রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর ব্যবসা-বাণিজ্য

790

file (1)মানবতার মুক্তির দিশারি হজরত মুহাম্মদ (সা.) অন্ধকারাচ্ছন্ন, পাপ-পঙ্কিলতাময় এ বসুন্ধরায় জাহেলিয়াতের সব অন্যায়-অত্যাচার, অবিচার-অশামিত্ম, অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক কর্মকা- বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বমানবতার জন্য একটি পরিপূর্ণ আদর্শ জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। একটি গুরম্নত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে সামাজিক অর্থনীতি সুস্থ রাখার লক্ষ্যে তিনি যেসব আদর্শ ও মূলনীতি প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেগুলো একেকটি অমূল্য শিক্ষা। অর্থনীতি সুষ্ঠু ও বৈষম্যহীন করতে হলে সেগুলোর বিকল্প নেই। বিশেষ করে মানব নিষ্পেষণ ও সমাজবিধ্বংসী অন্যতম মাইন সুদ, ঘুষ, লটারি ও মজুদদারি প্রভৃতি তিরোহিত করেন। আল্লাহ প্রেরিত অহির আলোকে তিনি হালাল ব্যবসাভিত্তিক একটি সর্বোত্তম, অভূতপূর্ব আদর্শ সমাজ বিনির্মাণ করেছিলেন।
রাসূলে আকরাম (সা.) নিজে ব্যবসা করেছেন। অন্যদের ব্যবসা করতে উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি যে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সেই মক্কা শহর আরব উপদ্বীপের মধ্যে বিশিষ্ট ব্যবসার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। হজরত ইব্রাহিম (আ.) দোয়া করেছিলেন, ‘অতএব, হে আল্লাহ আপনি লোকদের মনকে তাদের প্রতি আগ্রহী বানিয়ে দিন এবং তাদের রিজিক দিন নানা ধরনের ফলমূল দিয়ে, যেন তারা শোকর করতে পারে।’ (সূরা ইব্রাহিম : ৩৭)। এ দোয়াও মক্কাবাসীর জন্য খুবই কল্যাণকর প্রমাণিত হয়েছে।
মাত্র ১২ বছর বয়সে রাসূলুল্লাহ (সা.) চাচা আবু তালিবের সঙ্গে সিরিয়ার পথে একটি বাণিজ্যিক কাফেলায় অংশগ্রহণ করেন। পথিমধ্যে ‘বুহাইরা’ নামক এক খ্রিস্টান পাদ্রির সঙ্গে দেখা হলে তিনি শিশু মোহাম্মদকে ইহুদিদের থেকে সাবধানে রাখার পরামর্শ দেন। তাই আবু তালিব দ্রম্নত তাকে নিয়ে মক্কায় ফিরে আসেন।
যৌবনে উপনীত হওয়ার পর মেষ চরানো এবং পরে ব্যবসার মাধ্যমে শুরম্ন হয় মহানবীর (সা.) অর্থনৈতিক জীবন। তাঁর ব্যবসায়িক সুনাম ও ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত হওয়ার কারণে খাদিজা (রা.) তাকে প্রথমত ব্যবসা ও দ্বিতীয়ত স্বামী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।
হজরত খাদিজা (রা.) ছিলেন একজন ধনবতী, ভদ্র ও সম্ভ্রামত্ম ব্যবসায়ী মহিলা। তিনি তার পুঁজি দিয়ে লাভ-ক্ষতির অংশীদারিত্বভিত্তিক যৌথ ব্যবসা করতেন। খাদিজা (রা.) মহানবীর (সা.) সততা ও উত্তম চরিত্রের কথা জানতে পেরে তাঁকে পুঁজি নিয়ে সিরিয়ায় ব্যবসায়িক সফরে যাওয়ার জন্য আবেদন জানালেন। মহানবী (সা.) তার প্রসত্মাব গ্রহণ করলেন এবং দ্বিগুণ পুঁজি ও বিনিময় নিয়ে খাদিজার ক্রীতদাস ‘মায়সারাহ’র সঙ্গে সিরিয়ার পথে বাণিজ্যিক সফরে বের হলেন। বিগত সফরগুলোর তুলনায় এবার সফরে দ্বিগুণ লাভ হলো। ‘মায়সারাহ’ খাদিজার কাছে রাসূল (সা.) এর বিশ্বসত্মতা ও মহান চরিত্রের বর্ণনা দিলেন। খাদিজা (রা.) বিশেষত রাসূল (সা.) এর সংস্পর্শে আসার পর তার সম্পদে যে সমৃদ্ধির চিহ্ন ফুটে উঠেছে, তা দেখে তিনি বিস্মিত হলেন। তিনি তার বান্ধবী ‘নাফিসাহ’র মাধ্যমে রাসূল (সা.) এর কাছে বিয়ের প্রসত্মাব পেশ করেন। রাসূল (সা.) এ ব্যাপারে তাঁর চাচাদের সঙ্গে মতবিনিময় করলে তারা বিয়ে সম্পন্ন করেন।
