যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ইংল্যান্ডের (বেইন) দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে প্রবাসীদের বিপুল ভোটে সভাপতি পদে মাহবুব-ই-খোদা (খোকা) এবং সাধারণ সম্পাদক পদে রাজিবুর রহমান রাজিব নির্বাচিত হয়েছেন।
গত ১০ ও ১১ নভেম্বর (শুক্র ও শনিবার) দু’দিনের নির্বাচনের ফলাফলে খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদ প্রবাসীদের বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। ১০ ও ১১ নভেম্বর নির্বাচনে প্রায় ৬ হাজার ভোটারের মধ্যে মোট ভোট প্রদান করেন এক হাজার ৬২৯ জন। সভাপতি পদে খোকা পেয়েছেন এক হাজার ১৫৪ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তানভির মুরাদ পেয়েছেন ৪৭৫ ভোট। বেইন-এর নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সহ-সভাপতি পদে সাজ্জাদুর রহমান সাজু পেয়েছেন এক হাজার ১৭৯ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. তাজ উদ্দিন পেয়েছেন ৪৪১ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে রাজিবুর রহমান রাজিব পেয়েছেন এক হাজার ১৭৮ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শান্তা বাকী পেয়েছেন ৫৫৯ ভোট। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আশিকুর রহমান পেয়েছেন এক হাজার ১৪৭ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাশিবুল আমিন সৈকত পেয়েছেন ৪৫৪ ভোট। সাংগঠনিক ও দপ্তর সম্পাদক পদে জহিরুল হুসেইন পেয়েছেন এক হাজার ১২৬ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রিতম বড়ুয়া পেয়েছেন ৪৮৭ ভোট। কোষাধ্যক্ষ পদে মনিরুজ্জামান খান পেয়েছেন এক হাজার ১৩৯ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইবনুল হাসান ইপু পেয়েছেন ৪৬৮ ভোট। যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ পদে এডি শুভ পেয়েছেন এক হাজার ১৩৬ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সেলিনা চৌধুরী পেয়েছেন ৪৭৮ ভোট। সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রেহানা পারভীন ইতি পেয়েছেন এক হাজার ১৪৩ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাহের নোহা আহমেদ পেয়েছেন ৪৭৩ ভোট। যুগ্ম সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মৌসুমি রহমান পেয়েছেন এক হাজার ১৫১ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী নাসরিন শাহরিয়ার পেয়েছেন ৪৫৯ ভোট। সমাজ কল্যাণ সম্পাদক পদে বিএম রায়হানুজ্জামান পেয়েছেন এক হাজার ১২৪ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইসতিয়াক আহমেদ পেয়েছেন ৪৭৭ ভোট। ক্রীড়া সম্পাদক পদে একরামুল পিজন পেয়েছেন এক হাজার ১০১ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুর মোহাম্মদ পেয়েছেন ৫১৯ ভোট। শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পদে আমিন হোসেন পেয়েছেন এক হাজার ১৩১ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. মেরাজুল ইসলাম পেয়েছেন ৪৭৪ ভোট। গণসংযোগ সম্পাদক পদে পঙ্কজ চন্দ্র দাস পেয়েছেন এক হাজার ১০৭ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাসুদ আকবর পেয়েছেন ৪৯৮ ভোট। নির্বাহী সদস্য পদে (এক) এসএম সাইফুর ইসলাম পেয়েছেন এক হাজার ১১২ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমতিয়াজ উদ্দিন পেয়েছেন ৪৯৮ ভোট এবং নির্বাহী সদস্য পদে (দুই) পদে মো. মাসুদ রানা পেয়েছেন এক হাজার ১৪৪ ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুল কাদের পেয়েছেন ৪৫৮ ভোট।
এ ফলাফল থেকে এক সপ্তাহ আগে গ্রহণ করা ৬৯৪টি ভোট বিয়োগ করা হয়েছে।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে থেকেই নির্বাচন কমিশনার সালাউদ্দিন খান সৈকতের বিরুদ্ধে অপর প্যানেল তানভির-তাজ-শান্তা পরিষদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ পাওয়া যায়। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আলাউদিন খানের বিরুদ্ধেও নানা অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির খবর পাওয়া যায়। ভোট গ্রহণের নির্ধারিত দিনের এক সপ্তাহ আগে তানভির-তাজ-শান্তা পরিষদকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন শহরে গিয়ে ভোটগ্রহণ করেন। সবচেয়ে বড় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ছিল গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ‘ডাকযোগে ভোট প্রদান’ প্রক্রিয়া। শুরু থেকেই খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদ ডাকযোগে ভোট প্রদানের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। নির্বাচন কমিশন খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের কোনো অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়নি। ফলে নিরুপায় হয়ে খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদ আদালতের শরণাপন্ন হয়। আইনজীবীর দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৭ নভেম্বর ম্যাসাচুসেটসের দেওয়ানী কার্যবিধি বিধির ৬৫ ধারায় উক্ত নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করেন বিজ্ঞ বিচারক। গত ৭ নভেম্বর ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের দেওয়ানী কার্যবিধি বিধির ৬৫ ধারায় লরেন্স সুপিরিয়র কোর্টের বিজ্ঞ বিচারক জেনিস ডব্লিউ. হাউ উক্ত নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করেন।
নির্বাচন কমিশনার সালাউদ্দিন খান সৈকত বলেন, ‘আদালতের নিষেধাজ্ঞা মাথায় রেখে আমরা সংবিধান মোতাবেক ১০ নভেম্বর সান্ধ্য ভোট ও ১১ নভেম্বর দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ করার কথা যুক্তরাষ্ট্রের বাংলা সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেসকে জানাই।’ তবে সেই কথা তিনি রাখেননি।
লরেন্স সুপিরিয়র কোর্টের বিজ্ঞ বিচারক জেনিস ডব্লিউ. হাউ-এর পূর্বঘোষিত নির্দেশনায় অগ্রিম ভোট গণনা বাতিল হলে সভাপতি পদে মাহবুব-ই খোদা ৬৭৯ ভোটের ব্যবধানে অপর প্রার্থী তানভির মুরাদকে পরাজিত করবেন। বিচারকের নির্দেশ অমান্য করে খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের প্রতিনিধিদের অসম্মতিতে জোরপূর্বক অগ্রিম ভোট (এক সপ্তাহ আগে রাতের অন্ধকারে গ্রহণ করা) ৬৯৪টি ভোট যুক্ত করে তানভির মুরাদসহ তার প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের প্রধান সালাউদ্দিন খান সৈকত। তার পাতানো ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের পক্ষে সভাপতি প্রার্থী মাহবুব-ই-খোদা (খোকা)।
আদালতের পুর্ব ঘোষিত নির্দেশনা উপেক্ষা করে মাত্র ১৫ ভোটের ব্যবধান নির্বাচন কমিশনের পছন্দের প্যানেলকে তাৎক্ষণিক ঘোষণা দিলে পাতানো ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছেন খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের পক্ষে সভাপতি প্রার্থী মাহবুব-ই-খোদা (খোকা)। আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে একটি প্যানেলের সম্মতি ছাড়াই এক তরফাভাবে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন।
উল্লেখ্য, বেইনের কার্যকরী পরিষদের ১৫টি পদের জন্য এবারে দু’টি প্যানেলে ৩০ প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হয়। এবারের নির্বাচনে স্বজনপ্রীতি ও ভোট কারচুপির লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ‘ডাকযোগে ভোট গ্রহণের’ ঘোষণা দিলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন একটি প্যানেলের প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশনের কাছে জোর আপত্তি জানায়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকে।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে থেকেই নির্বাচন কমিশনার সালাউদ্দিন খান সৈকতের বিরুদ্ধে তানভির-তাজ-শান্তা পরিষদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ ওঠে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতিমূলক কর্মকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। ভোটগ্রহণের নির্ধারিত দিনের এক সপ্তাহ আগে তানভির-তাজ-শান্তা পরিষদকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন শহরে গিয়ে ভোটগ্রহণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
আদালতের পূর্বঘোষিত নির্দেশনা মোতাবেক, চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আদালতের পরবর্তী নির্দেশনার জন্য। আদালতের পূর্বঘোষিত নির্দেশনা উপেক্ষা করে মাত্র ১৫ ভোটের ব্যবধান নির্বাচন কমিশনের পছন্দের প্যানেলকে তাৎক্ষণিক ঘোষণা দিলে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদ।
লরেন্স সুপরিয়র কোর্টের বিজ্ঞ বিচারক জেনিস ডব্লিউ. হাউয়ের নির্দেশনায় অগ্রিম ভোট গণনা বাতিল হলে সভাপতি পদে মাহবুব-ই খোদা ৬৭৯ ভোটের ব্যবধানে অপর প্রার্থী তানভির মুরাদকে পরাজিত করবে। বিচারকের নির্দেশ অমান্য করে খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের প্রতিনিধিদের অসম্মতিতে জোরপূর্বক অগ্রিম নেওয়া ৬৯৪টি ভোট যুক্ত করে তানভির মুরাদসহ তার প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের প্রধান সালাউদ্দিন খান সৈকত। তার ফলাফল এরই মধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের পক্ষে সভাপতি প্রার্থী মাহবুব-ই-খোদা (খোকা)।