শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ১ উইকেটে জিতলো পাকিস্তান

279

বরাবরের মতো এশিয়া কাপের এ ম্যাচেও ব্যর্থ বাবর আজম। ফিরেছেন আজ রানের খাতা খোলার আগেই। ভারত ম্যাচে ফখর জামানের ব্যাট হাসেনি। আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষেও করেছেন হতাশ। সব ম্যাচে রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে দেওয়া মোহাম্মদ রিজওয়ানের স্ট্রাইক রেটও যায়নি তার পক্ষে। তবে শাদাব ও ইফতিখারের ব্যাটে জয়ের বীজ বুনতে থাকে পাকিস্তান। তবে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় নাসিমের ব্যাটে ১ উইকেটের জয় নিশ্চিত হয় নেওয়াজদের।

এই জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত হলো পাকিস্তানের। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর শ্রীলংকার বিপক্ষে মুখোমুখি হবে তারা। এর আগে বাকি ম্যাচগুলো ‍শুধুই আনুষ্ঠানিকতা।

ব্যাটিং ইনিংসের শুরুতেই হোঁচট খায় পাকিস্তান। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই বাবরকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন ফজলহক ফারুকি। আফগান পেসারের বলে গোল্ডেন ডাকে ফেরেন এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত সুবিধা করতে না পারা পাকিস্তান অধিনায়ক। এর আগে আফগানিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবিও গোল্ডেন ডাক করে ফিরেন। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে দ্রুত এক রান নিতে গিয়ে ননস্ট্রাইকে রানআউট হন ফাখর জামান। ফেরার আগে ৯ বলে ৫ রান।

তবে আগের ম্যাচগুলোর মতোই ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে থাকেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ইফতিখারকে সঙ্গে নিয়ে বাড়াতে থাকেন রানের চাকা। তবে ৩২ বল স্থায়ী এই জুটি তুলতে পেরেছে মাত্র ২৭ রান। আফগানদের আঁটোসাটো বোলিংয়ে যেন খাবি খাচ্ছিলেন পাক ব্যাটাররা। সেটা আর কুলিয়ে উঠতে পারেননি রিজওয়ান। রশিদ খানের গুগলিতে এলবিডব্লিউ হন তিনি। আম্পায়ার সায় দিলে ফিরতে হয় তাকে। ফেরার আগে ২৬ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় ২০ রান করেন তিনি।

মাত্র ৪৫ রানে পাকিস্তানের ৩ টপ অর্ডারকে ফিরিয়ে ভালোই চেপে ধরেছিলেন রশিদ-ফারুকীরা। রিজওয়ান যখন আউট হলেন, তখনও জয়ের জন্য প্রয়োজন ৮৫ রান। হাতে ছিল ৫৮ বল। তবে সেই চাপ সামাল দেন চতুর্থ উইকেট জুটিতে শাদাব খান ও ইফতিখার আহমেদ। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে পাকিস্তানকে দেখাতে থাকেন জয়ের স্বপ্ন। ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে ছক্কায় বল গ্যালারি ছাপিয়ে পাশের রাস্তায় নিয়ে ফেলেন শাদাব খান। আর অন্য প্রান্ত আগলে রাখছিলেন ইফতিখার।

তবে ষোলতম ওভারের তৃতীয় বলে আফগানদের ব্রেক-থ্রো এনে দেন ফরিদ আহমেদ। এই পেসারের শর্ট লেংথের স্লোয়ার বলটি পুল করে উড়িয়ে মেরেছিলেন ইফতিখার। তবে ডিপ মিডউইকেটে ইব্রাহিম জাদরান ক্যাচ লুফে নিয়ে ৪১ বলে ৪২ রানের জুটিটি ভাঙে। ফেরার আগে ২ চারে ৩৩ বলে ৩০ রানের একটি ইনিংস খেলেন তিনি।

পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে রশিদ খানের আউটসাইড অফের বলটি লং অফ দিয়ে সীমানা ছাড়া করতে চেয়েছিলেন শাদাব। কিন্তু শর্ট থার্ড ম্যানে দাঁড়িয়ে থাকা আজমতউল্লাহ ওমরজাই তা লুফে নেন। তাতে ২৬ বলে ৩৬ রানের এক ঝড়ো ইনিংস থামে। ৩ ছক্কা ও ১ চারে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি।

মাঠে নেমেই রশিদ খানের বলে স্লগ সুইপে ছক্কা মারেন আসিফ। কিন্তু আফগানিস্তান দলটা যেন ফুটবলের জার্মানি দলটার মতো। হারার আগে তারা হারতে চায় না। শেষ পর্যন্ত স্নায়ু ধরে রাখতে জানে তারা।

তাই তো পরের ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন ফজল-হক ফারুকী। ফেরত পাঠান মোহাম্মদ নেওয়াজ ও খুশদিল শাহকে। তাতে হারের শঙ্কা দেখা দেয় পাকিস্তান ‍দুর্গে। সেই শঙ্কা আরও ঘনীভূত হয় পরের ওভারে ফরিদের করা দ্বিতীয় বলেই যখন বোল্ড হলেন হারিস রউফ। তবে আসিফ আলির ছক্কায় ফের মোড় ঘুরে যেত! কিন্তু ফরিদের শর্ট বল এজ হয়ে করিম জানাতের হাতে ধরা দিলে ফিরে যেতে হয় আসিফকেও। ৮ বলে ২ ছক্কায় ১৬ রান করে আউট হয়ে যান। তাতে আফগানরা জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়।

কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শেষ বলে কিছু নেই। সেটাই যেন দেখালেন পেসার নাসিম শাহ। ফারুকির শেষ ওভারে দুই ফুলটসে নাসিমের ছক্কায় ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। তাতে উল্লাসে ফেটে পড়েন আসিফরা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.