স্বামী হিসেবে রাসূলুল্লাহ (সা.) খাদিজার ব্যবসার তত্ত্বাবধান করতেন। সঙ্গে সঙ্গে নিজেও খাদিজার পুঁজি নিয়ে পুরোদমে ব্যবসা করছিলেন। তিনি ছিলেন বাণিজ্য নগরী মক্কার সর্বাধিক পুঁজিবান ব্যবসায়ী। নিঃসন্দেহে এ দীর্ঘ ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতাই তাঁর জন্য মদিনায় অর্থনৈতিক বিপস্নব ঘটাতে সহায়ক প্রমাণিত হয়েছিল।
রাসূলুল্লাহ (সা.) নবুয়তের আগে পার্টনারশিপের ব্যবসাও করেছেন। বর্ণনাভেদে তিনি আস সাইব ইবনে নুমায়লা অথবা তার বাবার সঙ্গে পার্টনারশিপের ব্যবসা করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে সাইব বলেন, আমি জাহেলি যুগে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর ব্যবসায়িক পার্টনার ছিলাম। এরপর যখন মদিনায় পৌঁছলাম, তখন আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আমাকে চিনতে পেরেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আপনি আমার ব্যবসায়িক পার্টনার ছিলেন, অত্যমত্ম উত্তম পার্টনার, যে কোনোরূপ প্রতারণা করেনি আর বিবাদও করেনি।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অনাড়ম্বর জীবনচরিত দেখে একথা ভুলে গেলে চলবে না, তিনি ছিলেন মক্কার সবচেয়ে বলিষ্ঠ, বুদ্ধিমান ও অধিক পুঁজিবান ব্যবসায়ী। নবী হওয়ার আগে তিনি মানবসেবায় নিজের পুঁজি কী পরিমাণ খরচ করতেন তা খাদিজার (রা.) ভাষায় ফুটে উঠেছে, ‘নিশ্চয় আপনি আত্মীয়তার বন্ধন রচনা করেন, মেহমানদারি করেন ও অনাথকে বহন করেন এবং নিঃস্বের জন্য উপার্জন করেন।’
মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি কনিষ্ঠ চাচা হজরত জুবায়ের (রা.) এবং কয়েকজন যুবককে নিয়ে ‘হিলফুল ফুজুল’ নামে একটি সমাজসেবামূলক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
হিজরতের পর মদিনা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলো। রাসূল (সা.) ছিলেন সে রাষ্ট্রের কর্ণধার। চাইলেই তিনি সাহাবিদের সম্পদ থেকে চাঁদা দাবি করে আয়েশি জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে সীমাহীন অভাব-অনটন সহ্য করেছেন। নবুয়ত ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব কাঁধে থাকায় তখন আর সক্রিয় ব্যবসা করা সম্ভব হয়নি। মাসের পর মাস তাঁর ঘরে চুলা জ্বলেনি। তবে তাঁর অর্থনৈতিক কর্মকা- থেমে থাকেনি। নিজ হাতে কাপড় সেলাই করতেন। জুতা ছিঁড়ে গেলে তা নিজেই মেরামত করতেন। পরিবারের প্রয়োজন পূরণে সব সময়ই তিনি মনোযোগী ছিলেন। অলস সময় কাটাতে তাঁকে কখনও দেখা যায়নি।
