়াও অত্র এলাকায় বসবাসরত অন্যান্য কম্যুনিটির সাথে এক মেলবন্ধন সৃষ্টি হচ্ছে এবং মূলধারার সাথে আমাদের সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততা বাড়ছে, যা আমাদের নতুন প্রজন্মের মূলধারায় মিশে যাবার জন্য দ্বার উন্মোচন করে দিচ্ছে। এছাড়াও এই পথমেলা মূলতঃ আমাদের পুরাতন প্রজন্মের সাথে নতুন প্রজন্মের এক অনন্য সেতুবন্ধন গড়ে তুলছে, প্রবাসের আঙ্গিনায় দেশের আবহ সৃষ্টি করে নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সহভাগিতা করার এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করছে।
দেশের বাড়ীতে গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাচীন কাল থেকে যে মেলার আয়োজন করা হতো , তা ছিল সেসময়ের প্রেক্ষাপটে মানুষের সরল আনন্দের উৎস হিসেবে- সে সময় মানুষের চিত্ত বিনোদনের আজকের মত এতসব বাহারী আয়োজন ও সুযোগ ছিল না। ক্রমান্নয়ে তা গ্রামীন জীবনের বৃত্ত পেড়িয়ে স্থান করে নিয়েছে শহরের আঙ্গিনায়। আর শুধু তাই নয়, অভিভাসন প্রক্রিয়ায় বা জিবীকার তাগিদে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পরা বাঙ্গালীদের কাছেও এর আবেদন ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে। তাইতো নিজস্ব সাহিত্য-সংস্কৃতি,কৃষ্টি এবং দেশের মায়ায় মানুষ আবাগাপ্লু্ত হয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্যের আবেগময় স্পর্শে। আর এই আবেগে, দেশজ সাংকৃতিক ঐতিহ্যের ভালবাসার টানে মানুষ প্রবাসের মাটিতেও আয়োজন করে যাচ্ছে- সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৈশাখী মেলা, পিঠা উৎসব, নাটক, নৃত্যানুষ্ঠান, সঙ্গীতসন্ধ্যাসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান। আর প্রিয়বাংলার এই পথমেলার আয়োজনও ছিল শুধুই দেশ এবং দেশের সংস্কৃতির প্রতি ভালবাসার তাগিদে প্রবাসের মাটিতে তা তুলে ধরা।
এবারের পথমেলার দিন গত বছরের মত মুসলধারে বৃষ্টি ছিল না, ছিল ঝক ঝকে রৌদ্র ঝলোমল দিন… উপড়ে নীলাকাশে সাদা সাদা মেঘের পুঞ্জ আর পথমেলায় সবার মুখে আনন্দের হাসি। প্রিয়বাংলার কর্মীবাহিনী পূর্ণ উদ্যমে গভীর প্রত্যয় নিয়ে সম্পন্ন করেছিল সমস্ত প্রস্তুতি। অপরাহ্নে রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়ায় দলে দলে লোক এসে ভরে গেল মেলা প্রাঙ্গণ, চারিদিকে শুরু হয়ে গেল হাসি-আনন্দ, আলাপ-চারিতার কলরব… অল্প সময়ের মধ্যেই আনন্দের মিলনমেলায় পরিণত হলো প্রিয়াবাংলার আয়োজিত এবারের পথমেলা। দুই দিকে সাড়ি সাড়ি সাজানো দোকানগুলোতে ধীরে ধীরে মানুষের ভিড় বাড়তে লাগলো – দেশীয় কাপড়ের দোকান, গহনার দোকান, সুস্বাদু খাবারের দোকান ইত্যাদিতে। এছাড়া প্রিয়বাংলার সেবামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ছিল বিভিন্ন বুথ- রিয়েল এস্টেটের বুথ, ফাইনান্সিয়াল প্ল্যানিং-এর বুথ, বীনা মূল্যে লিগ্যাল এডভাইসের বুথ, প্রিয়বাংলার বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য সেবা পরামর্শের বুথ, পেশাগত প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত পরামর্শ বুথ এবং এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোটার রেজিষ্ট্রেশন বুথ।
এরপর মঞ্চ থেকে ভেসে এলো মাইক্রোফোনের জোড়ালো গম গমে আওয়াজ… নিউ ইয়র্ক থেকে আগত সবার পরিচিত, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জনপ্রিয় মুখ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জনাব বুলবুল আহমেদ তার চমৎকার, সাবলীল অথচ দরাজ কন্ঠে প্রিয়বাংলার পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুভারম্ভ করলেন প্রিয়বাংলার পথমেলা-২০১৬। পরিবেশিত পুরো অনুষ্ঠানটি জনাব বুলবুল আহমেদের সঞ্চালনায় পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা, ভিন্ন ব্যপ্তি, ভিন্ন ব্যঞ্জনা। অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এবং চমৎকারভাবে তিনি অনুষ্ঠানজুড়ে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করে সবাইকে মুগ্ধ করেছেন।
যেসব অনুষ্ঠানমালা দিয়ে সারাদিনব্যপী “প্রিয়বাংলা পথমেলা”র আয়োজন করা হয়েছিল, তা শুরু হয়ে গেল একের পর এক পরিবেশনার মাধ্যমে। প্রথমেই শুরু হয় “মাল্টিকালচারাল র্যালী”। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, এই প্রথমবারের মত প্রিয়বাংলা আয়োজন করেছিল “মাল্টিকালচারাল র্যালী” বা “আনন্দ শোভাযাত্রা”। চমৎকার একটি আয়োজন যুক্ত হয়েছে প্রিয়বাংলার পথমেলায়। র্যালী দেখে মনে হয়েছে আমেরিকার টগবগে তরুন প্রজন্ম যেন আজ বাঁধনহারা হয়ে মিশে গেছে সবার সাথে। আনন্দ শোভাযাত্রাটিতে অংশগ্রহনকারীরা উচ্ছল মিউজিকের তালে তালে মেলা প্রাঙ্গণের কাছাকাছি চারটি রাস্তা প্রদক্ষিন করে এবং চারিদিকের উৎসুক দর্শকবৃন্দ, এমনকি চারপাশের বাড়ীগুলো থেকে বেড়িয়ে এসে তারা অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে অভিভূত হয় এমন চমৎকার র্যালীর আয়োজন দেখে এবং করতালিতে আনন্দ উচ্ছাসে অভিনন্দ জানায় র্যালীর অংশগ্রহনকারীদের। র্যালীর সমন্বয় এবং ব্যবস্থাপনায় ছিলেন- জনাব তৌফিক হাসান, মাহফুজুর রহমান, দস্তগীর জাহাঙ্গীর, রাহাত ই-আফজা এবং র্যালীর সঙ্গীত সমন্বয়ে ছিলেন লুবাবা রহমান চুড়ী ।
প্রতি বছরের এবারের পথমেলায় যেসব মাল্টিকালচারাল গ্রুপগুলো সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করে, তারা হলঃ চাইনিজ ঝং শেং ড্যান্স গ্রুপ, ওল্ড ডমিনিয়ন ক্লগার্স, মেক্সিক্যান ডান্স গ্রুপ, বলিভিয়ান ডান্স গ্রুপ, আর্জেন্টিনা ড্যান্স গ্রুপ এবং বাংলাদেশ ড্যান্স গ্রুপ। নিজেদের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের বাইরে অন্যদের এইসব ভিন্নধর্মী পরিবেশনা সবাই প্রাণ ভরে উপভোগ করে।
