ভারতে ধড়পাকড়, ১৩০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে
এ বছরের শুরু থেকে প্রায় ১,৩০০ রোহিঙ্গা ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে বুধবার জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন নিপীড়ন থেকে প্রাণ বাঁচাতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা। কিন্তু, তাদের আবার মিয়ানমারেই ফেরত পাঠানো হতে পারে এমন আশঙ্কায় তারা বাংলাদেশে ঢুকছে বলে জানায় কাতারের সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
আলজাজিরার খবরে বলা হয়, গত কয়েক মাসে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোয় তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে নয়াদিল্লি। সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়টি মিয়ানমারে ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও তাদের সেখানেই ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, ভারত আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করছে।
‘গত বছরে ভারতের সরকার সেখানকার রোহিঙ্গাদের জীবন কঠিন করে তুলেছে,’ আলজাজিরাকে বলেন রবি নায়ার।
সাউথ এশিয়া হিউম্যান রাইটস ডকুমেন্টেশনের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘শরণার্থীদের দমন-নিপীড়ন করা হতে পারে এমন দেশে জোর করে ফেরত না পাঠানোর যে রীতি রয়েছে, সেটা ভারতের সম্মান করা উচিত।’
নায়ার জানান, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের নিয়মিত কাগজপত্রের জন্য হয়রানি করেন।
‘জম্মু, ত্রিপুরা, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার ও বন্দি করা হয়েছে। আমাদের কাছেই এমন ২০০ জনেরও বেশি বন্দির তথ্য রয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
ধরপাকড়ের ভয়ে ও মিয়ানমারে ফেরত যেতে অনিচ্ছুক বহু সংখ্যক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসছেন। এখানে আগে থেকেই প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, ভারত থেকে বাধ্য হয়ে আসা ১৩০০ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালি ট্রানজিট পয়েন্টে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইউএনএইচসিআর’র তত্ত্বাবধানে থাকা এসব রোহিঙ্গাকে এখনই ক্যাম্পে পাঠানো হবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জানুয়ারি মাসের শুরুতে এসব রোহিঙ্গারা ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। এরপর থেকে তাদের আসা অব্যাহত রয়েছে।
ইন্টার সেক্টর কোর্ডিনেশন গ্রুপের মুখপাত্র সৈকত বিশ্বাস ইউএনবিকে জানান, বছরের শুরুতে ভারত থেকে পালিয়ে আসা ১৩০০ রোহিঙ্গাদেরকে ইউএনএইচসিআর’র তত্ত্বাবধানে ট্রানজিট পয়েন্টে রাখা হয়েছে। আরও কিছু পালিয়ে এসে ট্রানজিট পয়েন্টে আশ্রয় না নিয়ে টেকনাফের উনছিপ্রাং, জাদিমুরাসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের চিহ্নিত না করা পর্যন্ত এখনও কতজন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম জানান, ভারত থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের এখনও ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়া হয়নি। ট্রানজিট পয়েন্ট ছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে ভারত থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা নিশ্চিত করা হবে।