অর্থনৈতিকভাবে নিগৃহীত মুহাজিররা ছিলেন ভীষণ দুর্বল। কারণ তারা আপন ধন-সম্পদ মাতৃভূমি মক্কায় রেখে এসেছিলেন। এ মুহূর্তে রাসূল (সা.) তাদের ও আনসারদের মাঝে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন স্থাপন করে তাঁর অসীম প্রজ্ঞার পরিচয় দেন। মুহাজিররা কৃষিকাজ জানতেন না। ব্যবসাই ছিল তাদের প্রধান অর্থনৈতিক অবলম্বন। তাই রাসূল (সা.) মসজিদ নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাজার প্রতিষ্ঠা করা শুরম্ন করেছিলেন।
হিজরত ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি ইসলামী রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন এবং তথায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অর্থনৈতিক কাঠামো রচনার পটভূমি। মক্কায় মুসলমানদের অর্থনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ ছিল না। সেখানে আবু বকর (রা.) এবং ধনী সাহাবিরা কোনো কোনো মুসলমানকে দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে তাদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করেছিলেন মাত্র। খাদিজা (রা.) ও আবু বকর (রা.) এর মতো ধনী ব্যবসায়ীরাও অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছিলেন। হিজরতপূর্ব সময়ে তারা এক ধরনের নির্বাসনের পরিবেশেই জীবনযাপন করছিলেন। গোত্রে গোত্রে বিভেদই ছিল হিজরতের আগে মদিনার সার্বিক উন্নতির প্রধান অমত্মরায়। এ ভ্রাতৃত্ব সব বিভেদের অবসান ঘটিয়ে এক নতুন সমাজ উপহার দিতে সক্ষম হয়েছিল। এছাড়াও মদিনার অর্থনৈতিক জীবনের ছড়ি ঘোরাচ্ছিল ইহুদিরাই। এ ভ্রাতৃত্বের বন্ধন না হলে নিঃস্ব মুহাজিরদের পক্ষে অর্থনৈতিকভাবে ইহুদিদের মোকাবিলা করা ছিল দুষ্কর।
রাসূলুল্লাহ (সা.) কার্যত শ্রমের যে আদর্শ পেশ করেছিলেন তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুহাজিররাও আনসারদের ওপর বোঝা সৃষ্টি না করে কাজে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন। এভাবেই গড়ে উঠছিল একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক বন্ধন। রাসূলুল্লাহ (সা.) মদিনায় প্রবেশের পর আনসাররা তাদের জমি-জমা ও ধন-সম্পদ থেকে উদ্বৃত্ত সবকিছু তাঁর কাছে সমর্পণ করতে শুরম্ন করলেন। যাতে ইসলামী রাষ্ট্রে নবাগত মুহাজিররা শক্ত পায়ে দাঁড়াতে পারেন। স্বাভাবিকভাবে রাসূলকেও (সা.) মুহাজিরদের ব্যয়ভার নির্বাহে অংশগ্রহণ করতে হয়েছিল। মহানবী (সা.) জাকাত, উশর, ফাই (সন্ধিসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ), জিজিয়া (কর), খারাজ (টেক্স) ও খুমুস (যুদ্ধলব্ধ সম্পদের এক-পঞ্চমাংশ) ইত্যাদি প্রচলন করে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভিতকে মজবুত করেছিলেন।
‘মাহজুর’ ও ‘লিহ’ ইত্যাদি উপত্যকার ব্যাপারে তিনি আদেশ দেন, যেন উঁচু জমিতে দুই হাঁটু পরিমাণ পানি হওয়ার পর নিচু জমির দিকে পানি ছেড়ে দেয়া হয়। রাসূল (সা.) বিশেষভাবে এ সেচ-পদ্ধতির প্রতি লক্ষ্য রাখতেন। সামাজিক বন্ধন রক্ষার্থে তিনি শক্তিশালীকে দুর্বলের সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন। যেহেতু ব্যবসায়ীরা কৃষক ও অন্যান্য শ্রমিক শ্রেণীর তুলনায় গোনাহর অধিক নিকটবর্তী, তাই তিনি তাদের প্রতি বহু হাদিসে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। এছাড়াও রাসূল (সা.) তাদের সহিষ্ণুতার আদেশ দেন। পবিত্র ব্যবসায়িক পেশা মনোপ্রবৃত্তির শিকার না হওয়ার জন্য তিনি ঋণ ও ক্রয়-বিক্রয় লিখে রাখার আদেশ দিতেন। রাসূল (সা.) এর বিনিময়-বৈষম্য দূরীকরণ, ধনী-গরিবের মধ্যকার দূরত্ব সঙ্কোচন, বাগান চাষ ও পরিবার পরিপালন ইত্যাদি কর্মকা–র বিসত্মারিত বর্ণনা সিরাত গ্রন্থগুলোতে বিশদভাবে উলিস্নখিত আছে।
