রাজশাহীতে ২ পুলিশ সদস্যকে গণধোলাই
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার আদিবাসী পল্লীতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন দুই পুলিশ সদস্য। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার চকপাড়া আদিবাসী পল্লীতে এ ঘটনা ঘটে।
তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে দুই পুলিশ সদস্যের দাবি, ইয়াবা উদ্ধার করতে গিয়ে তারা গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন। আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন-গোদাগাড়ী মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফারুক হোসেন ও কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন।
আদিবাসীরা ওই দুই পুলিশ সদস্যকে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ সময় আদিবাসীরা তাদের শাস্তির দাবি জানান।
আদিবাসী পল্লী চকপাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এএসআই ফারুক ও কনস্টেবল শাহাদাত রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই পল্লীতে গিয়ে চোলাই মদ তৈরির অভিযোগে চিকন মুরারি নামে এক আদিবাসীর কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা চিকন মুরারিকে আটকের ভয় দেখান।
বিষয়টি জানাজানি হলে এএসআই ফারুক ও কনস্টেবল শাহাদাতকে গণধোলাই দেন আদিবাসী নারী ও পুরুষরা।
এর পর মোটরসাইকেলসহ তাদের আটকে রাখা হয়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হাসমত আলী অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
তিনি দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দেন এবং তাদের উদ্ধার করে আনেন।
চকপাড়া পল্লীর আদিবাসী অজিত মুরারি বলেন, আদিবাসীরা চোলাই মদ তৈরি করে নিজেরাই পান করেন। কয়েক দিন আগে আটকের ভয় দেখিয়ে আদিবাসী ভবেশ মুরারির কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা নিয়ে যান এএসআই ফারুক ও শাহাদাত।
‘টাকাগুলো ভবেশের গরু বিক্রির। এক সপ্তাহ পর তারা আবার চাঁদাবাজি করতে এলে আদিবাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে গণধোলাই দিয়েছেন।’
তবে এএসআই ফারুক হোসেন দাবি করেন, আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল, ওই গ্রামের রাস্তা দিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা যাচ্ছে। এ কারণে আমরা ওই আদিবাসী পল্লীতে যাই। তবে আদিবাসী চিকন মুরারির কাছে টাকা দাবির ঘটনা সঠিক নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি (তদন্ত) হাসমত আলী বলেন, দুই পুলিশ সদস্যকে মোটরসাইকেলসহ উদ্ধার করে আনা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ সুপারকেও জানানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে।