রাবিতে ছাত্রলীগের হামলায় সাংবাদিকসহ আহত ৫
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বাণিজ্যিক সিনেমা ‘দহন’ প্রদর্শনী বন্ধের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এতে সাংবাদিকসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ও খোলা কাগজের প্রতিনিধি আলী ইউনূস হৃদয়, রাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিঠুন চন্দ্র মোহন্ত, রাবি প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক মহব্বত হোসেন মিলন, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শাকিল হোসেন ও ছাত্র ফেডারেশনের প্রচার সম্পাদক ইসরাফিল আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে মোহন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে বাণিজ্যিক সিনেমা ‘দহন’ না চালানোর দাবিতে মিলনায়তনের সামনে অবস্থান নেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে সেখানে সিনেমা চলতে থাকে। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর নেতৃত্বে সাংগঠনিক সম্পাদক সাবরুন জামিল সুষ্ময়, ইমরান খান নাহিদ, মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস মোহাম্মদ শ্রাবণসহ কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে যান। এর কিছুক্ষণ পরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের উপস্থিতেতে হঠাৎ করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আহত সাংবাদিক আলী ইউনুস হৃদয় বলেন, ঘটনার সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আন্দোলনকারীদের একজন আমার পেছনে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করে। ওই সময় সাবরুন জামিল সুষ্ময়ের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী আমার কোমরে সজোরে লাঠি মারে।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা সাবরুন জামিল সুষ্ময় মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করলেও ভিডিওতে সাংবাদিক হৃদয়কে মারধর করতে দেখা গেছে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুও সে সময় উপস্থিত ছিলেন।
মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা ইমরান খান নাহিদ বলেন, সিনেমা প্রদর্শনী নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে আন্দোলনকারীরা প্রক্টরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। এ সময় ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করেছে।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, টানা-হেঁচড়া হয়েছে। তবে সাংবাদিক মারধরের বিষয়ে আমি জানি না।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, আমাকে কেউ লাঞ্ছিত করেনি। তবে ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এর বাইরে আর কিছু জানি না।
সিনেমা প্রদর্শনী বন্ধ হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রদর্শনী চলবে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা।