রায়পুরার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, প্রাণ গেল ৩ জনের

493

নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল বাঁশগাড়ী গ্রামে এবং দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত একই উপজেলার নিলক্ষ্যা ইউনিয়নের বীরগাঁও ও গোপীনাথপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পৃথক এ সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহেদ সরকারের সমর্থক বাঁশগাড়ি বালুয়াকান্দি এলাকার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ছেলে তোফায়েল হোসেন (১৮) ও গোপীনাথপুর গ্রামের মৃত সোবহান মিয়ার ছেলে মো. স্বপন মিয়া (২৫) এবং ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের সমর্থক নিলক্ষার বীরগঁও এলাকার উসমান মিয়ার ছেলে সোহরাব হোসেন (৩০)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল হক ও সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শাহেদ সরকারের সমর্থকদের বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরে গত মার্চে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান শাহেদ সরকার। এর ৪০ দিন পর গত ৩ মে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল হক।

ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল হক হত্যার পর থেকে প্রতিপক্ষের মামলা হামলার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় শাহেদ সরকার সমর্থকরা। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর শুক্রবার সকালে শাহেদ সমর্থকরা এলাকায় ফিরলে প্রতিপক্ষ সিরাজুল হকের সমর্থকরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।

Raypura_clash

এসময় দুইপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। এরমধ্যে ৪ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা এসএসসি পরীক্ষার্থী তোফায়েল হোসেন নামে একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া গুরুতর আহতাবস্থায় সুমন মিয়া (২৬), মামুন মিয়া (২৫) ও  সুমন মিয়া (২৬) নামের তিনজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে বাঁশগাড়ীর এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী নিলক্ষা ইউনিয়নেও। নিলক্ষা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের সমর্থকরা সিরাজুল হকের পক্ষে ও সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হকের সমর্থকরা শাহেদ সরকারের পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে সোহরাব হোসেন ও স্বপন মিয়া নামে উভয়পক্ষের দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এসময় গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়।

খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.