রাজশাহীতে মনোনয়ন পেলেন এমপিদের মদদপুষ্টরাই
উপজেলা নির্বাচনে এবার রাজশাহীতে মনোনয়ন পেয়েছেন স্থানীয় এমপিদের মদদপুষ্টরাই। যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের বেশির ভাগেরই নাম ছিল তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকায় নিচের দিকে। তবে এমপিদের ভাষ্য- কোনো তদবির নয়, দলের মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তেই প্রার্থিতা চূড়ান্ত হয়েছে।
রাজশাহীতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী বাছাইয়ে শেষ পর্যন্ত টিকে গেছেন এমপিদের ঘনিষ্ঠ নেতারাই। বাগমারায় এবার বাদ পড়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু। এই উপজেলায় আওয়ামী লীগের এবার চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অনিল কুমার সরকার।
পবা উপজেলায় এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মুনসুর রহমান, তানোরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না, পুঠিয়ায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জিএম হিরা বাচ্চু, দূর্গাপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, বাঘায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দীন লাভলু।
গোদাগাড়ীতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, চারঘাটে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম ও মোহনপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম ।
এদের মধ্যে পবার মুনসুর রহমান, মোহনপুরের আব্দুস সালাম, দূর্গাপুরের নজরুল ইসলাম ও চারঘাটের ফকরুল ইসলাম গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ছিলেন। এদের মধ্যে নজরুল ইসলাম ছাড়া বাকিরা পরাজিত হন। আর নতুন মুখ হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন বাগমারায় অনিল কুমার সরকার, বাঘায় লায়েব উদ্দিন লাভলু, তানোরে লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না, গোদাগাড়ীতে জাহাঙ্গীর আলম ও পুঠিয়ায় জিএম হিরা বাচ্চু। এদের মধ্যে এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন লায়েব উদ্দিন লাভলু।
এছাড়া এবার মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়েছেন বাগমারার বর্তমান চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু, গোদাগাড়ীতে গতবারের দলীয় প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ ও পুঠিয়ায় শাহরিয়ার আলম কনক।
মনোনয়ন বিষয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক প্রভাষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘তৃণমূলে সভা করে যাদের নাম তালিকায় প্রথমদিকে রাখা হয়েছিল, তারাই মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। আর যাদের নাম ছিল নিচের দিকে তারাই অদৃশ্য কারণে মনোনয়ন পেলেন। মনোনয়নপ্রাপ্তরা এমপিদের ছত্রছায়ায় রাজনীতি করেন এবং তৃণমূলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কেমন তা এলাকায় গেলেই বোঝা যাবে’।
তবে এবিষয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, দলের মনোনয়ন বোর্ড যাদের মনোনয়ন দিয়েছে, তাদেরকে বিজয়ী করতে সবধরনের প্রচেষ্টা চালানো আমার দায়িত্ব। তবে মনোনয়ন নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চান নি তিনি।
মনোনয়ন সম্পর্কে রাজশাহী-৪ আসনের এমপি ও বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক জানান, তাঁর উপজেলায় বর্ধিত সভা করে প্রার্থীদের তালিকা জেলায় পাঠানো হয়েছিল। পরে জেলা থেকে তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এরপর দলের মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে।
স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন সামনে রেখে গত সোমবার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে আওয়ামী লীগ শেষ হয় বৃহস্পতিবার। চেয়ারম্যান পদে ২ হাজার ৭৬ জন দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেন। চেয়ারম্যার পদে মনোনয়ন ফরমের জন্য ২০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়।
এবার পাঁচ ধাপে দেশের ৪৯২ উপজেলা পরিষদে ভোট করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১০ মার্চ প্রথম ধাপে রাজশাহীসহ ৮৭ উপজেলায় ভোট হবে। পঞ্চম ও শেষ ধাপের ভোট হবে ১৮ জুন।