লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে সন্তুষ্ট নই: ইসি মাহবুব তালুকদার

405

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে সন্তুষ্ট নই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের দেওয়া প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

373203_140মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে আমি সন্তুষ্ট নই, তবে আমি আশাবাদী।

তিনি বলেন, আমি মোটেও মনে করি না নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা এখন একটা অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে।

এর আগে সোমবার সকালে চারজন সাংবাদিক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের কাছে ছয়টি লিখিত প্রশ্ন জমা দেন। এবং তিনিও এসব প্রশ্নের লিখিত জবাব দেন।

সিইসি বলেছেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে, আপনি এ কথার কি বিরোধিতা করছেন- জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমি কখনও তার (সিইসি) বক্তব্যের বিরোধিতা করি না। তিনি তার কথা বলেছেন। আমি প্রযোজনে আমার ভিন্নমত প্রকাশ করি। আপনারা তো সাংবাদিক। আপনারা দেশের সব খবরাখবর রাখেন। সবকিছু দেখেন। আপনারা আপনাদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন নির্বাচনে এখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কিনা, তাহলে উত্তর পেয়ে যাবেন।’

সিইসি বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু হবে। আপনিও কি তা-ই মনে করেন? এর জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘সব দল অংশ নিলে তাকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা যায়। সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। অংশগ্রহণমূলক হওয়া একটি প্রাথমিক প্রাপ্তি। আসল কথা হচ্ছে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে কিনা এবং বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে কিনা। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে অংশগ্রহণমূলক হলেও কোনও লাভ নেই।’

নির্বাচনে জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে? এ প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচন আমরা সরাসরি করি না। রিটার্নিং অফিসার, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে। তাদের বাহিনীর সদস্যরা কতটা তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে, তা তারা বলতে পারবেন।’

বর্তমান অবস্থায় আপনার কি কোনও মেসেজ (বার্তা) আছে? এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমার বক্তব্য হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রার্থী, ভোটার এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ আইনের বাইরে যাবেন না। আইনকে নিজস্ব ধারায় চলতে দিন। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলুন। নির্বাচনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সহায়তা করুন।’

নির্বাচনে বিরোধী দলের প্রচারণায় নানা বাধার অভিযোগ আসছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমি আশাবাদী মানুষ। এখনও যে সময় আছে তাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ইলেকট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটির বিচারকদের আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করা উচিত। আমি মনে করি, সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে আশাব্যঞ্জকভাবে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.