যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন এবং জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণার বিষয়টি কি
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের কাজর্মের আংশিক অচলবস্থা বা শাটডাউন চলছে তৃতীয় সপ্তাহ ধরে। যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার খরচ বাবদ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রস্তাবিত ৫.৭ বিলিয়ন বা ৫৭০ কোটি ডলার বরাদ্দে প্রতিনিধি পরিষদ একমত না হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যায় বরাদ্দে প্রেসিডেন্ট অর্থ অনুমোদন করেন নি। সেই কারনেই এই শাটডাউন।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন এ বিষয়ে সমঝোতা না হলে তিনি জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করে মেক্সিকোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিনের সীমান্তে দেয়াল তোলার অর্থ পাশ করবেন।
কি এই জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণার বিষয়টি, তা অনেকেই পরিস্কারভাবে জানেন না।
অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠতে পারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কি সত্যিই জরুরী ক্ষমতা প্রয়োগ করে দেয়াল তুলতে পারেন?
এর সংক্ষিপ্ত উত্তর হচ্ছে-হ্যা তিনি পারেন।
প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণার ক্ষমতা রয়েছে। তবে তারও একটা সীমা রয়েছে।
১৯৭৬ সালে কংগ্রেস জাতীয় দুর্যোগ আইন পাশ করে যার মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের জরুরী সময়ে কংগ্রেশনাল চেক তৈরী করা হবে। সেই আইনের আওতায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্যই কংগ্রেসকে এবং জনগনকে সুস্পষ্টভাবে অবহত করবেন কি কারনে তিনি জরুরী ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। আর এই জরুরী বিষযটি সচল রাখতে আইন অনুযায়ী কংগ্রেস প্রতি ছয় মাসে একবার ভোটাভুটি করবে।
এবারকার এই বিষয়টি কি আসলেই জরুরী অবস্থার মতো?
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মেক্সিকোর যে দক্ষিনাঞ্চলীয় সীমান্ত, সেখান দিয়ে প্রচুর সংখ্যক অভিবাসি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে থাকে। এবারও দক্ষিন আমেরিকার কয়েকটি দেশের কয়েক হাজার অভিবাসি ও শরনার্থীর বহর সীমান্তে জড়ো হয়। তাদের কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে, অনেকেই পারে না। এই বিষযটিকে মানবিক ও জরুরী দুর্যোগ হিসাবে আখ্যা দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
গত রবিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, অপরাধীরা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়ছে, সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান হচ্ছে, মাদক আসছে; আরো কতো কি ঘটছে তার অনেক কিছুই আমরা জানিও না।
ট্রাম্প প্রশাসন বলছে সীমান্ত দিয়ে মেক্সিকো থেকে সন্ত্রাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছে।
তবে সমালোচকরা বলছেন প্রশাসনের এসব অভিযোগের কোনো প্রমান নেই।
জাতীয় দুর্যোগ ঘোষিত হলে অর্থ আসবে কোত্থেকে?
দেয়াল তোলার অর্থের বিষয়টি একটু স্পর্শকাতর। ওই অর্থ আসবে কোত্থেকে সেই প্রশ্নটিও একটু জটিল।
একটি পথ হচ্ছে জরুরী সেনা আইনের আওতায় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কতৃত্বে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই সেনা প্রকল্প নির্মানের কাজে অর্থ বরাদ্দ করতে পারেন। সেভাবে এই অর্থ আসতে পারে।
কংগ্রেস কি করতে পারে?
জাতীয় দুর্যোগ ঘোষনাকে দুই কক্ষের সমঝোতায় বাতিল করতে পারে কংগ্রেস।
তবে এই ক্ষেত্রে যেহেতু সেনেটের নিয়ন্ত্রনে রিপাবলিকানরা, সেই কারনে প্রেসিডেন্টের দুর্যোগ সঘোষনার সিদ্ধান্তকে পাল্টে দেয়া বা বাতিল করা সহজ নয়।
বিষয়টি যদি জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা পর্যন্ত শেষ পর্যন্ত গড়ায়ও; অনেকেই বলছেন তা আদালতের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হতে পারে।(VOA)