মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন , ”যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেট রয়েছে। সেসব জায়গাগুলোতে বিএনপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বিধা-বিভক্তির জন্য গত তিন বছরেও কোন কমিটি দেয়া সম্ভব হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রে আলাদা বিএনপি বলে কিছু নেই কিংবা জ্যাকব মিলন্ট নামেরও কোন সদস্য বা নেতা নেই বিএনপিতে। জ্যাকব মিল্টন নামের কাউকে আমি চিনিও না। এমনকি যারা যুক্তরাষ্ট্র শাখা বিএনপির বিভিন্ন কমিটির নামে অতীতে সরাফত হোসেন বাবুসহ যারা লবিং করেছেন তাদের কাউরেই কোন অনুমোদন বা দায়িত্বও দেয়নি বিএনপি – এটাও আমার পাঠানো ওই চিঠিতে সুস্পষ্ট করে বলা হয়েছে। সুতরাং চিঠি নিয়ে কেউ উল্টা পাল্টা বক্তব্যেরও সুযোগ নাই।
দীর্ঘ তিন বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি নেই। কমিটির আশায় প্রহর গুনছেন সংগঠনটির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী। আর কমিটি না থাকায় দল পরিচালনায় ভেঙ্গে গেছে ‘চেইন অব কমান্ড’। বেড়েছে বিভক্তি, বাড়ছে গ্রুপিং। বাড়ছে নেতার সংখ্যা। কোন কোন সভা-সমাবেশে দেখা যাচ্ছে কর্মীর চেয়ে নেতাই বেশী। কমিটি না হওয়ায় আর দলের নেতাদের বিভক্তিতে ব্যথিত, ক্ষুব্ধ হাজারো প্রবাসী বিএনপি ভক্ত, শুভাকাংখী, সমর্থক। দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা ছিলো খুব শিগগীরই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি কেন্দ্রীয় থেকে দেবেন। সেই লক্ষ্যে দলের পদ-পদবী প্রত্যাশী নেতৃবৃন্দ ছিলে উৎসাহী। বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট সবাই বিভক্তি আর ভেদাভেদ ভুলে ‘দৃশ্যত’ ঐক্যবদ্ধও হয়েছিলেন। যদিও সব বিভক্তি, ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হবেন, ঐক্যবদ্ধ থাকবেন বলে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর । বিএনপি’র সমাবেশে তিনি বলেছেন, কমিটি হবে, দলের চেন অব কমান্ড মানতে হবে, দলের সিনিয়র নেতাদের সম্মান দিতে হবে’।
আরেক সূত্র মতে, প্রবাসে দেশের রাজনীতি বা দলীয় কমিটির চেয়ে যোগ্য লবিস্ট-এর পক্ষে স্বয়ং চেয়ারপার্সন। তিনি চান দলের পক্ষে প্রবাসী পেশাজীবি বাংলাদেশীরা মূলধারার লবিং-এর মাধ্যমে কাজ করুক।
বেগম খালেদা জিয়া তার সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র সফরকালীন সময়ে নিউজার্সীতে তার হোটেলে নিউইয়র্কের একাধিক সিনিয়র সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এমনই আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ব্যাপারে প্রবাসী পেশাজীবি বাংলাদেশীদের তেমন আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বিএনপি’র হাই কমান্ড মনে করে প্রবাসে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপের মতো দেশগুলোতে দেশীয় স্টাইলের রাজনীতির চেয়ে মেধা-মনন আর পেশাদারীত্বপূর্ণ যোগ্যতা সম্পন্ন নেতৃত্ব দলের জন্য বেশী জরুরী।
জানা গেছে, বিএনপির রাজনীতির ব্যাপারে অনেক পেশাজীবির আগ্রহ থাকলেও সময় আর ব্যস্ততাসহ যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে তারা নেতৃত্ব নিতে অনাগ্রহী। দায়িত্ব নিলে যেভাবে দলকে সময় দেয়া উচিৎ সেই সময় তাদের নেই। তাছাড়া তারা দেশীয় স্টাইলে সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ-প্রতিবাদও পছন্দ করেন না। এ নিয়ে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং প্রবাসী পেশাজীবি বাংলাদেশীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও রয়েছে।
সংশ্লিস্টরা বলছেন, কেন্দ্রীয় আর স্থানীয়ভাবে শীর্ষ নেতাদের পদ-পদবি ভাগ-বাটোয়ারা আর সমন্বয় করার মধ্য দিয়ে দলীয় দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, বিভক্তি দূর করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।(সুুুত্র:আওয়াজবিডি ডটকম)