‘বিএনপি রাজনীতিকে অপরাধ জগতে নিয়ে গেছে’

122

বিএনপি আজকে দেশের রাজনীতিটাকে অপরাধ জগতে নিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

pm_home

শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পারভীন জাহান কল্পনা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী এবং শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে শমী কায়সারও বক্তৃতা করেন। সভা পরিচালনা করেন দলের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের পরিবারের সদস্য, জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত ব্যক্তি এবং হত্যা ও দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের মনোনয়ন দেয়ায় বিএনপির কড়া সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য একটি রাজনৈতিক দল যত রকমের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। কেউ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দোসর কেউ বা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে বা তাদের পরিবারের সদস্য, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামি-তাদের মনোনয়ন দিয়েছে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যারা এ ধরনের মানবতাবিরোধী কাজ করেছে, তাদের নির্বাচিত করে তারা দেশটাকে কোথায় নিয়ে যাবে?’

তিনি বলেন, ‘আমেরিকার কংগ্রেস থেকে একটি তালিকা পাঠিয়েছে, সেখানেও জঙ্গিবাদী হিসেবে এদের নাম রয়েছে এবং ইতোমধ্যেই কানাডার আদালত বিএনপিকে একটি জঙ্গিবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।’

‘এরা যদি নির্বাচিত হয়ে দেশের ক্ষমতায় আসে, তাহলে সেই দেশের অবস্থা কোথায় দাঁড়াবে, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা কিভাবে থাকবে, এদেশে শান্তি কিভাবে থাকবে, অগ্রগতি কিভাবে হবে, কোনো দিনও হবে না,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ওয়াদা ছিল জাতির কাছে ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব। সে অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল করে ’৭১ এর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করি এবং অনেকের বিচারের রায় ও কার্যকর হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আজকে আমরা দেখি যারা এই মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত তাদেরই পরিবারবর্গকে, আপনজনকে নিয়ে বিএনপিসহ জোট করা হয়েছে। সেই জোটে অনেকেই এখন আছে।’

তিনি এ সময় দলত্যাগ করে এবং আদর্শ বিচ্যুত হয়ে গুটিকতক নেতৃবৃন্দের ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনের সমালোচনা করেন। বলেন, ‘তাদের কাছে আমার প্রশ্ন যারা এত বড় অপরাধ করল, যে পাকিস্তানী বাহিনীকে আমরা পরাজিত করলাম তাদেরই দোসরদের ধানের শীষ দেয়া হলো। আর যারা একদা আমাদের সঙ্গে ছিল আজকে চলে গেছে তারা কিভাবে নির্বাচন করবে? আর কিভাবেই বা নির্বাচন করে? এ প্রশ্নের উত্তর তারা জাতির কাছে দিতে পারবে কি না আমি জানি না।’

শেখ হাসিনা দেশবাসীর কাছে এসব চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী, তাদের দোসর এবং জঙ্গিবাদ এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তদের প্রত্যাখ্যান করারও উদাত্ত আহবান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি দেশবাসীকে বলব অপরাধীদেরকে ভোট দেবেন না, এই অপরাধীরা বাংলাদেশে যেন আর কখনও নির্বাচনে প্রতিনিধি হয়ে আসতে না পারে। যে সব এলাকায় তারা দাঁড়িয়েছে (নির্বাচনে), তাদের চিহ্নিত করুন এবং তাদের একেবারে বয়কট করে দিন।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এরা ক্ষমতায় আসলে এদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। এদেশের অগ্রগতি ব্যাহত হবে, এদেশের ভাগ্য গড়ার জন্য আজকে যে অর্থনৈতিক উন্নয়নটা হচ্ছে, সেটাও থেমে যাবে।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.