বাংলার মাটি সব ধর্মের মানুষের

1,044

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের অনেক বাধা থাকতে পারে। আমাদেরকে অবশ্যই এসব বাধা কাটিয়ে উঠতে হবে। কারণ আমরা জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করি।এসব বাধা আমাদের কাজের গতি কমাতে পারবে না।’ সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে বড়দিন ২০১৫ উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ।এখানে সকল ধর্মের মানুষে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে। সব ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছিল। তাই বাংলাদেশের মাটি সব ধর্মের মানুষের জন্য। শেখ হাসিনা বলেন, তার দল দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। প্রত্যেকে স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করবে এবং অন্যদের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। এটাই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা রবিন্দ্র সঙ্গীত ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর’ গানটি গেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। বিশপ পল শিশির সরকার পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ করে অনুষ্ঠান শুরু করেন। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। এ উপলক্ষে গণভবনে একটি ‘ক্রিসমাস ট্রি’ সাজানো হয় এবং বড়দিনের তাৎপর্য, যীশু খ্রিস্টের বন্দনা ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদলে বিশপ, ফাদার এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএ) সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন, আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও এবং অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্মল রোজারিও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বড়দিনের একটি কেক কাটেন এবং বিসিএ সভাপতি ও মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীকে বড়দিনের একটি কার্ড উপহার দেন। প্রধানমন্ত্রী কেক ও মিষ্টি দিয়ে প্রতিনিধিদলের সদস্যদের আপ্যায়ন করেন। বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার সরকারের সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সেবক হিসেবে আমি সবসময় আমার নিজের ওপর বিশ্বাস রাখি। প্রধানমন্ত্রীর পদ আমার জন্য অস্থায়ী। তিনি আরো বলেন, নিজের ভাগ্য গড়ে তোলার জন্য তিনি কখনও ক্ষমতা ব্যবহার করেন না। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের শান্তি ও অগ্রগতি সবসময় বিএনপি ক্ষমতায় এলে পিছিয়ে পড়ে। ২০০১ সালে তাদের নির্যাতন, ক্রোধ ও ঘৃণা থেকে কোন ধর্মের মানুষই রেহাই পায়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে তাদের অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে অব্যাহতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। খ্রিস্টান সম্প্রদায় থেকে একজন পূর্ণ মন্ত্রী বানানোর দাবির জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তার মন্ত্রিসভায় পরবর্তী রদবদল করার সময়ে বর্তমান প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিনকে কেবিনেট মন্ত্রী বানানোর বিষয়টি তিনি বিবেচনা করবেন। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ নিশ্চিত করতে চায়, যেখানে সকল ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে এবং মৌলিক অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে। তিনি বলেন, তবে এটা সত্য যে, দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বিশেষ করে যখন বিএনপি ও তাদের জোট ক্ষমতায় আসে তখন সবসময়ই নির্যাতনের শিকার হয়। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা যেখানে সকল ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে বসবাস করতে পারে। তিনি বড়দিন উপলক্ষে গণভবনে সমবেত হওয়ার জন্য খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

 

নিউজবিডিইউএস ডেস্ক

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.