এছাড়া নাচ পরিবেশন করে সবাইকে মুগ্ধ করে সিনথিয়া গমেজ, শ্রূতি গমেজ এবং রীয়া কোড়ায়া। নৃত্য পরিকল্পনা ও পরিচালনায় সিনথিয়া গমেজ। এরপর প্রিয়বাংলার পক্ষ থেকে নৃ্ত্য শিল্পী মেহদির পরিচালনায় দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে সবাইকে চমৎকৃত করে তানজিনা রহমান, জুয়েল, নাসির ও নিয়ামত উল্লাহ এবং দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে- লুবাবা রহমান চুড়ী, সিয়াম বিন নাহিদ, নিকিতা ইসলাম এবং সাদিয়া সুলতানা। কোরিওগ্রাফিতে ছিলেন চুড়ী রহমান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর, পলিটিক্যাল, জনাব নুরুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জগতের দুই স্বনামধন্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জগতের কিংবদন্তি- জনাব হাসান ইমাম এবং তার স্ত্রী লায়লা হাসান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৩০তম ফোবানার সাবেক সভাপতি জনাব মোহাম্মদ আলমগীর এবং সদস্য সচীব জনাব নুরুল আমিন নুরু। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বেশকিছু গন্যমান্য ব্যক্তিত্ব।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার এবং মূলধারার যেসব সম্মানিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন, তারা হলেন- সিনেটর মার্ক ওয়ার্নারের পক্ষ থেকে আউটরীচ প্রতিনিধি এ্যান প্যাম, আর্লিংটন কাউন্টি বোর্ড মেম্বার কেটি ক্রিস্টল, আর্লিংটন কাউন্টি স্পেশাল ইভেন্ট ম্যানাজার ল্যাস্লি পেলজার, আর্লিংটন কাউন্টি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের এসিপিডি লেঃ কেন ডেনিস, আর্লিংটন কাউন্টি আর্ট কমিশনের চেয়ারম্যান জেনেট কোপানহ্যাভার, আর্লিংটন কাউন্টি আর্ট কমিশনের সদস্য মার্শা স্যামুয়েল, তৃতীয় ডিস্ট্রিক্ট কমান্ডার ক্যাপ্টেন এ্যড্রিয়েন কুইগলি এবং আর্লিংটন কাউন্টি পুলিশ প্রধানের অফিস থেকে তাদের প্রতিনিধি। এসব কর্মকর্তাবৃন্দ তাদের বক্ত্যবে প্রিয়বাংলার এই আয়োজনের ভূয়সী প্রশংশা করেন এবং ভবিষ্যতেও তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
এরপর প্রিয়বাংলার পক্ষ থেকে সামাজিক কাজে তাদের অবদান এবং সহযোগিতার স্বীকৃতি এবং কৃতজ্ঞতা স্বরুপ স্থানীয় সরকারী প্রতিনিধিবৃন্দ, সামাজিক স্বেচ্ছাসেবক, সামাজিক নেতৃত্ব দানকারী সামাজিক কর্মীবৃন্দ, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং প্রিয়বাংলার স্বহৃদয় স্পনসরদের হাতে ক্রেষ্ট তুলে দেয়া হয়।
অতঃপর শুরু হয় মূল সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা… এই পর্বে গান পরিবেশণ করেন স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ। যারা গান গেয়ে সবার মন ভরিয়ে তোলেন, তারা হলেনঃ- জিনাত, শাহ ফিরোজ, পুলি বালা এবং ডঃ রাকেশ মাথুর। শ্রোতাদর্শকরা তাদের পরিবেশনা প্রানভরে উপভোগ করেন।
