ভোটের দিন ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের
অনলাইন ডেস্কঃআসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেন কোন ধরণের হয়রানি ও সহিংসতা না হয় উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর মিলার বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বরে ভোটের দিন ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার এসব কথা বলেন।
আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, তারা আশা করেন যে বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল-সমাবেশে সবার অধিকার থাকবে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যে সহিংসতা হয়েছে তাতে তারা উদ্বিগ্ন। ভোটের দিন অধিক মাত্রায় সহিংসতার আশঙ্কা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য ব্যবস্থা নিতে ইসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আমরা বলেছি যুক্তরাষ্ট্র গত দুই সপ্তাহের নির্বাচনী সংহিসতা নিয়ে অবগত আছে। বড় বড় নেতারাসহ সংখ্যালঘুরা সহিংসতায় আক্রান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, অধিকাংশ বড় নেতারাই বিরোধী দলের। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য সহিংসতা প্রতিরোধে নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা কী জানতে এসেছিলাম। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মানুষের কাছে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায়। আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আহ্বান জানিয়েছি, যেন দল মত নির্বিশেষে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে এবং নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।
রবার্ট আর মিলার বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভয়হীন ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস যে বার্তা দিয়েছেন সেটাও আমি প্রধান নির্বাচন কমিশারকে দিয়েছি। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন- নির্বাচনের আগে ও পরে সকল অংশীজনের কাছে তিনি সহিংসতামুক্ত শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করতে বলেছেন। যেন সংখ্যালঘুসহ সকল বাংলাদেশি ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। সুশীল সমাজ, পর্যবেক্ষকরা যেন সম্পূর্ণভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
সব গণতান্ত্রিক নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ সভা সমাবেশের সুযোগ থাকতে হবে—উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা গণমাধ্যমে প্রচারের ক্ষেত্রেও তাদের স্বাধীনতা থাকতে হবে। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী দলগুলো যাতে সঠিক সংবাদ পেতে পারে তারও নিশ্চয়তা থাকতে হবে।’
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নির্বাচন কমিশনে যান। সেখানে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে রবার্ট মিলারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল।
বৈঠকে সিইসি ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন ও কবিতা খানম, নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ আটজন উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতসহ চারজন ছিলেন বৈঠকে।
এর আগে গত ১১ ডিসেম্বরও আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার।