সোনার বাংলা গড়তে সুদীর্ঘ পরিকল্পনা জানালেন প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুদীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলার মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই, পারবেও না। আমরা বাসযোগ্য, উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা করবই।
সমাবেশে সভাপতি শেখ হাসিনাসহ সব বক্তাই পুরো জাতিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের সঙ্গে দেশ গঠন, সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা থেকে আবৃত্তি করে দৃঢ়কণ্ঠে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি- ‘চলে যেতে হবে আমাদের। চলে যাব, তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ। প্রাণপনে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল, এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি। নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার’।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এটাই আমি মনে করি— মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কতটুকু দিতে পারলাম, এটাই বড় কথা। কি পেলাম, না পেলাম সেটা বড় নয়। সবার সহযোগিতা চাই, আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলি। বর্তমানকে উৎসর্গ করি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলার মাটিতে স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, দুর্নীতিবাজ-জঙ্গিবাদের কোনো স্থান হবে না। এগুলো মুক্ত, সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলব, এটাই আমাদের অঙ্গীকার। এটা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।’
তিনি বলেন, ‘এই বিজয় নির্বাচনী ইশতেহারের পক্ষে জনতার রায়। ভোটের সম্মান যাতে থাকে, মাথায় রেখে সুষম উন্নয়ন করে যাব। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-মাদক-দুর্নীতির বিরুদ্ধে রায়। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মনে রাখতে হবে, কঠিন দায়িত্ব আমরা পেয়েছি, সর্বান্তকরণ দিয়ে এটা পালন করতে হবে। জনগণ শান্তি চায়, উন্নয়ন চায়। এটা আমরা করব। অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রার রায় দিয়েছে তরুণ সমাজক।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘এ বিজয় বাংলার আপামর জনগণের। বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন পর খুব স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে গিয়েছেন। ধন্যবাদ মা-বোন ও তরুণ প্রজন্মকে, তাদের প্রতি আমার দোয়া ও আশীর্বাদ। সর্বস্তরের মানুষ যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন, তাদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘সকল সংস্থাকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি, তারা দিনরাত পরিশ্রম করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছেন। এই নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকেও ধন্যবাদ। যেসব দল অংশগ্রহণ করেছে, সব রাজনৈতিক দলকেই আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা এই নির্বাচনে অংশ নিয়ে এটাকে অর্থবহ করেছে।’
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধামন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী প্রমুখ।
দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিজয় সমাবেশের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন ড. মাওলানা একেএম আব্দুল মজিদ সিরাজী। এরপর পবিত্র গীতা পাঠ করেন ড. আসিস সরকার। বাইবেল ও ত্রিপিটক পাঠ করে শোনানো হয়।
এর আগেই পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
সারা দিনের এই আয়োজনে গান গেয়ে মাতিয়েছেন দেশবরেণ্য শিল্পীরা। সংসদ সদস্য মমতাজসহ নানা শিল্পীর পরিবেশনে খোদ প্রধানমন্ত্রীও মেতেছেন। গানের সুরে মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রীও তালি দিয়ে উৎসাহ দিয়েছেন শিল্পীদের।
জিতল এবার নৌকা, শেখ হাসিনার সালাম নিন, উন্নয়নের শপথ নিন— এমন মুগ্ধ দর্শক তরঙ্গের উত্তাল ঢেউয়ের মতো দুলেছে-নেচেছে উপস্থিত সবাই।
বিজয় সমাবেশে অভিনন্দনপত্র পাঠ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরে তিনি এ পত্রটি শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন।