সিইসির ‘আচরণে’ ক্ষুব্ধ কামাল বেরিয়ে গেলেন
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মঙ্গলবার বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা ‘অশোভন’ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তাৎক্ষণিকভাবে এই আচরণের প্রতিবাদে বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনসহ অন্যরা।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সিইসি বৈঠকে আজ আমাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সিইসির আচরণ কোনোভাবেই ভদ্রতাসূচিত ছিল না। আমরা সারা দেশে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হচ্ছি— এটি জানানোর পর তিনি সহানুভূতি দূরে থাক, উল্টো পুলিশের পক্ষে অবস্থান নেন। তাই আমরা বৈঠক থেকে চলে এসেছি।’
সংবাদ সম্মেলনের পর ঐক্যফ্রন্ট নেতা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সিইসির সঙ্গে তাদের ওই বৈঠকের বর্ণনা দেন।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন তার বক্তব্যে সিইসির উদ্দেশ্যে বলেন— সিইসি বর্তমানে প্রধান বিচারপতির চেয়েও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারেন। আপনি ইচ্ছা করলে জানোয়ার, লাঠিয়াল পুলিশ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আপনার এই লাঠিয়াল পুলিশ বাহিনী আমাদের মিটিং-মিছিল কিছুই করতে দিচ্ছে না। এমনকি বেলা ২টার পর মাইক ব্যবহারের জন্য আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু, আওয়ামী লীগ ও তার জোটের শরিকরা নিয়ম-কানুন না মেনে পুলিশের সহায়তায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের গুণ্ডাবাহিনী আমাদের ওপর হামলা করছে।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভাষ্যে, ‘কামাল হোসেন বলেন, আমাদের প্রার্থীদের জীবনের দাম না থাকলেও কর্মীদের জীবনের দাম রয়েছে। তাদেরতো সেভ (রক্ষা) করতে হবে। এ সময় হঠাৎ করেই সিইসি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি কি এমন হয়ে গেছেন যে, পুলিশকে লাঠিয়াল, জানোয়ার বলেছেন? নিজেকে কী মনে করেন?’
তিনি বলেন, ‘এ পর্যায়ে ড. আব্দুল মঈন খান (বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য) সিইসিকে বলেন, নির্বাচনের কোনো পরিবেশ যদি আপনি সৃষ্টি করতে না পারেন, তাহলে আমাদের সাফ বলে দেন। আমরা আজই প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেব।’
দুপুর ১২টার দিকে সিইসির সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের এই বৈঠক শুরু হলেও ২টার দিকে তারা বেরিয়ে যান।
বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেন, মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে সিইসি কেএম নূরুল হুদা ছাড়াও অন্য চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।