সৈয়দ আশরাফের জানাজা রোববার সংসদ প্লাজায়
আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রথম নামাজে জানাজা আগামী ৬ জানুয়ারি রোববার জাতীয় সংসদ চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন সংসদ সচিবালয়ের পরিচালক (গণসংযোগ-১) মো. তারিক মাহমুদ।
এদিকে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় সৈয়দ আশরাফের মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে। সেখান থেকে ৭টার দিকে বেইলি রোডের সরকারি বাসভবনে।
স্বজনদের দেখার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে মরদেহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমঘরে রাখা হবে।
সেখান থেকে পরের দিন রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় সৈয়দ আশরাফের নামাজে জানাজা হবে। এখানে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হবে।
এরপর দুপুর ১২টায় সৈয়দ আশরাফের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা হবে নিজ জেলা কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়াম মাঠে। ২টায় তৃতীয় নামাজে জানাজা হবে ময়মনসিংহের আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে।
সেখান থেকে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ ঢাকায় এনে বিকেল সাড়ে ৪টায় বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, জাতীয় ঐক্যফ্রেন্টর প্রধান নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনীতিক।
আগামীকাল শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ দেশে আসার কথা রয়েছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ-১ থেকে নির্বাচিত হন। কিন্তু, অসুস্থতার কারণে বৃহস্পতিবার তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথগ্রহণ করতে পারেননি।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্য তিন জাতীয় নেতার সঙ্গে সৈয়দ আশরাফের পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছিল। পিতার মৃত্যুর পর সৈয়দ আশরাফুল যুক্তরাজ্যে চলে যান।
দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে থাকা আশরাফ দেশে ফিরে ১৯৯৬ সালে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পুনর্নির্বাচিত হন তিনি।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের পর সৈয়দ আশরাফ দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তবে ২০১৬ সালে দলের সম্মেলনে এই পদ ছেড়ে দেন তিনি। ২০০৯ সাল থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন সৈয়দ আশরাফ। ২০১৫ সালের ৯ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করেন। এক মাস এক সপ্তাহ দপ্তরবিহীন মন্ত্রী থাকার পর ১৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী নিজের অধীনে রাখা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন তাকে।
ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দ আশরাফুল ব্রিটিশ-ভারতীয় শীলা ঠাকুরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শীলা লন্ডনে শিক্ষকতা করতেন। ২০১৭ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সৈয়দ আশরাফুলের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি প্রায়ই অসুস্থ হন। তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন।