সেনা বাহিনী দিয়ে ভোটগ্রহণ, গণনা ও ফলাফল ঘোষণা চেয়ে রিট

543

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর (সেনা, নৌ ও বিমান) সদস্যদের দিয়ে ৩০০ (তিনশত) আসনের প্রতিটিতে এবং প্রতিটি পোলিং বুথে ভোটগ্রহণ, গণনা ও ফলাফল ঘোষণা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গত রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।

bbd5110fd5788aae02b06f1206b3a04e-578c826f301aeরিটে নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থতা কেন অসংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে, দেশের সব কেন্দ্রে সেনাবাহিনী দিয়ে ভোটগ্রহণ, গণনা ও ফল প্রকাশের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে।

রুলে এক দলের নেতার ছবি অন্য দলের প্রার্থীদের জন্য এবং এক দলের প্রতীক অন্য দলের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তারও নির্দেশনা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এছাড়াও এক দলের প্রার্থী অন্য দলের নেতার ছবি ও প্রতীক ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রিটকারী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েনের নির্দেশ চাওয়া হয়েছে। রিটে রুল জারির পর তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ২০ বা ১৪ দল নামে জোট গঠন করে নির্বাচন করার ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে।

রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েরে সচিব প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ১৪ দলের পক্ষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ২০ দলের পক্ষ বিএনপি মহাসচিব, বিভাগীয় রিটার্নিং অফিসার, বিভাগীয় কমিশনার ঢাকা, রাশেদ খান মেনন ও মির্জা আব্বাসসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

তিনি (ইউনুছ আলী আকন্দ) আইনজীবী ও ঢাকা-৮ আসনের লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর (সেনা, নৌ ও বিমান) চেয়ে রিট আবেদন করেছেন জানতে চাইলে, আইনজীবী ইউনুছ আলী জানান, সংবিধান অনুযায়ী জোট গঠন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা অবৈধ। কারণ দুই দলের সভাপতি মিলে প্রচার প্রচারণা চালায়। এখানে কে কোন দলের সভাপতি সম্পাদক তার কোনো চিহ্নই থাকে না।

ইউনুছ আলী আরো বলেন, সংবিধানের ১১৮ এবং ১২০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের জনবল দিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সরকারি কর্মচারী দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করছে। যা সংবিধান পরিপন্থী।

রিটের যুক্তিতে তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালের পর কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হচ্ছে না, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল। ২০০৮ সালে দেশের জনগণের ভোটার আইডি (ন্যাশনাল আইডি) তৈরির কাজে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছিল। পরে সেই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ভোটার আইডি (ন্যাশনাল আইডি) তৈরির কাজ করেছিল সেনাবাহিনী।

তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে ভোটগ্রহণ, গণনা ও ফল প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আগে গত ১৯ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্টদের প্রতি নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। নোটিশের কোনো জবাব না দেওয়ায় এই রিট করা হয়। আগামীকাল সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) রিটটি হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.