রকেট উৎক্ষেপণে মার্কিন হুঁশিয়ারি পাত্তা দিচ্ছে না ইরান
ইরানের মহাকাশযান প্রেরণ ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারির পাল্টা জবাবে ইরান বলেছে, তারা জাতিসংঘের রেজ্যুলেশনের কোনো লঙ্ঘন করছে না।
মহাকাশে তিনটি রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে তেহরান। তার আগেই বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এগুলো উৎক্ষেপণ করা হলে তা হবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলেশনের লঙ্ঘন। কারণ, এগুলোতে ব্যালেস্টিক মিসাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
কিন্তু, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ এই হুঁশিয়ারি প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে খবর দিয়েছে কাতারের সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
এক টুইটে তিনি বলেন, ‘ইরানের মহাকাশযান উৎক্ষেপণ এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা রেজ্যুলেশন ২২৩১-এর লঙ্ঘন নয়।’
জাভেদ জারিফ আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাস্তবিকই এই রেজ্যুলেশন ভঙ্গ করছে এবং তারা এ বিষয়ে কাউকে নীতিবাক্য শোনানোর অবস্থায় নেই।’
পম্পেও জানিয়েছিলেন, আগামী মাসগুলোতে ‘ইরান স্পেস লঞ্চ ভেহিকেলস’ নামের তিনটি রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে। এগুলোতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক মিসাইলে ব্যবহৃত প্রযুক্তির অনুরূপ।
‘ইরানের ধ্বংসাত্মক কৌশলের কারণে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে না,’ এক বিবৃতিতে বলেন পম্পেও।
তিনি বলেন, ‘আমরা এসব উস্কানিমূলক উৎক্ষেপণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য দেশটির সরকারকে উপদেশ দিচ্ছি এবং অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে একঘরে যাওয়া এড়াতে সব ব্যালেস্টিক মিসাইল সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বন্ধ করতে বলছি।’
ইরানের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল কাসেম তাকিযাদেহ গত নভেম্বর মাসে ইরানের মিডিয়াকে জানান, তারা শিগগিরই দেশে তৈরি তিনটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবেন।
পম্পেও বলছেন, এই রকেট উৎক্ষেপণ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ২২৩১ ভঙ্গ করবে। ২০১৫ সালে গৃহীত ওই প্রস্তাবনায় ইরান ও বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর মধ্যে চুক্তি পরমাণু চুক্তিকে অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। ইরান পরমাণু অস্ত্র ফেলতে পারে এমন ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে ওই চুক্তিতে। কিন্তু, এমন কার্যক্রম সরাসরি নিষিদ্ধ করা হয়নি এতে।
গত বছর মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই পরমাণু চুক্তি থেকে একতরফা বেরিয়ে ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ইরান ও অন্যান্য পরাশক্তিগুলো এটি কার্যকর রাখতে এখনও কাজ করে যাচ্ছে।