রাতে হাঙ্গেরি যাচ্ছে জোড়া মাথার রাবেয়া-রোকাইয়া

403

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আর্থিক সহযোগিতায় জোড়া মাথা নিয়ে জন্ম নেয়া শিশু রাবেয়া-রোকাইয়া চিকিৎসার জন্য আজ শুক্রবার রাতে হাঙ্গেরি যাচ্ছে। হাঙ্গেরি থেকে ফেরার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অধীনে চিকিৎসাধীন এই যমজ শিশুদের দেশেই অস্ত্রোপচার করা হবে।

 

0001_3

শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শিশু রাবেয়া রোকাইয়ার বাবা ও মায়ের হাতে সপরিবারে হাঙ্গেরি যাওয়ার বিমান টিকেট তুলে দেন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দীর্ঘ এক বছর ধরে মাথা জোড়া লাগানো শিশু বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে জার্মান ও হাঙ্গেরির দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শিশু দুটিকে দেখানো হয়। তারা হাসপাতালেই দুই দফায় মাথার এনজিওগ্রামের মাধ্যমে ব্রেইনের প্রধান রক্তনালী পৃথক করেন এবং সফল ভাবেই সম্পন্ন হয়। এরপর তারা শিশু দু’টিকে হাঙ্গেরিতে নিয়ে যৌথ চিকিৎসা করাতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, হাঙ্গেরিতে শিশু দুটির চিকিৎসার সকল তত্ত্বাবধান করবে জার্মান ভিত্তিক ‘ফর বাংলাদেশ অর্গানাইজেশন’ নামের একটি সংগঠন।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম বলেন, দীর্ঘদিন শিশু দুটিকে বার্ন ইউনিটে প্লাস্টিক ও নিউরো সার্জন দ্বারা চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশেই তাদের চিকিৎসার দুই ধাপ সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন তৃতীয় ধাপ সম্পন্ন করার জন্য তাদেরকে হাঙ্গেরি পাঠানো হচ্ছে। সেখানে পাঁচটি বিশেষজ্ঞ টিম তাদের চিকিৎসা পরিচালনা করবেন। আনুমানিক তিন থেকে চার মাস তারা সেখানে চিকিৎসা নেবে।

হাঙ্গেরিতে শিশু দু’টির চিকিৎসা বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে তাদের ব্রেইনের সফট টিস্যু আলাদা করাই প্রথম কাজ। এর সাথে সাথে ইনজেকশনের মাধ্যমে তাদের মাথার খুলি ফুলিয়ে ভিতরে কিছুটা ফাকা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ নাসিম প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, শিশুদের জন্য দোয়া করি। তাদের বিরল অপারেশন হতে যাচ্ছে। তারা যেন স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করতে পারে। আশা করি হাঙ্গেরি থেকে দেশে আসার পরে তাদের মাথা বিচ্ছিন্ন করাও সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাস্তব অর্থেই মানবতার নেত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা ও আর্থিক অনুদানে তাদেরকে বিদেশ পাঠানো হচ্ছে। এর সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাবেয়া-রোকাইয়াসহ ছয়জন শুক্রবার রাতে হাঙ্গেরির উদ্দেশে রওনা হবে। সঙ্গে যাবেন বার্ন ইউনিটের ওদের চিকিৎসক হোসাইন ইমাম। শিশু দুটির বাবা রফিকুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাচ্চা দুটির জন্য সবার কাছে দোয়া চান।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.