সাবেক মেয়র সরফুদ্দিন আহম্মেদ ঝণ্টু আর নেই
বাংলাদেশ:রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মুক্তিযোদ্ধা সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু আর নেই। রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রংপুর সিটি করপোরেশনের সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা গোলজার হোসেন আদর সাবেক মেয়র ঝন্টুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু গত ১ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ওইদিনই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র ছিলেন। এ ছাড়া তিনি সংসদ সদস্য, রংপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও রংপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে রংপুর নগরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে রংপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোকিত মানুষ হিসেবে পরিচিত সাবেক এই মেয়রের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। অনেকেই ঝন্টুর মৃত্যুর সংবাদ শুনে ছুটে যান তার বাসভবনে। এরই মধ্যে রংপুরের বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেছেন।
বণার্ঢ্য জীবনের অধিকারী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু ১৯৫২ সালের ৭ জুলাই রংপুরের ইঞ্জিনিয়ার পাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি রংপুর জিলা স্কুল থেকে দুটি বিষয়ের ওপর স্টার মার্ক নিয়ে মেট্রিক প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি রংপুর সরকারি কলেজ থেকে বিকম পাস করেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি নিজের জীবন বাজি রেখে হানাদার বাহিনীর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করেন। সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু ৮০ দশকের শুরু থেকে রাজনীতিতে জড়িত।
তার দীর্ঘ রাজনীতি জীবনে তিনি ধীরে ধীরে মাঠ পর্যায় থেকে ১৯৮৭ সালে প্রথম উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত রংপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন ১৯৯৬ সালে তিনি এরশাদের জাতীয় পার্টি থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে গঙ্গাচড়ার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
২০১২ সালে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে দেশের দশম সিটি করপোরেশনের রংপুরের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন। বাংলাদেশে এই প্রথম ব্যক্তি যিনি একাধারে উপজেলা, পৌরসভা,সংসদ সদস্য ও মেয়র নির্বাচিত হন । গত বছর ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার কাছে পরাজিত হন।