অধুনা অর্থনীতিবিদদের মতে, রাসূল (সা.) যে অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলেছিলেন তা নিমেণাক্ত মূলনীতিগুলোর অমত্মর্ভুক্ত। যথা- ক. সেবামূলক কার্যক্রম খ. মধ্যস্বত্বভোগ সীমাবদ্ধ করা এবং সুদকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা। গ. ব্যক্তি মালিকানার সঙ্গে সামাজিক দায়িত্ববোধের সমন্বয়। ঘ. সাম্যের নীতি প্রতিষ্ঠা। খাদ্য সঞ্চয়ের ব্যপারে রাসূলের (সা.) এর নীতি ছিল আলোকোজ্জ্বল। একদা নবী করিম (সা.) বেলাল (রা.) এর কাছে প্রবেশ করলেন। তার কাছে এক থলে খেজুর ছিল। রাসূল (সা.) বললেন, এটা কি হে বেলাল? বেলাল (রা.) বললেন, এগুলো আমি আপনাকে আপ্যায়নের জন্য প্রস্ত্তত রাখি। হুজুর (সা.) বললেন, তুমি কি জাহান্নামের ধোঁয়া ভয় কর না? আরেকবার হুজুর (সা.) আনাস (রা.) কে বলেছিলেন, আমি কি তোমাকে দ্বিতীয় দিনের জন্য কিছু অবশিষ্ট রাখতে নিষেধ করিনি? নিশ্চয়ই আল্লাহ আগামীর খাবারের ব্যবস্থা করেন। উলেস্নখ্য, যেসব দ্রব্য নির্দিষ্ট কয়েকটি মৌসুমে সঞ্চয় করে পরবর্তী সময়ে ভোগ করার রীতি রয়েছে, তা রাসূল (সা.) এর অর্থনীতির আলোকে বৈধ। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর পরিবারের জন্য এক বছরের খেজুর ও অন্যান্য দ্রব্য মজুদ রাখতেন। দ্রব্যমূল্য বাড়ার আশঙ্কা না থাকলে মনীষীরা সঞ্চয় করাকে বৈধ বলেছেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) ছিলেন স্বনির্ভর। হিজরতের সময়ও তিনি নিজেই দুটি উটের ব্যবস্থা করেন। হিজরতের পরেও রয়েছে তাঁর ২০০ উট ক্রয় করার ঘটনা। এমনিভাবে রয়েছে তাঁর স্বনির্ভরতার বহু প্রমাণ। রাসূলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সহজ-সরল জীবনযাপনে অভ্যসত্ম। তিনি সাহাবিদের অনাড়ম্বর জীবনযাপনের উপদেশ দিতেন। সঙ্কটাবস্থার জন্য সঞ্চয় করার আদেশ দিয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ অনুগ্রহ করম্নক ওই ব্যক্তিকে, যে হালাল উপার্জন করে, পরিমিত ব্যয় করে এবং প্রয়োজনের জন্য কিছু অবশিষ্ট রাখে।’ ব্যবসার ক্ষেত্রে সততা হচ্ছে অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। কারণ সততা বা সত্যবাদিতার দ্বারাই একজন ব্যবসায়ী কাঙিÿত লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হন। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয়নবী (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘সত্যবাদী, আমানতদার, বিশ্বাসী ব্যবসায়ী নবী, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে থাকবেন।’ (তিরমিজি, মিশকাত, পৃষ্ঠা ২৪৩)। #
কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক
সৌজন্য : দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.