এরপর বাংলাদেশ থেকে আগত দেশের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী মুক্তা সারোয়ার সঙ্গীত পরিবেশনা। মুক্তা সারোয়ার বাংলাদেশের মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী এবং তার পরিবেশিত সঙ্গীতের মূর্ছনায়, আনন্দ-উচ্ছাসে উদ্বেলিত হয়ে গিয়েছিল উপস্থিত শ্রোতাদর্শকগন।
এরপর মঞ্চে এসে সবাইকে গানের ছন্দে মাতিয়ে তোলেন সবার প্রতিক্ষীত, অনুষ্ঠানের মূল শিল্পী- বাংলাদেশের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন। আনন্দে অভিভূত হয়ে গিয়েছিল শ্রোত-দর্শকবৃন্দ এবং প্রানখোলা করতালিতে শ্রোতাদর্শক তাকে বার বার অভিনন্দন জানায়। ভীষন প্রানবন্ত গানের ছন্দে ও প্রানের ছোঁয়ায় জেগে উঠেছিল সবাই বেবী নাজনীনের পরিবেশনায়।
অবশেষে সময়ের সীমারেখায় থেকে সমাপ্ত হলো প্রিয়বাংলার “পথমেলা-২০১৬”। অতঃপর মিঃ প্রিয়লাল কর্মকার এবং মিঃ জীবক বড়ুয়া প্রিয়বাংলার পক্ষ থেকে সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সবার সার্বিক সহযোগিতার জন্য এবং এবারের পথমেলাকে স্বার্থক করার জন্য ।
প্রিয়বাংলা পথমেলা-২০১৬-এর প্রধান স্পনসর (Grand Sponsors) যারা ছিলেন, তারা হলেন: মিঃ আবু হানিফ- People N Tech, মিঃ বেলায়েত হুসেইন- Dhaka Home, ডঃ কালিপদ চৌধুর- KPC Group, মিঃ সাইফুল সিদ্দিকী- 1 Stop Media & Entertainment, মিঃ শাহ ফিরোজ- Mass Mutual.
প্রধান স্পনসরগন ছাড়াও অন্যান্য স্পনসরগন ছিলেন: মিঃ প্যাট্রিক গমেজ -Rise and Shine Construction Co.,মিঃ আবু হক- American Nationwide Mortgage Co., মিঃ বোরহান উদ্দিন আহমেদ- Hometwon Properties Ltd., মিঃ মাসুদ আহসান- QuickSell Realty, মিঃ মোহাম্মদ হক রাজীব- Partner Real State, মিঃ দিলাল আহমেদ- Fairway Independent Mortgage Corporation, মিঃ সালাহউদ্দিন ইয়াহিয়া- ASRS Tax Services Inc., মিঃ কাজী টি, ইসলাম- E&R Tax Solutions, দলিল আহমেদ- Weichert Realtors, মোঃ আলী- All State Insurance, তৌফিক মতিন- Commonwealth Mortgage Inc নাজির উল্লাহ- Long & Foster, ডঃ আশরাফ চৌধুরী- North-West Dental Care.
ব্যক্তিগত স্পন্সরগনঃ এ্যাটর্নি মোহাম্মদ আলমগীর, মিঃ নুরুল আমিন নুরু, ডঃ গোলাম ফরিদ আক্তার, মিঃ মোহাম্মদ মোস্তফা এন্ড মিসেস রুকসানা পারভীন, মিঃ কবির পাটোয়ারী এন্ড মিসেস পারভীন পাটোয়ারী।
অনুষ্ঠানে এবারে যারা চিকিৎসা সেবার পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেছেন, তারা হলেনঃ ডাঃ রাকেশ মাথুর, ডাঃ মরিয়ম পারভীন, ডাঃ মানস কুমার দাস, ডাঃ সন্দীপ গুপ্তা, ডাঃ সুরাইয়া বেগম, ডাঃ সৈয়দ মাহতাবুদ্দিন আহমেদ। এছাড়া আইন বিষয়ক পরামর্শ দিয়েছেন এটর্নী সুদীপ বোস (বোস ল’ ফার্ম)।
প্রিয়াবাংলা পথমেলার মিডিয়া পার্টনার ছিল- এন,টি,ভি, রেডিয়্যান্ট আই,পি টিভি, আর টিভি, নিউজ বাংলা, ওয়াশিংটন বাংলা, নিউজ বিডিইউএস, টু মিনিটস টিভি।
পথমেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় ছিলেনঃ মিঃ মাহফুজুর রহমান, মঞ্চ ব্যবস্থাপনায়ঃ এ্যান্থনী পিউস গমেজ, পুলি রানী বালা এবং ডেমিয়ান ডিয়াস, মেলার চার পাশের আলপনা এবং সাজ সজ্জা ব্যবস্থানায় ছিলেন প্যাট্রীক গোমেজ, স্টল ব্যবস্থাপনায়- আবু সরকার, ডেমিয়ান ডিয়াস, নুপুর চৌধুরী। শব্দ নিয়ন্ত্রন, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় ছিলেনঃ– সায়াম, মাটি গ্রুপ, নিউইয়র্ক। মিউজিশিয়ান গ্রুপঃ – মাটি গ্রুপ, নিউইয়র্ক- পার্থ, রিচার্ড, রেইক্স, মনু এবং রাসু। প্রিয়বাংলার অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার ছিল মোমেন্টস ফটোগ্রাফী। যারা ক্যামেরাবন্দী করেছেন চমৎকার মুহূর্তগুলোকে, তারা হলেন- মিঃ রাজিব বড়ুয়া, মিঃ বিপ্লব দত্ত, শামীম হায়দার, তৌফিক হাসান, এ্যান্থনী পিউস গমেজ এবং আরো অনেকে। এছাড়া প্রিয়বাংলার এই আয়োজনে যারা বিশেষভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন, তারা হলেন- ফখরুল আলম লিটন, মিসেস আসমা করিম, দেওয়ান আরশাদ আলী বিজয়, কলিন্স গমেজ, রতন চৌধুরী, সুমিত মিস্ত্রি, সুমন কর্মকার, রফিকুল ইসলাম আকাশ, রাজিব বড়ুয়াসহ আরও বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবক। বিশেষ সহযোগিতা করে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন ভার্জিনিয়া বৌদ্ধ বিহার।
অনুষ্ঠান শেষে শুন্য হয়ে যায় হাজারো মানুষের ভীরে ভরে উঠা মেলা প্রাঙ্গণ, থে্মে যায় সারাদিনের কোলাহল আর হাসির কলোরব, নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে থাকে জোড়ালো মাইক্রোফোন মঞ্চের দুই কোনে, রাত্রির অন্ধকারে ওয়াজ তুলে গাড়ীর নিয়ে সবাই চলে গেল যার যার গন্তব্যে… শুন্য পড়ে রইল ক্ষনপূর্বের ধামাল মাচানো মঞ্চ, লোকে লোকারন্য মেলা প্রাঙ্গন আর রয়ে গেল প্রিয়বাংলার ক্লান্ত কর্মীরা। দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি শেষে মেলাও সমাপ্ত হলো, ভাল লাগার স্পর্শে আনন্দচিত্তে সকল শ্রোতাদর্শকরা বিদায় হলেও প্রিয়বাংলার নিবেদিতপ্রান কর্মীদের দায়িত্ব তখনো শেষ হয়নি- সমস্ত আয়োজন আবার ভাঙ্গতে হবে, আয়োজনের সমস্ত জিনিসগুলো স্ব স্ব স্থানে পৌঁছাতে হবে, পুরো রাস্তা জুরে যে বিরাট মেলার আয়োজন করা হয়েছিল… তার পুরো প্রাঙ্গন পরিস্কার করতে হবে, তারপর… ক্লান্ত- শ্রান্ত দেহে বাড়ী ফিরে যাওয়া। কিন্ত তারপরও ছিল তৃপ্তির আনন্দ একটি সফল মেলা উপহার দিতে পারার জন্য- গভীর রাত্রি পর্যন্ত কর্মরত প্রিয়বাংলার কর্মীদের মুখে ছিল সাফল্য ও তৃপ্তির আলো। ক্লান্ত দেহ, শ্রান্ত মন – কিন্ত অদ্ভূত এক জীবনঞ্চারী শক্তিতে তারা সবাই যেন ছিল দীপ্যমান। সমাপ্ত হলো দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশিত “প্রিয়বাংলার পথমেলা ২০১৬”-এর আনন্দ আয়োজন, প্রিয়বাংলার পথচলার ইতিহাসে যোগ হলো আরেকটি সাফল্যের অধ্যায়।