ভোট দিয়ে কেন্দ্র পাহারার আহ্বান ড. কামালের

758

ভোট না দিলে দেশের মালিকানা রক্ষা হবে না। ভোট দিয়ে কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে’, ড. কামাল হোসেনের এ আহ্বানের মধ্য দিয়ে সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

a7cf73b40b74139fb570cc773bf45304-5c11200563184

আজ বুধবার বিকেলে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সিলেট পৌঁছালে সন্ধ্যার পর হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরান (রহ.)–এর মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে। মাজার জিয়ারত শেষে সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদীরের পক্ষে প্রচারপত্র বিলি করে করেন ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির নেতারা।

এর আগে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটের ফ্লাইটে ঢাকা থেকে সিলেট পৌঁছান ড. কামাল হোসেন। বেলা দুইটার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০–দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী সিলেটে এসে পৌঁছান। দরগাহ এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। কথার শুরুতেই তিনি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই (সাবর জন্য সমান সুযোগ) বলে জানান। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড় করছে পুলিশ। কিন্তু বর্তমান সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য সফল হতে দেওয়া হবে না। অসৎ উদ্দেশ্য ব্যর্থ করতে নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকতে হবে।’

জনগণকে দেশের মালিক উল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশের জনগণ মালিক থাকে না। মালিকানা রক্ষা করতে হবে। সবাইকে এই দেশ পাহারা দিয়ে দেশের মালিকানা রক্ষা করতে হবে। দেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে ১০-১২কোটি ভোটার আছেন। তাঁরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন। ভোট না দিলে দেশের মালিকানা রক্ষা হবে না। ভোট দিয়ে কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে।’

ঐক্যফ্রন্ট অসাধারণ সাড়া পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে মানুষ ঐক্যবদ্ধ। মানুষের আগ্রহ সুষ্ঠু নির্বাচনের। অসাধারণ সাড়া পড়েছে। আমরা জনগণকে বলছি, আপনারা দেশের মালিক, মালিকানা রক্ষা করেন। ভোট না দিতে পারলে আপনারা এই মালিকানা থেকে বঞ্চিত হবেন।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কি কোনো অবস্থাতে নির্বাচন বর্জন করতে পারে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জনে নেই। নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট আছে, থাকবে। চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্ট মাঠ ছাড়বে না।’

সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের ড. কামাল হোসেন ‘কোনোভাবে ইলেকশন ছাড়া যাবে না’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রতি আমার অনুরোধ ছিল এটি, তারাও একমত। কোনোভাবেই ইলেকশন ছাড়া যাবে না।’

পুলিশের ধরপাকড়, হয়রানি সংবিধানপরিপন্থী কাজ উল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি দাবি করছি, দ্রুত এগুলো বন্ধ করতে হবে।’
নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ আছে কি না? এমন প্রশ্নে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান, ‘আপানারা কী মনে করেন? আপনারাই বিচার করুন। এখনো হয়নি, নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ গড়তে হবে।’
বিমানবন্দরে সিলেট-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদীরসহ বিএনপির স্থানীয় নেতারা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় তিনিও সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন পুলিশের বাড়াবাড়ি রকমের নজরদারি নিয়ে। খন্দকার মুক্তাদীর বলেন, ‘মাজার এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি বেশি। এতে করে সাধারণ কর্মীরা ভয়ের মধ্যে আছে।’

বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হজরত শাহজালাল (রহ.)–এর মাজারে যান ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। মাগরিবের নামাজের পর সেখান থেকে হজরত শাহপরান (রহ.)–এর মাজারে যান। সেখান থেকে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সিলেট-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী দিলদার হোসেন সেলিমের নির্বাচনী পথসভায় যোগ দেন। রাত সাড়ে সাতটায় জৈন্তাপুর উপজেলার বটতলায় ওই সভা হয়।
রাত সাড়ে সাতটায় ড. কামাল হোসেন বিমানের সন্ধ্যাকালীন ফ্লাইটে ঢাকা ফেরেন। বিমানবন্দরের যাত্রাপথে মজুমদারি এলাকায় তিনি স্থানীয় জনসাধারণ ও পথচারীদের সঙ্গে কথা বলেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.