যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়াতে চান ট্রাম্প
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গোটা বিশ্বকে সজাগ করতে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়ানো অত্যাবশ্যক বলে মনে করেন নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার এক টুইটে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। আর তার এ মন্তব্যের পর পারমাণবিক সক্ষমতা বিস্তৃত করণ বিরোধী বিশেষজ্ঞদের মনে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প তার টুইটে বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত না পারমাণবিক অস্ত্রের ইস্যুতে বিশ্বের হুঁশ হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সক্ষমতা অবশ্যই দৃঢ় ও বিস্তৃত করা প্রয়োজন।’ তবে এর বিস্তারিত উল্লেখ করেননি তিনি।
আচমকা ট্রাম্প কেন এ ধরনের মন্তব্য করলেন তা স্পষ্ট নয়। তবে বৃহস্পতিবার সকালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মন্তব্য করেছিলেন ‘কৌশলগত পারমাণবিক শক্তিজনিত ক্ষেত্রে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সম্ভাবনা দৃঢ়তর করা প্রয়োজন।’
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, টুইটটির ব্যাপারে ট্রাম্পের মুখপাত্র জ্যাসন মিলারের জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প পারমাণবিক বিস্তারের হুমকির দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন এবং এটি প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করানোর চেষ্টা করছিলেন।’
মিলারের দাবি, ‘ট্রাম্প আদতে পারমাণবিক অস্ত্রের পক্ষে কথা বলছিলেন না, তার মন্তব্যকে নতুন নীতিমালাজনিত প্রস্তাব আকারে পাঠ করার সুযোগ নেই।’
এদিকে ট্রাম্পের মন্তব্যে উদ্বেগ জানিয়েছেন পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধী বিশেষজ্ঞরা। ওয়াশিংটন ভিত্তিক একটি শীর্ষস্থানীয় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণপন্থী সংগঠন আর্ম কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশন। এর নির্বাহী পরিচালক ডেরির কিমবাল বলেন, ‘নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট কিংবা প্রেসিডেন্ট যদি সক্ষমতা বাড়ানোর মতো বিবৃতির তাৎপর্য না বুঝেই ১৪০ শব্দের সীমায় যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে চান তবে সেটি পুরোপুরি দায়িত্বহীনতা হবে।’
পারমাণবিক অ-বিস্তার চুক্তির আওতায় যে পাঁচটি দেশ একটি পারমাণবিক অস্ত্রাগার স্থাপনের অনুমোদন পেয়েছে তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একটি। বাকি দেশগুলো হলো-রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও চীন।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক সেন্টার ফর ননপ্রলিফারেশন স্টাডিজ-এর সিনিয়র ফেলো মাইলস পম্পার ট্রাম্পের টুইটকে ‘প্রহসন’ বলে উল্লেখ করেন। এ ধরনের মন্তব্য অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে উস্কে দেবে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন তিনি।
পম্পার বলেন, ‘আমরা পারমাণবিক অস্ত্র বাড়ালে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার এবং পারমাণবিক সন্ত্রাস ঠেকানো যাবে না। আমাদের প্রয়োজনের চেয়েও বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে।’ আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের হিসেব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৭,১০০ টি পারমাণবিক অস্ত্র এবং রাশিয়ার ৭,৩০০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে।
নির্বাচনি প্রচারণার সময় পারমাণবিক বিস্তারকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে একক সমস্যা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন ট্রাম্প। তবে সেসময়ও ইউরোপের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারেননি তিনি।